AnalyticsBreaking News
নাগরিকত্ব/৩২ঃ ৬ বছরের চেয়ে কম ঠিক হবে না, বলল জেপিসিCitizenship/32: It will not be correct to be less than 6 years, says JPC
(যৌথ সংসদীয় কমিটির অনুমোদন লাভের পর নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ২০১৬ গত ৭ জানুয়ারি লোকসভায় পেশ হয়। ধ্বনিভোটে পাশও হয়ে গিয়েছে এটি। এ বার রাজ্যসভায় ওঠার কথা ছিল। শেষপর্যন্ত তা আনাই হয়নি। তবে সংসদে সুযোগ না থাকলেও বাইরে এ নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকবে। এই প্রেক্ষিতে যৌথ সংসদীয় কমিটি যে ৪৪০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট দিয়েছে, ওয়েটুবরাক পুরো রিপোর্ট ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে চলেছে। আজ এর ৩২-তম কিস্তি।)
১৭ মার্চঃ ৪.৩ তিন দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানুষের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধি জানান, উদ্বাস্তুরা মনে করেন, ভারত তাদের নিজস্ব ভূমিই। ফলে এখানে তারা আশ্রয় চাইতেই পারেন। তাদের দাবি, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৬(১) ধারা অনুসারে ভারতের স্থায়ী নাগরিকত্ব মঞ্জুর হোক। ওই ধারাতেই আবেদনের মাধ্যমে নাগরিকত্বের কথা বলা হয়েছে।
৪.৪ মূল আইনের ৫ ও ৬ নং ধারার মধ্যে নাগরিকত্ব প্রদানের সময়সীমায় কোনও পার্থক্য রয়েছে কিনা কমিটি জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক স্পষ্ট করে যে, ৬ নং ধারায় মোট ১২ বছর ভারতে থাকার পরই নাগরিকত্ব মিলতে পারে। ৫ নং ধারায় ৭ বছর থাকলেই হল।
৪.৫ আবেদন-পরবর্তী ১১ বছরকে কীভাবে প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ৬ বছর করার কথা বলা হয়েছে, কমিটির এই জিজ্ঞাসায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৫(১)(এ) এবং ৫(১)(সি) ধারায় বলা হয়েছে, ভারতীয় মূলের কেউ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানালে তাকে ৭ বছর ভারতে বসবাস করতে হয়। যারা ভারতীয় মূলের নন বা নথি দ্বারা ভারতীয় মূলের বলে প্রমাণে ব্যর্থ, তাদেরও একই সময়সীমা পর্যন্ত থাকা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সংশোধনীতে।
৪.৬ কেউ কেউ এই সময়সীমা দুই-তিন বছরে নামিয়ে আনার আর্জি জানিয়েছেন। তা আদৌ সম্ভব কিনা, জানতে চায় কমিটি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানায়, এর চেয়ে কম সময় হলে নিরাপত্তার দিক খতিয়ে দেখা, আবেদনকারীর খবরাখবর সংগ্রহ ও নজরদারি অনেকটা কমে যাবে। নাগরিকত্ব মঞ্জুরির আগে এই বিষয়টা খুব জরুরি।
৪.৭ ভারতীয় পাসপোর্ট প্রতি ৫ বছর অন্তর পুনর্নবীকরণের প্রয়োজন কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানায়, ১৯৮০ সালের পাসপোর্ট রুলস অনুসারে ১৫ বছর-উর্ধ্ব একজন সাধারণ নাগরিকের পাসপোর্ট কিছু ক্ষেত্রে ১০ বছর, কিছু ক্ষেত্রে ২০ বছর কার্যকর থাকে। ফলে তা ৬ বছরে নামিয়ে আনা ঠিক হবে না।
৪.৮ তিন দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অনুপ্রবেশকারীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানে যোগ্যতাসূচক সময়সীমা কমিয়ে আনাই মূল আইনের তৃতীয় তফশিলের সংশোধনীর উদ্দেশ্য। কমিটির নজরে এসেছে, বহু অনুপ্রবেশকারী তাদের মা-বাবা যে অবিভক্ত ভারতে জন্মেছিলেন, মা-বাবার জন্মের শংসাপত্র দ্বারা তা প্রমাণে ব্যর্থ। ৫(১)(এ) ধারায় নাগরিকত্বের জন্য ৭ বছর ভারতে বসবাসের প্রমাণ দিতে হলেও তাদের বেলায় ৬(১) ধারায় আবেদন করতে হবে। সেখানে ভারতের নাগরিকত্বের জন্য ১২ বছর বসবাসের কথা বলা হয়েছে। সরকার ৬(১) ধারার আবেদনকারীদের কিছুটা ছাড় দিতে চেয়েছে। সহজ কথায় বললে, যারা ভারতীয় মূলের নন বা ভারতীয় মূলের হলেও নথি দ্বারা প্রমাণ করতে পারছেন না, তাদেরও মূল আইনের ৫(১)(এ) এবং ৫(১)(সি) ধারার আবেদনকারীদের মত ৬ বছর বসবাস বাধ্যতামূলক করতে চায়, যা বর্তমানে ১১ বছর। এই ৬ বছরকে আরও কমানোর যে দাবি উঠেছে, সে সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, নিরাপত্তার দিক খতিয়ে দেখা এবং আবেদনকারীর খবরাখবর সংগ্রহে সময় অনেকটা কমে যাবে। নাগরিকত্ব মঞ্জুরির আগে তা খুব জরুরি। যৌথ সংসদীয় কমিটিরও অভিমত, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের তৃতীয় তফশিলের ডি উপধারার সংশোধনে সরকার যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেই ৬ বছরের সময়সীমাকে নিরাপত্তাজনিত কারণেই কমানো ঠিক হবে না।
৪.৯ তবে কমিটি চায়, এই বিল ও অসম চুক্তির মধ্যে যত ধরনের দ্বন্দ্ব রয়েছে, তার যেন যথাযথ সমাধান হয়।
চোখ রাখুন—–নাগরিকত্ব/৩৩ঃ অসম চুক্তির সঙ্গে বিলের বিরোধ রয়েই যায়