Barak UpdatesCultureBreaking News
সম্মিলিত সঙ্কট! কোথায় গলদ – ২Crisis in Sammilito Mancha! Where is the fault?…Part 2
ওয়ে টু বরাকের অনুসন্ধান।দ্বিতীয় কিস্তিInvestigation by way2barak
১৮ অক্টোবর : সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চে একটা বড় সঙ্কট আসতে পারে, সেই ইঙ্গিত কিন্তু দীর্ঘদিন থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু এরপরও মঞ্চ-নেতৃত্ব সেসবে তেমন আমল দেয়নি। ওয়ে টু বরাকের টিম মঞ্চের বিভিন্ন সদস্যের সঙ্গে কথা বলে যা আন্দাজ করতে পারল, তাতে পরিস্কার বোঝা গেছে যে দীর্ঘদিন ভেতরে ভেতরে তিনটি আলাদা গ্রুপ তৈরি হয়ে গিয়েছিল মঞ্চে। একপক্ষ মঞ্চ নেতৃত্ব ও তাদের গুডবুকে থাকা কয়েকজন। আরেক পক্ষ, সরাসরি মঞ্চ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। আর তৃতীয় পক্ষ? তারা সব দিকেই আছেন। কখনও এ পাল্লায়, কখনও ও পাল্লায়। তারা সভা-সমিতিতে আসেন না, এলেও মুখে রা থাকে না। অথচ বাইরে তারা যাবতীয় ইস্যু নিয়ে সরব। কখনও সেটা পক্ষে, কখনও বিপক্ষে।
যখন সভাপতি পদে আশিস ভৌমিক ও সম্পাদক অজয় রায়, তখন থেকেই মঞ্চের নিজস্ব অনুষ্ঠানের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছিল। একটা বড় অংশই এই বাড়তি লোডের পক্ষে ছিল না। তাদের অভিমত ছিল, মঞ্চের কাজ শুধু নিজস্ব অনুষ্ঠান আয়োজন নয়, বরং সামগ্রিক সংস্কৃতির বিকাশকে উজ্জীবিত রাখা। অন্যায়ের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে মানুষের কথা বলা। সামাজিক সমস্যাগুলিতে প্রতিক্রিয়াশীল থাকা। কিন্তু মঞ্চ নেতৃত্ব ওসবে বেশি গুরুত্ব দেয়নি। অনুষ্ঠান-সংখ্যায় লাগাম টানার কোনও সদিচ্ছাও দেখায়নি।
তবে এটাও সত্যি, মঞ্চের যেসব বলিষ্ঠ কর্মকর্তা ও সদস্য পারতেন, একযোগে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠানের সংখ্যাকে কমিয়ে আনতে, বা সেইসঙ্গে সামাজিক ইস্যুগুলোতে বেশি সরব হতে, তারাও কিন্তু সেটা করেননি। বরং এড়িয়ে গেছেন ‘আমাদের কী আসে যায়’ মনোভাব দেখিয়ে। যার প্রভাব প্রতিফলিত হয় সংগঠনের গত দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায়।
সাংগঠনিক পালা-বদলের সেই সাধারণ সভায় অত্যাধিক অনুষ্ঠান, গোটা কার্যকালে অনুষ্ঠানের খরচ সংকুলানে সম্পাদকের লাখো টাকা ব্যক্তিগত ডোনেশন ইত্যাদি ইস্যুতে সরগরম হয়ে উঠেছিল সেদিনকার এজিএম। ফান্ড সোর্স নেই, তো এত অনুষ্ঠানের কী দরকার? কেন কেউ নিজের পকেট থেকে ঘাটতি মেটাবে? এসব প্রশ্ন সঙ্গত কারণেই উঠে এসেছিল বার বার। ওই এজিএমের বাক-বিতণ্ডার জেরেই স্পষ্ট হতে শুরু করেছিল বিভাজনের এক অদৃশ্য রেখা। কিন্তু এটাও সত্যি যে, জনপ্রিয়তার নিরিখেই ওই পালাবদলের সভায় ফের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়ে যান অজয় রায়। তবে বদল আসে সভাপতি পদে। আশিসবাবুর চেয়ারে বসেন সুব্রত ভট্টাচার্য।
সুব্রত-অজয় জুটির কাজকর্ম ভালই এগোচ্ছিল। বিগত কার্যকালের অভিজ্ঞতা নিয়ে অনুষ্ঠান সংখ্যাও কমিয়ে আনেন তারা। ব্যক্তিগত ফান্ডিং নয়, বরং চাঁদা সংগ্রহের দিকেই বেশি মনযোগ দিতে শুরু করে মঞ্চ নেতৃত্ব। কিন্তু ততক্ষণে মঞ্চ নেতৃত্ব থেকে একটা দূরত্ব তৈরি করে নিয়েছিলেন কয়েকজন বলিষ্ঠ সংস্কৃতিকর্মী। তাদেরই একজন আমাদের প্রতিবেদককে নাম গোপন রাখার শর্তে বলেছেন, ‘সম্পাদক তার পছন্দের কজনকে নিয়েই চলেন। তাদের কথাই আমল পায়। আমরা কেউ কিছু বললে, বা গঠনমূলক সমালোচনা করলে তা দেখা হয় শত্রুপক্ষের বয়ানের মতো করে। কার্যকরী সমিতির সদস্যরাও গুরুত্বহীন হয়ে গিয়েছিলেন একটা সময়। অথচ যারা মঞ্চের ইতিহাস জানে না, আদর্শ জানে না, তারাই মঞ্চের চালিকা শক্তি! এসব যখন থেকেই দেখছি, তখন থেকেই আগ্রহ কমতে থাকে।’
যদিও মঞ্চ নেতৃত্বের পক্ষে থাকা এক সংস্কৃতিকর্মী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থ পরিশ্রম করি। মঞ্চকে ভালবেসেই কাজ করি। কোনওদিন মঞ্চের পরিপন্থী কোনও কাজ করিনি, করবও না। যারা দূরত্ব রেখে চলছেন, কেন চলছেন জানি না। সেটা নিতান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে আমার ধারণা।’ বোঝা গেল, দূরত্বগুলি এভাবেই বাড়ছিল। আর তাতে ইন্ধন জুগিয়েছে কিছু প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতা, যা সুস্থ সংস্কৃতির পরিপন্থী। আর এই প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতার জেরেই কিন্তু পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর হতে শুরু করছিল। (চলবে)
পড়ুন: সম্মিলিত সঙ্কট! কোথায় গলদ … ১..ওয়ে টু বরাকের অনুসন্ধান
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের গোঁড়ায় গলদ ! মঞ্চ গঠনের সময় কিংবা পরবর্তী সময়ে বেছে বেছে বেশ কিছু সাংস্কৃতিক সংস্থাকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল , কারনটা আজ অব্দি জেনে ওঠা হয়নি। তাছাড়া প্রখ্যাত ব্যবসায়ী নাহাটাকে যখন সম্মাননা জানায় মঞ্চ, তখন তার প্রতিবাদ জানিয়ে মঞ্চের এক প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের জবাব চাইতে গেলে তিনি জানিয়েছিলেন , তুই টাকা দে,তোকেও সম্মাননা জানানো হবে ! জবাব শুনে বলেছিলাম, হেডলাইট এলাকার এক মাসী টাকা দেবেন বলছিলেন…..! প্রস্তাবটির প্রেক্ষিতে প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে হুমকি দিয়ে ছিলেন আরো একজন বিশিষ্ট নাট্যকর্মমী।,বরিষ্ঠ সেই নাট্যকর্মীকে এমন প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে। সেই সময়ে ও মঞ্চের সম্পাদক ছিলেন এই অয় দাস…!!