Barak UpdatesHappeningsBreaking News

পনেরো বছর আগেই মিজোরামে জমা পড়েছিল আহাদের ডেথ সার্টিফিকেট

ওয়েটুবরাক, ১ মে : শনিবার গভীর রাতে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে জমি ও কয়লা মাফিয়া আব্দুল আহাদ চৌধুরী৷ এ কথা শুনে মিজোরামে কেউ কেউ চমকে উঠতে পারেন৷ কারণ ২০০৭ সালে সে রাজ্যের আইজল আদালতে জমা পড়েছিল আহাদের ডেথ সার্টিফিকেট৷ তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, সে বছরেই ২ মার্চ তারিখে মারা গিয়েছে করিমগঞ্জ জেলার  সুতারকান্দির বাসিন্দা তাহিদুর রহমান চৌধুরীর পুত্র আব্দুল আহাদ চৌধুরী৷ আসাম সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ সেটি ইস্যু করেছে এবং একজন ম্যাজিস্ট্রেট তাতে কাউন্টার-সাইন করেছেন৷ সঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতির সার্টিফিকেট৷ ওই সার্টিফিকেটের ভিত্তিতেই সে বছর মিজোরামের আদালত আব্দুল আহাদ চৌধুরীর নাম জালনোট মামলার অভিযুক্তের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেয়৷ পাশাপাশি তার জামিনদার জাইরেমথাঙ্গিকে দায়মুক্ত করে৷

মামলাটি করেছিলেন মিজোরামের জুয়ালমোয়াম এলাকার মহম্মদ রশিদ নামে এক পুরনো লোহা-ইস্পাতের ব্যবসায়ী,  2005 সালের 14 সেপ্টেম্বরে৷ আাহাদ তার কাছ থেকে 10 কুইন্টাল 35 কেজি লোহা কিনেছিল৷ তেরো হাজার টাকা দরদাম করে দশ হাজার টাকা দেয়, 3 হাজার টাকা পরে দেবে বলে আসে৷ সেটা 12 সেপ্টেম্বরের ঘটনা৷ পরে তিনি দেখতে পান, সবকটিই ভারতীয় জালনোট৷ এজাহার পেয়ে কানমুন থানা তদন্তে নেমে 26 সেপ্টেম্বর আহাদকে গ্রেফতার করে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তোলে৷ দুদিন পরে ম্যাজিস্ট্রেট তাকে জামিনে মুক্তি দেন৷ তাকে জামিন নিয়েছিলেন ওই জাইরেমথাঙ্গি৷ পরে বছর দেড়েক অভিযুক্ত আর আদালতে যায়নি৷ শেষে 2007 সালের 31 জুন জাইরেমথাঙ্গি ওই ডেথ সার্টিফিকেট আদালতে জমা করেন৷

কিন্তু আহাদ যে বেঁচে আছে, তা জেনে যান মহম্মদ রশিদ৷ তিনি বিষয়টি আদালতকে জানালে করিমগঞ্জের জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট তলব করেন আইজলের অ্যাডিশনাল সেশন বিচারক এল লালরিনথারি৷ তখন করিমগঞ্জের জেলাশাসক ড. বিএন শর্মা৷ তিনি তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে আইজলে পাঠান খাদ্য পরিদর্শক রামকৃষ্ণ সিনহাকে৷ তিনি রিপোর্ট করেন আব্দুল আহাদ চৌধুরী জীবিত রয়েছে৷ ওই প্রেক্ষিতে করিমগঞ্জের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে আহাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা পাঠানো হয়৷

আহাদ পরে বিষয়টি উচ্চ আদালতে নিয়ে যায়৷ তার আইনজীবী এমএম আলি মিজোরামে মামলাটির বিচারপ্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন তোলেন৷ প্রথমত, মূল মামলার চার্জশিটে পুলিশ তার মক্কেলের কাছ থেকে জালনোট পাওয়ার কথা বলেনি৷ দ্বিতীয়ত, জামিন থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য জাল ডেথ সার্টিফিকেট জমা করেছে জামিনদার জাইরেমথাঙ্গি৷ এর পেছনে আহাদের কোনও হাত নেই৷ আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেল 2006 সালের 3 জানুয়ারি থেকে 2009 সালের 30 জুলাই পর্যন্ত প্রচণ্ড অসুস্থ ছিল৷ তাই আদালতে উপস্থিত হতে পারেনি৷ সে সময় জামিনদারের কোনও কাজের দায় তার ওপর চাপানো যায় না৷ এমএম আলি তখন সওয়াল করেছিলেন, এর চেয়ে বড় কথা, যে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলাটি চলছিল, সেই আদালত নয়, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন অতিরিক্ত সেশন বিচারক৷ তা আইনি দিক থেকে সঠিক প্রক্রিয়া নয়৷  ওই সব ফাঁকফোকরে উচ্চ আদালত আব্দুল আহাদ চৌধুরীর আবেদনে জালনোট মামলা সহ এই সংক্রান্ত সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দেন৷

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker