Barak UpdatesHappeningsBreaking News
টিকিট না পেয়ে সমাজমাধ্যমে কী লিখলেন অমিয়কান্তি দাস?
//অমিয়কান্তি দাস//
ভারতীয় জনতা পার্টি এখন আদর্শে বিশ্বাসী নয়, ব্যক্তিস্বার্থে বিশ্বাসী। ধলাই এর প্রার্থী নির্বাচনে তা আবার প্রমাণিত হলো। কোন এক ব্যক্তির ইচ্ছানুসারে এবারের দলীয় টিকিট প্রদান করা হলো। আমি সেই ব্যক্তির পা চাটতে পারিনি, তাই আমি টিকিট পাই নি। দলে এখন গণতন্ত্র বলে কিছু নেই, ব্যক্তিস্বার্থ কায়েম করতে নিজের পছন্দের প্রার্থীর নাম পাঠিয়েছিলেন ধলাই এর সেই নেতা। প্রায় দু লক্ষ ভোটারের মধ্য থেকে একজনকে ও পছন্দ হলো না উনার। উনার প্রতি আনুগত্য থাকা একজনকে Constituency এর বাইরে থেকে আমদানি করতে হলো। এটা তো সরাসরি ধলাই এর বিজেপি কর্মীদের অপমান করা হলো, ধলাই এর সমস্ত ভোটারদের অপমান করা হলো। তাই এবার সময় এসেছে জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়জীর নির্দেশিত পথকে অনুসরণ করে এগিয়ে যাওয়ার। উনি বলেছিলেন, “প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, প্রয়োজনে প্রতিশোধ”। তাই এবার প্রতিবাদে মাঠে নামতেই হবে, আর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুরে সুর মিলিয়ে চলা শুরু করতে হবে- “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে”। নির্বাচিত প্রতিনিধি হওয়ার লক্ষ্যে নয়, “পরম বৈভবশালি রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে” – এই প্রতিবাদে আমাকে সহযোগিতা করার জন্য সমস্ত রাষ্ট্রোপ্রেমী ও দলের জন্য নিজের সর্বস্ব প্রদানকারী ত্যাগী কর্মীদের প্রতি আমি বিনম্র আবেদন জানাচ্ছি। আর আমার আহ্বানে সাড়া দেওয়া না দেওয়া আপনাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছার উপর নির্ভর করবে, তবে একদিন আমার মতো অবস্থা আপনাদের ও হবে, তাই এখনই প্রতিবাদে নেমে যেতে হবে। এবার আসি আমার কথায় – আমি ১৯৮৯ ইংরেজিতে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রাথমিক সদস্যতা গ্রহণ করেছিলাম। দলের জি পি কমিটির সাধারণ সম্পাদক, থেকে জেলা সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন), সাধারণ সম্পাদক, জেলা সহ সভাপতি সহ প্রদেশ কমিটি বিগত ২০১৫ ও ২০১৯ এ সদস্যতা অভিযান এর আসাম প্রদেশ কমিটির কো কনভেনর এর দায়িত্ব পালন করেছি। ২০১৯ এর সাধারণ নির্বাচনে দলের নির্দেশে দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে নির্বাচনী প্রচারে অংশ গ্রহণ করেছি। ২০২৩ এ ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে “সেপাহিজলা উত্তর” জেলার দায়িত্ব নিয়ে প্রায় চার মাস ত্রিপুরায় থেকে নির্বাচনী প্রচারে কাজ করেছি। ১৯৯৭ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত প্রায় ১৮ বৎসর পূর্ণকালীন কার্য্যকর্তা রূপে দলের ও বিবিধ ক্ষেত্রের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছি। আমি একথা বলছি না যে এ সমস্ত কাজের বিনিময়ে আমাকে প্রার্থী করা হোক, সংগঠনের কাজে যখন যোগদান করেছিলাম, তখন এ ধরণের কোন আকাঙ্ক্ষা ছিলো না, আর এখনও বলছি, ২০১৬ ও ২০২১ এ প্রার্থীত্ব দাবী করেছিলাম, পাই নি, তাতে কিছু যায় আসে না, কারণ, দল তখন পরিমল শুক্লবৈদ্যকে প্রার্থী করেছিল, এবার তো পরিমলদা সাংসদ নির্বাচিত হয়ে গেছেন, তাহলে কোন কারণে আমাকে প্রার্থী করা হয় নাই, কারণ শুনেছি, যে, পরিমল শুক্লবৈদ্যের পছন্দের তালিকায় আমি নেই, তাই দল পরিমল শুক্লবৈদ্যের পছন্দের লোককে প্রার্থী করেছে। তাহলে সবশেষে এই দাড়ালো যে, দলের প্রতি আনুগত্য থাক না থাক, ব্যক্তির প্রতি আনুগত্য থাকতেই হবে, অর্থাৎ তুমি ঠিকে থাকতে হলে চাটা শিখা আবশ্যক, যা আমার চরিত্রে নেই, তাই বঞ্চিত হলাম। টিকিট বঞ্চিত হয়ে কোন কষ্ট নেই, কষ্ট হচ্ছে দলের কর্তাদের নৈতিক অধঃপতন দেখে।এবার যদি আমি আমার অনুরাগীদের ইচ্ছা ও পরামর্শকে সম্মান করে পরিমল শুক্লবৈদ্যের (দলের নয়) প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী ময়দানে অবতীর্ণ হই, তাহলে দল আমার বিরুদ্ধে অনুশাসনহীনতার তকমা লাগাতে পারবে কি? মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী উনার বরাক সফরকালে বলেছিলেন, যে ধলাই এ পরিমল শুক্লবৈদ্য যার নাম পাঠাবেন, তাঁর নামই প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করা হবে, আর হলো ও তাই। তাহলে রাষ্ট্রবাদ আর গণতন্ত্র বলে কিছু অবশিষ্ট রইলো কি? দলে এখন অনুশাসন ও আদর্শ বলে কিছু নেই, আছে শুধু চাটুকারিতা, পা চাটতে পারলে বেশ, না পারলে শেষ। তাই আগেই বলে রাখছি, নির্লজ্জের মতো আমার বিরুদ্ধে অনুশাসনহীনতার তকমা লাগাতে যাবেন না।
আমি আরএসএস (RSS) এর তৃতীয় বর্ষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত স্বয়ংসেবক, আর যেখানেই থাকি আমৃত্যু স্বয়ংসেবক হয়েই থাকবো। আমি আদর্শ থেকে বিচ্যুত হচ্ছি না, আমি আদর্শের পরিপন্থী পদক্ষেপের প্রতিবাদ করছি।
ভারত মাতা কি জয়। রাষ্ট্রহিত সর্বোপরি।