Barak UpdatesHappeningsBreaking News
মাস্ক পরে শিলচর থেকে বর গেলেন, ধলাইয়েও সকলের মুখঢাকাA marriage to be remembered for ages, bride & groom tie the knot wearing masks
৫ মেঃ ফেব্রুয়ারিতে বসেই বিয়ের দিনক্ষণ পাকা করে নিয়েছিল উভয়পক্ষ। ৩ মে সাতপাকে বাঁধা পড়বেন তাঁরা। পাত্র সেদিনই জানিয়ে দিয়েছিলেন, বরযাত্রী একটু বেশিই হবে। এই প্রস্তাব সাদরে মেনে নিয়েছিলেন কনের বাবা। কারণ তিনিও জানেন, তাঁর হবু জামাতা মিঠুন রায় আর দশজনের মত সাধারণ যুবক নন। শিলচর মেডিক্যাল কলেজের আই ব্যাঙ্কের কাউন্সেলর। একই দায়িত্ব পালন করে চলেছেন আরও দুয়েকটি বিভাগে। এ তো শুধু পেশাগত পরিচিতি। সামাজিক কাজকর্ম এত বিস্তৃত যে, মানুষ সমস্যায় পড়লেই তাঁকে ফোন করেন। সক্ষম নামে সর্বভারতীয় এক এনজিওর দক্ষিণ অসম ্প্রান্তীয় সম্পাদক। এ শুধু আলঙ্কারিক পদ নয়। সাধারণের সেবায় দিনরাত লেগেই থাকেন। যে ব্যাপারে কাজ করতে চান, এর এত ভেতরে ঢোকেন যে, সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মত শোনেন তাঁর কথা।
কিন্তু তখন কে আর জানত করোনা গোটা মানব সভ্যতার সামনে শক্ত চ্যালেঞ্জ দাঁড় করিয়ে দেবে! আর এর জেরে লকডাউনে বিপর্যস্ত হবে যাবতীয় কর্মকাণ্ড! এমনই ব্যাপার যে, বিয়ের দিনটাতেই দ্বিতীয় পর্বের লকডাউন শেষ হবে। অর্থাত সে দিনও বিয়ে-থার মত আনুষ্ঠানিকতায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অগত্যা অপেক্ষা ছাড়া উপায় নেই। মিঠুনবাবু জানালেন, এপ্রিলের শেষ সপ্তাহেই ইঙ্গিত মিলছিল, জোন বিভাজন করে লকডাউনের কড়াকড়িতে কিছুটা শিথিলতা আনা হবে। কাছাড় জেলা গ্রিন জোনে পড়বে, তা বুঝতেও কষ্ট হয়নি। কিন্তু অনুমানের ওপর নির্ভর করে কি আর বিয়ের কাজ এগুনো যায়।
এ বার ১ মে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক জোন ঘোষণার পরই আর দেরি করেননি মিঠুন। পাঁজি ঘেঁটে দেখা যায়, ৫ মে পরবর্তী তারিখ। কিন্তু তখনও বিয়ের মত অনুষ্ঠানের জন্য নানা নির্দেশিকা। মিঠুনবাবু জানিয়ে দেন, বিয়ে হবে সমস্ত নীতি-নির্দেশিকা মেনে। কনে পঞ্চমীর সায় আদায় করে নেন, বিয়ে হবে মাস্ক পরে। বাড়িতে কোনও অনুষ্ঠান নয়, হবে শুধু কন্যাদান আর সাতপাক। তাও সবাই মাস্ক পরে থাকবেন। নিয়ম মেনেই বরযাত্রী যাবেন ৫ জন। বোন, খুড়তুতো ভাই, বৌদি সবাইকে মাস্ক পরতে বলে দেন। দুই বাড়ির জন্য জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি সংগ্রহ করা হয়। পৃথক পাস সংগ্রহ করা হয় পুরোহিতের আসা-যাওয়ার জন্য।
গোটা পর্ব এগোয় অতি নীরবে। মঙ্গলবার সাড়ে 5টায় শিলচর থেকে বর গিয়ে পৌঁছান ধলাইয়ে মেয়ের বাড়িতে। এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে সাতপাক সেরে বর-কনের মাস্ক পরা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেন মিঠুন। বিস্মিত সবাই। অভিনন্দনের ফোয়ারা ছোটে ফেসবুকে, হোয়াটস অ্যাপের গ্রুপে গ্রুপে।