Barak UpdatesHappeningsBreaking News

অনিয়ম! হাইকোর্টের নির্দেশে ভাঙছে সাগরিকা রিজেন্সি, সাত্তায়ান-আহমেদকেও নোটিশ
Irregularities! Demolition started in Sagarika Regency at the direction of High Court

২৮ জানুয়ারিঃ নিয়মনীতি মেনে শিলংপট্টিতে দালান তৈরি করেননি বিশ্বজিত রায়। বাণিজ্যিক কার্যকলাপের জন্য অনুমতি নিয়ে খুলে দিয়েছেন সাগরিকা রিজেন্সি। হোটেল, সঙ্গে রুফ টপ রেস্টুরেন্ট। এ নিয়ে শহরের একদল নাগরিক হাইকোর্টে জনস্বার্থ সম্পর্কীত মামলা দায়ের করেছিলেন। এরই জেরে ভাঙা শুরু হয়েছে সাগরিকা। প্রথমে খোলা হচ্ছে রুফটপ রেস্টুরেন্টটি।

ভাঙা শুরু হয়েছে সাগরিকা

এ দিকে, দফায় দফায় হাইকোর্ট সাগরিকার দালানবাড়ি ভাঙার নির্দেশ দিলেও তা কার্যকর না করায় শিলচর পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার সুমিত সাত্তায়ানের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া ও বিচারপতি অচিন্তমল্ল বুজরবরুয়া ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। তাঁরা ক্ষুব্ধ কাছাড়ের অতিরিক্ত জেলাশাসক ড. কে এস আহমেদের বিরুদ্ধেও। হাইকোর্টের নির্দেশে শিলচর পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার দালানবাড়িটি ভেঙে অনিয়ম শোধরানোর নির্দেশ দিলে আহমেদ এর ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিলেন। সুমিত সাত্তায়ান ও কেএস আহমেদ এবং বিশ্বজিত রায়ের বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার জন্য শাস্তি হবে না, তা জানিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে নোটিশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

রুফ টপ রেস্টুরেন্ট: সাগরিকা রিজেন্সি

হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কড়া মনোভাবের প্রেক্ষিতে সুমিত সাত্তায়ান দ্রুত দালানবাড়ি ভাঙার নির্দেশ দিলে বৃহস্পতিবার বিশ্বজিত রায় নিজেই মানুষ লাগিয়ে রুফটপ রেস্টুরেন্ট ভাঙা শুরু করেছেন।

গত বছরের জানুয়ারিতে হাইকোর্টে জনস্বার্থ সম্পর্কীত মামলাটি দায়ের করেছেন শিলংপট্টির সুব্রত মজুমদার, ইটখলার পাপলু দত্তরায়, তারাপুরের দীপ মজুমদার, এনএস অ্যাভেন্যুর বিধান দাশগুপ্ত, রাধামাধব রোডের সমীরকান্তি পাল, বিবেকানন্দ রোডের বিশ্বরূপ দত্ত, জানিগঞ্জের প্রাণতোষ সাহা, মেহেরপুরের কাশীনাথ দাস ও পঞ্চায়েত রোডের পার্থপ্রতীম দাস। তাঁদের অভিযোগ ছিল, শিলংপট্টিতে বিশ্বজিত রায় অবৈধভাবে এই দালানবাড়ি নির্মাণ করেছেন। এই প্রেক্ষিতে ৬ মার্চ উচ্চ আদালত  কাছাড়ের জেলাশাসক ও শিলচরের পুরপ্রধানকে সার্ভে করে বিষয়টি দেখতে বলেন। ঠিকই অনিয়ম হলে, কোন অফিসারদের তত্ত্বাবধানে তা ছিল, তাদের নাম-পদমর্যাদা জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার সুমিত সাত্তায়ান তখন হলফনামা দিয়ে হাইকোর্টকে জানান, এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সার্ভে করে যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতে নানা অনিয়মের উল্লেখ রয়েছে। অনুমতি প্রদানের সময় সামনের দিকে ৮ মিটার ছাড়ার কথা বলা হয়েছিল।  তিনি ছেড়েছেন ৭.০৩ মিটার। পেছনের দিকে ১১.২১ মিটার ছাড়ার কথা, ছাড়া হয়েছে মাত্র ২.৬৭ মিটার। ক্যান্টিলিভারে দেড় মিটার পর্যন্ত বাড়ানোর কথা। সেখানে বাড়ানো হয়েছে দুই মিটার। এর চেয়ে বড় কথা, হোটেল-রেস্টুরেন্ট খোলার কথা জানানোই হয়নি তাদের। এর অনুমতি ছিল গ্রাউন্ড ফ্লোর সহ পাঁচতলার। বিশ্বজিত রায় বিনা অনুমতিতেই আরও একতলা অতিরিক্ত বানিয়ে ফেলেছেন। ওই হলফনামা দেখে বিচারপতিরা জানতে চান, দালান নির্মাণে এত অনিয়ম হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন?

No description available.এর পরই ১২ নভেম্বর সুমিত সাত্তায়ান বিশ্বজিত রায়কে বেআইনি অংশ ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন এবং আদালতকে তা জানান। কিন্তু ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত তা কার্যকর না হওয়ায় বিচারপতিরা আরও দশদিন সময় দেন।  ২১ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত রিপোর্ট দাখিল করতে পুরসভাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সে দিন বিশ্বজিত রায়ের আইনজীবী আদালতকে জানান, বিষয়টি এখন কাছাড়ের অতিরিক্ত জেলাশাসকের কোর্টে। তিনিই পুরসভার নির্দেশের অ্যাপিলেট অথরিটি। সেই অতিরিক্ত জেলাশাসক ৩ ডিসেম্বর সাত্তায়ানের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছেন। তাই এখন আর দালানবাড়ি ভাঙা হচ্ছে না।

গত ১৯ জানুয়ারি রায় দিয়ে হাইকোর্ট জানায়, জেনেবুঝেই অতিরিক্ত জেলাশাসক হাইকোর্টের ফরমানের প্রেক্ষিতে জারি করা এগজিকিউটিভ অফিসারের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। তা প্রাথমিকভাবে আদালত অবমাননা বলেই মনে করছেন তাঁরা।  তাই সুমিত সাত্তায়ান, ড. কেএস আহমেদ এবং বিশ্বজিত রায়ের নামে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের জবাব দিতে হবে, কেন তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না।  সেইসঙ্গে বিচারপতিরা ড. আহমেদের জারি করা ্স্থগিতাদেশ খারিজ করে দ্রুত অবৈধ দালানবাড়ি ভাঙতে বলে দিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker