Barak UpdatesBreaking News
এনআরসির জন্য আবেদনই জানাতে পারেননি বহু যৌনকর্মী, দুশ্চিন্তাTension mounts among sex workers of Silchar as many of them even failed to apply of NRC
২১ সেপ্টেম্বরঃ শুরুতে এনআরসি-কে এত একটা গুরুত্ব দেননি তারা। এখন চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর দুশ্চিন্তা আর পিছু ছাড়ে না। যৌনকর্মী হলেও থাকতে হবে তো অসমেই। এ ছাড়া, দেশ জুড়ে এনআরসি-র কথাও তাদের কানে যায়। নিজের রাজ্যেই যদি না হয়, অন্য কোথাও গেলেও কি আর সমস্যার সমাধান হবে!
শিলচরের যৌনপল্লীতে তাঁরা কতজন রয়েছেন, এ নিয়েও কম বিতর্ক নয়। বছর সাতেক আগে রাজ্য সরকার তাদের পুনর্বাসন প্রকল্পের কথা ভেবে কাগজপত্র তৈরি করছিল। তখন বলা হয়েছিল, তিন শতাধিক যৌনকর্মীর বসবাস ওই পল্লীতে। চিককি, রৌশনারা, রিম্পিরা বলেন, তারা ৭০-৮০জন। এর বেশি নয়। অধিকাংশের নাম উঠে গিয়েছে। বাড়িঘর থেকেই কাগজপত্র জমা করেছে। ফলে সমস্যা হয়নি। কিন্তু মুশকিলে পড়েছেন তাঁরা কয়েকজন। তাদের সঙ্গে বাড়িঘরের কোনও সম্পর্ক নেই। সঙ্গে কাগজপত্র বলতে কিছু নেই। তাই তাদের না আছে ভোটার তালিকায় নাম। না উঠেছে এনআরসিতে নাম।
আর এনআরসিতে নাম উঠবে কী করে! তারা যে কাগজপত্রের অভাবে আবেদনই করতে পারেননি। যৌনকর্মী, অনাথ আশ্রমের আবাসিক, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হোমে থাকা মানুষের জন্য এনআরসি কর্তৃপক্ষ সুযোগ দিয়েছিল। কিন্তু যার তত্ত্বাবধানে রয়েছেন, তাকে আবেদন করার নিয়ম। সেখানেই হয়েছে সমস্যা। শিলচরের যৌনপল্লী বহু পুরনো হলেও এর তত্ত্বাবধায়করা প্রকাশ্যে আসেন না। ফলে যৌনকর্মী পরিচয় দিয়ে কেউ কারও নাম তোলাতে যাননি।
গোপন তত্ত্বাবধায়কদের বক্তব্য, স্থায়ীভাবে এখানে রয়েছেন, এমন যৌনকর্মীর সংখ্যা খুবই কম। আসলে তাদের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। খদ্দেরদের কাছে পুরনো মনে হলে ব্যবসায় মন্দা দেখা দেয়। তাই তাদের এখানে-ওখানে ঘোরানো হয়। সে জন্যই অধিকাংশের ভোটার তালিকায় নাম থাকে না, এনআরসিতে নাম ওঠে না।
যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করা আইনজীবী তুহিনা শর্মা বললেন, আবেদনটাই হয়নি বলে সমস্যা বেড়ে গিয়েছে। তবু চেষ্টা করছি, তাদের কীভাবে আইনি সহায়তা দেওয়া যায়। প্রয়োজনে আমরা তাদের বাড়িঘরে যোগাযোগ করব। নথি সংগ্রহ করে আনব। পরে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে গিয়ে লড়াই করব।
কিন্তু ট্রাইব্যুনালে এখন শুধুই আবেদন করে যারা খারিজ হয়েছেন, তাদের মামলা গ্রহণ করা হবে। আবেদনই করেননি যারা, তাদের নিয়ে কথাই শুরুই হয়নি। তুহিনাদেবী বলেন, ওইদিনেরই অপেক্ষায়। তখনই তাদের জন্য ঝাঁপাব। কারণ কেউ তো আর সারা জীবন যৌনপল্লীতে আটকে থাকবে না!