Barak UpdatesHappeningsBreaking News

কোভিড পজিটিভ হওয়ায় মহিলাকে প্রতিবেশীর টানাহ্যাঁচড়া, পাশে দাঁড়াল সমাজ-প্রশাসন

২৮ আগস্টঃ কিছুদিন ধরেই বাড়িতে সর্দি-জ্বর ছাড়ছিল না। এর-ওর সমস্যা লেগেই ছিল। শেষে বুধবার বাড়ির সবাই মিলে লক্ষীপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে কোভিড টেস্ট করান। গৃহকর্তা সঞ্জীব সূত্রধর নেগেটিভ হলেও তাঁর স্ত্রী শ্রাবণী সূত্রধর পজিটিভ বলে শনাক্ত হন। সঙ্গে পজিটিভ হন শ্রাবণীর শাশুড়ি, ছেলে, মেয়ে, দুই জা ও দেওরপো। শ্রাবণীর উদ্যোগে টেস্ট করানো হলেও পরিবারে এ নিয়ে কোনও কথা হয়নি। টেস্ট হয়েছে, পজিটিভ হয়েছে, হোম কোয়রান্টাইনে রয়েছেন, ওষুধ খেয়ে সবাই সুস্থ হয়ে উঠবেন, এটাই সবাই ভাবছেন।

কিন্তু পাশের বাড়িতে করোনা রোগী মেনে নিতে পারেননি সুমিত্রা সূ্ত্রধর ও তার কলেজপড়ুয়া ছেলে স্বরাজ। সম্পর্কে এরা শ্রাবণীর কাকীশাশুড়ি ও দেবর। শ্রাবণীর অভিযোগ, দুইজনে মিলে তাকে মারতে আসে। হাত ধরে টানাহ্যাঁচড়া করে। স্বরাজ ফেসবুকে শ্রাবণীকে গালিগালাজ করে লিখে দেয়, তার মৃত্যু হয় না কেন! বিষয়টি বড় অপমানজনক ঠেকে শ্রাবণীর কাছে। তিনি ফেসবুকে সব ঘটনা জানিয়ে জনতার কাছে বিচার চান। তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলেও জানিয়ে দেন।

এর পরই ওই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। বিভিন্ন মানুষ স্বরাজ ও তার মায়ের শাস্তি দাবি করে তাঁকে আত্মহত্যার মত সিদ্ধান্ত না নিতে অনুরোধ জানান। কেউ কেউ ফোন করেও তাঁর সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেন। বিষয়টি উদ্বেগজনক ঠেকে নেতাজি ছাত্রযুব সংস্থার সম্পাদক দিলু দাসের কাছেও। তিনি অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমিত সাত্তায়ান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জগদীশ দাসকে জানান। প্রশাসনিক পর্যায়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। ফোন করেন লক্ষীপুর থানার ওসি-ও। স্বাস্থ্য বিভাগের ডিস্ট্রিক্ট মিডিয়া এক্সপার্ট সুমন চৌধুরী তাঁর সঙ্গে কথা বলে রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ গাড়ি পাঠিয়ে সবাইকে বিন্নাকান্দির বাড়ি থেকে সেন্ট ক্যাপিটানো স্কুল কোভিড সেন্টারে নিয়ে আসেন।

সেখানে পৌঁছে শ্রাবণী জানান, ফেসবুকে তাঁর আর্জি ভাইরাল হলে স্বরাজ ও তাঁর মা নিজেদের ত্রুটি স্বীকার করে মাফ চেয়েছেন। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট নন। তিনি চান, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক। তিনি অবশ্য এখনও কোনও এফআইআর করেননি। পুলিশ জানিয়েছে, এফআইআর পেলে  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। শ্রাবণীর দাবি, স্বরাজ ও তার মার কোভিড টেস্ট করানো হোক। কারণ এরা তাঁর মত পজিটিভের হাতে ধরে টানাটানি করেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায়ও প্রচুর মানুষ স্বরাজ ও তার মায়ের শাস্তি চেয়েছেন। তাঁরা শ্রাবণীর পাশে দাঁড়ান। সকলেরই প্রশ্ন, টেস্ট করিয়েছে, পজিটিভ হয়েছে, তাতে দোষের কী! নেতাজি ছাত্রযুব সংস্থার দিলু দাস বলেন, স্বরাজের বাবা একজন নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য। তার পরিবারের পক্ষ থেকে এলাকাবাসীকে টেস্ট করানোর পরামর্শ দেওয়ার কথা। কিন্তু তারা করলেন উল্টোটা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker