Barak UpdatesBreaking News
উন্নয়ন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে একঝাঁক প্রশ্ন কংগ্রেসেরCongress raises series of questions directed at Chief Minister on the issue of development
৪ ডিসেম্বর : মুখ্যমন্ত্রীর বরাক সফরের মুখে তাঁর দিকে একগাদা প্রশ্ন ছুড়ে দিল কাছাড়ের কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিশেষ করে যে উন্নয়ন নিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে, প্রায় তিন বছরে সেই উন্নয়ন কতটা এগিয়েছে, তা জানতে কংগ্রেস নেতারা মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য দাবি করেন।
মঙ্গলবার শিলচর জেলা কংগ্রেস ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠক করে সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, রাজ্য সরকার পঞ্চায়েত নির্বাচন চাইছিল না। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশে তা করাতে বাধ্য হয়েছে। তিনি বলেন, কংগ্রেসের স্বপ্ন ছিল তৃণমূল স্তরের কাছে ক্ষমতা পৌঁছে দেওয়া, অথচ বর্তমান বিজেপি বিধায়করা জেলাশাসককে চাপ দিয়ে ক্ষমতা হড়প করে নিতে চাইছেন। তিনি বলেন, কংগ্রেস তা কোনওভাবেই হতে দেবে না।
বরাক সফরের প্রাক্কালে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে সুস্মিতার প্রশ্ন, বাঙালিদের সম্পর্কে আলফা নেতারা যেভাবে অশোভন মন্তব্য করছেন বা তিনসুকিয়ায় বাঙালি হত্যা বা ওদালগুড়ি ট্রেনে বিস্ফোরণের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী কী বলবেন ? নির্বাচনের মুখে ধলাইতে মদ ধরা পড়েছে, ধৃত ব্যক্তি মন্ত্রীর কথা বলছে, কিন্তু যে দল উন্নয়ন নিয়ে কথা বলে, ভোটের সময় তাদের মদের কেন দরকার হয়, প্রশ্ন তোলেন সুস্মিতা। সাংসদ বলেন, বিজেপি সভাপতি রঞ্জিত দাস শিলচরে এসে দুর্নীতি নিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলেছেন, কিন্তু মীন বিভাগের মন্ত্রী কোনও ইন্টারভিউ ছাড়া কীভাবে চাকরি দিলেন, তার তদন্ত হয়েছে কি ? কাগজ কল কবে খুলবে, মহাসড়কের অগ্রগতি কতটুকু, রামনগরের দিক দিয়ে যাওয়া বাইপাসের কাজ বন্ধ কেন, ইত্যাদি বেশকিছু প্রশ্ন এ দিন সাংবাদিকদের মাধ্যমে সুস্মিতা ছুড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের দিকে।
বিধায়ক রাজদীপ গোয়ালা বলেছেন, পঞ্চায়েত ভোটে জয়ের স্বপ্ন দেখছে বিজেপি। কিন্তু উন্নয়ন নিয়ে যে দল কথা বলে, সেই দল ৩ বছর সরকার চালানোর পরও কেন জেলা পরিষদ বা আঞ্চলিক পঞ্চায়েতে টাকা বরাদ্দ করল না। ২০১৬-তে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল, সেই অর্থে আজ পর্যন্ত ঘর হয়নি। এমজিএনরেগা-তে এ পর্যন্ত কোনও নতুন প্রকল্প আসেনি। জবকার্ডধারীরা টাকা পাচ্ছেন না। এভাবে প্রায় ৪০ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, কংগ্রেস সরকারের আমলে পঞ্চায়েত সভাপতি, এপি সদস্য ও পঞ্চায়েত সদস্যদের জন্য সাম্মানিক চালু করা হয়েছিল, কিন্তু গত তিন বছরে সেই টাকা দেওয়া হয়নি। সিঙ্গেরবন্দে নদী ভাঙন এবং বরাকে ৫টি সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতির কথাও বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দেন।
জেলা কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক পার্থরঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, বিজেপি আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করে প্রতিটি মনোনয়ন জমা দেবার কেন্দ্রে ঢুকে অফিসারদের সঙ্গে জোর জবরদস্তি করেছে। সরকারি আধিকারিকদের মনোনয়নপত্র গুলো বৈধ ঘোষণা করার জন্য চাপ দিয়েছে। তিনি জানান, জেলা কংগ্রেস এ ব্যাপারে প্রশাসনকে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে। তিনি এও বলেছেন, বিজেপি সভাপতি কাছাড়ে এসে বলে গেলেন, সাংসদ সুস্মিতা দেব সহ কংগ্রেসিদের কাছাড় ছাড়া করবেন। এই হুমকি তাহলে কি প্রমাণ করে না যে, বিজেপি পঞ্চায়েত নির্বাচন পেশিশক্তি দিয়ে জয় করতে চায়! তিনি এ ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।