Barak UpdatesHappeningsBreaking News
রাত দশটার আগেই শিলচর শুনশান, বিসর্জন ১৩০ প্রতিমা
২৬ অক্টোবরঃ কোভিড পুজোয় কতটা প্রভাব ফেলেছে, টের পাওয়া গিয়েছিল মহাসপ্তমীতে। আর টের পাওয়া গেল বিজয়ী দশমীর রাতে। সপ্তমীতে দর্শনার্থীরা না বেরনোর একটা অন্যতম কারণ ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কিন্তু সোমবার আকাশ পরিষ্কার, বৃষ্টির লক্ষণমাত্র নেই। তবু ফাঁকা শিলচর শহর। এতটাই ফাঁকা যে রাত দশটার আগেই শুনশান চেহারা।
কোভিড-পূর্ব বছরগুলিতে অনেকে রাত দশটায় ঘর থেকে বেরোতেন বিসর্জন দেখবেন বলে। এই বছর শিলচর পুর এলাকার ১৩০টি প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। মঙ্গলবারও বেশ কিছু সর্বজনীন পুজোর প্রতিমা নিরঞ্জন করা হবে। কিন্তু সাউন্ড সিস্টেম না থাকায় গাড়ির পেছনে নৃত্য ছিল না বললেই চলে। ছিল না এক মূর্তি ঘিরে শত জনতার উপস্থিতিও। এর চেয়ে বড় কথা, প্রতিমা আকারে ছোট হওয়ায় গাড়ি থেকে নামানো ও ঘাট পর্যন্ত নিয়ে যেতে সময় ব্যয় খুব কম লেগেছে।
শ্রীপল্লী সর্বজনীন পূজা কমিটির কর্মকর্তা সব্যসাচী পুরকায়স্থ জানান, লিংক রোড থেকে সদরঘাটে গিয়ে বিসর্জন সেরে লিংক রোডে ফিরে দেখেন চল্লিশ মিনিটে সব শেষ। এর আগে কোনও সময় এত কম সময়ে বিসর্জন হয়েছে, তিনি মনে করতে পারছেন না। সময় নির্দিষ্ট থাকায় রাস্তায় অন্য পুজোর গাড়ির পেছনে আটকে থাকার ব্যাপার ছিল না।
একে একাংশ মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছেন, অনেকে নিজের পেশাগত কারণে মেনে নিতে পারছেন না। সাংবাদিক দেবাশিস পুরকায়স্থের কথায়, প্রশাসন নীতিনির্দেশিকার সাহায্যে কীভাবে একটা সিস্টেমকে বদলে দিতে পারে, দেখা গেল। তিনি প্রশাসনের নির্দেশিকাগুলি অক্ষরে অক্ষরে পালনেরই আহ্বান জানান। আরেক চিত্রসাংবাদিক নুরুল ইসলাম লস্করও বলেন, এ বারই বাঙালির প্রকৃত উতসবের আমেজ টের পাওয়া গিয়েছে। মহিলারা কেউ বাংলা গান, কেউ গীত গেয়ে প্রতিমা নিয়ে গিয়েছেন। নেই লম্পঝম্প।
কিন্তু আরেক চিত্রসাংবাদিক পার্থ শীলের কথায়, সবই ঠিক। কিন্তু ছবির মুহূর্তগুলি এবার পাওয়া যায়নি। সব প্রতিমা প্রায় একই ধরনের। ছবির জন্য যে বেচিত্র্যের প্রয়োজন, তা এ বার ধরা পড়েনি।
সাংস্কৃতিককর্মী ভাস্কর দাস বলেন, পুজো উপলক্ষে কোনও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নেই, তা ভাবা যায় না। শিল্পীরা ঘরে বসে রয়েছে, তাদের রুজিরোজগার নেই। তাঁদের কথা কেউ ভাবছেন না। তিনি সরকারকে এখন অনুষ্ঠান করার অনুমতি দিতে আহ্বান জানান।
একই আক্ষেপ ব্যবসায়ীদের। বললেন, পুরো পুজোর বাজার ফ্লপ। মানুষ ঘর থেকে বেরোয়নি, বিক্রি হবে কোথা থেকে।