Barak UpdatesBreaking News
এনআরসি-ছুটঃ ঐক্যমঞ্চ চায় নেতাজি সেবা সংস্থাNetaji Seva Sangstha urges to form an umbrella association of people excluded from NRC
২২ এপ্রিলঃ এনআরসি প্রকাশের পর বহু মানুষ বিপাকে পড়বেন। চূড়ান্ত তালিকায় নাম থাকবে না কয়েক লক্ষ মানুষের। তাঁরা আবার বিভিন্ন রকমের হবেন। দাবি জানানোর পরও কিছু নাম কাটা যাবে। দ্বিতীয়ত, একাংশ মানুষ দাবিপত্রই জমা করেননি। তৃতীয়ত, অনেকে এনআরসি-তে নাম তোলার আবেদন করেননি। প্রত্যেকের কথা পৃথকভাবে ভাবতে হবে। তাই ‘এনআরসি-ছুটঃ তারপর কী’ এই মোক্ষম প্রশ্নকে সামনে রেখে রবিবার শিলচরে আলোচনার আয়োজন করে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সেবা সংস্থা।
ইমাদউদ্দিন বুলবুল, শান্তনু নায়েক, উলিওল্লাহ লস্কর, সৌমেন চৌধুরী, তানিয়া লস্কর প্রমুখ আইনজীবী আইনি দিক থেকে বিস্তৃত আলোচনা করেন। এ ছাড়াও নানা পরামর্শ দেন সৌরীন্দ্রকুমার ভট্টাচার্য, দীপক সেনগুপ্ত, জয়দীপ বিশ্বাস সহ বেশ ক-জন বিশিষ্ট নাগরিক। শেষে সংস্থার পক্ষ থেকে জয়দীপ ভট্টাচার্য বিভিন্ন সংগঠনকে নিয়ে ঐক্যমঞ্চ গঠনের প্রস্তাব দেন। এই সমস্যা যে শুধু আইনি পরামর্শে শেষ হতে পারে না, প্রয়োজন রাজনৈতিক সমাধান, সে ব্যাপারে সবাই মতপোষণ করেন।
সংস্থার প্রধান কুমারকান্তি (লক্ষ্মণ) দাস সভায় পৌরোহিত্য করেন। সম্পাদক রূপক চক্রবর্তী প্রশ্ন করেন, যাদের ভোটে সরকার গঠিত হচ্ছে, তারা বিদেশি হয়ে গেলে সরকারের কি বৈধতা থাকবে? কারও কাছে এর উত্তর নেই। সবাই আক্ষেপ প্রকাশ করেন, অহেতুক হয়রানির শিকার হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। সৌমেন চৌধুরী বলেন, অ্যাভিডেন্স অ্যাক্ট সর্বত্র কার্যকর রয়েছে। শুধু এনআরসিতেই বলা হচ্ছে, একমাত্র নথির সাহায্যে নিজেদের ভারতীয় বলে প্রমাণ করতে হবে।
উলিওল্লাহ লস্কর জানান, নাগরিকত্ব আইনের ৬নং ধারায় স্থলে অসমে ৬(এ) চালু হল বলেই বাকি ধারাসমূহ অকার্যকর হয়ে যেতে পারে না। অথচ ৩ নং ধারায় যে জন্মগত ভারতীয়র কথা বলা হয়েছে, এখানে তাকে মানা হয় না। তিনি জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের উল্লেখ করে বলেন, সেখানে বলা হয়েছে, প্রতিটি ভোটার ভারতের নাগরিক। এ কথাও এনআরসি-তে মানা হচ্ছে না। দীপক সেনগুপ্তের কথায়,এনআরসি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকেও ভেঙে দিতে চলেছে। অসমের জন্য এক আইন, অন্য রাজ্যের জন্য আরেক আইন, এ কী রকম কথা!
বরাক হিউম্যান রাইটস প্রটেকশন কমিটির পক্ষে তানিয়া লস্কর বলেন, এনআরসি প্রকাশের পরই নানাভাবে কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন পড়বে। যারা একেবারেই আবেদন করেননি, তাদের তিনি ৩জনের সাক্ষ্য সহ রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার কাছে আবেদন করতে পরামর্শ দেন। ডি বানানোর প্রক্রিয়াটাকে অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেন জয়দীপ বিশ্বাস। তাঁর কথায়, এ সব ব্যাপারে সমাধানের জন্য রাজনৈতিক দলগুলির দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। মানুষকেই বেরিয়ে এসে সমাধান বের করতে হবে।