Barak UpdatesHappeningsCultureBreaking News
৫ মিনিটের অভিনয়েই ভারত জয় নেতাজি বিদ্যাভবনের পাঁচ ছাত্রীর, বঙ্গ সাহিত্যের সংবর্ধনা
আসামকে প্রথম করার পরও সরকারি নীরবতায় আক্ষেপ
ওয়েটুবরাক, ১৭ ডিসেম্বর : চরিত্র অভিনয় প্রতিযোগিতায় সর্বভারতীয় স্তরে প্রথম স্থান অধিকার করে কাছাড় জেলা সহ গোটা আসামের মুখ উজ্জ্বল করায় শনিবার বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য সংস্কৃতি সম্মেলনের কাছাড় জেলার সমিতির পক্ষ থেকে নেতাজি বিদ্যাভবন গার্লস হাইয়ার সেকেন্ডারি স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং নির্দেশক-কলাকুশলীদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়৷ অন্যান্য ছাত্রীরাও যাতে উৎসাহিত হয়, সে জন্য সংগঠনের কর্মকর্তারা স্কুলে গিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে সংবর্ধনা প্রদান করেন৷ অনুষ্ঠানে বঙ্গ সাহিত্যের কাছাড় জেলা সমিতির সাবেক সভাপতি, প্রবীণ সাংবাদিক তৈমুর রাজা চৌধুরী পৌরোহিত্য করেন৷ শুরুতেই স্কুলের অধ্যক্ষ দেবাঞ্জন মুখোপাধ্যায় জানান, শুরুতে পাঁচজনের দল জেলা স্তরের প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়৷ পরে গুয়াহাটিতে তারা কাছাড় দল হিসাবে অংশ নেয়৷ সেখানে ২২ জেলার মধ্যে নেতাজি বিদ্যাভবন সেরার শিরোপা অর্জন করে৷ গত ৫ ডিসেম্বর তারা আসামের প্রতিনিধিত্ব করতে দিল্লি যায়৷ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ৩২টি দল পাঁচ মিনিটের চরিত্র অভিনয় তথা অনুনাটক মঞ্চস্থ করে৷ সেখানেও নেতাজি বিদ্যাভবনের পাঁচ ছাত্রী প্রথম পুরস্কার লাভ করে৷ দেবাঞ্জনবাবু নিজেও ছাত্রীদের সঙ্গে দিল্লিতে গিয়েছিলেন৷ সরকারি নির্দেশ মেনে শিক্ষয়িত্রী তনুশ্রী পালও ছাত্রীদের সঙ্গে যান৷ দেবাঞ্জনবাবু এই সাফল্যের জন্য কৃতিত্ব দেন নির্দেশক শান্তনু পাল ও তাঁর সহযোগী দেবস্মিতা দাস, সুপ্রিয়া সিনহাকে৷
দিল্লির অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে অধ্যক্ষ জানান, ৯ তারিখে পুরস্কার বিতরণের কথা৷ এর আগে পর্যন্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণা হয়নি৷ কিন্তু ৯ তারিখ সকালে বলা হলো, অনুনাটকটি সেদিন আবার প্রদর্শন করতে হবে৷ কী হলো! উৎকণ্ঠা বেড়ে গেল৷ কিন্তু পাঁচ ছাত্রী ঘাবড়ায়নি৷ এরা ফের অনুষ্ঠানে সেটি মঞ্চস্থ করল৷ তখনই ঘোষণা করা হল, আসামই প্রথম৷ তাই অতিথি অভ্যাগতদের দেখানোর জন্য তাদের দ্বিতীয়বার ডাকা হয়েছিল৷ দ্বিতীয় হয় কেরল এবং তৃতীয় স্থান লাভ করে ওড়িশা৷
আসামের প্রতিনিধিত্বকারী ওই পাঁচ অভিনেত্রী হলো ঋতুপর্ণা পাল, পূর্ণিমা বণিক, প্রিয়াঙ্কা দাস, রাজশ্রী দাস ও তৃষা মণ্ডল৷ সবাই নবম শ্রেণির পড়ুয়া৷
বঙ্গ সাহিত্যের সাধারণ সম্পাদক গৌতম প্রসাদ দত্ত বলেন, বরাক উপত্যকায় প্রতিভা রয়েছে, নেতাজি বিদ্যাভবনের মেয়েরা ফের প্রমাণ করল৷ যে পরিবেশ, পারিপার্শ্বিকতা থেকে এরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে, এই ফলাফল সত্যি আশার নতুন বার্তা দিচ্ছে৷
সভাপতির ভাষণে তৈমুর রাজা চৌধুরী আক্ষেপ ব্যক্ত করেন, আসামের মুখ উজ্জ্বল করে প্রথম পুরস্কার নিয়ে এলেও সরকারি ভাবে এখনও সংবর্ধনা দেওয়া হয়নি৷ একে প্রশাসনিক গাফিলতি বলেই মন্তব্য করেন তিনি৷
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গ সাহিত্যের জেলা সহসভাপতি বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদক ড. জয়ন্ত দেবরায়, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অভিজিৎ ধর, শিলচর আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি সব্যসাচী পুরকায়স্থ, প্রাক্তন সম্পাদক শিপ্রা পুরকায়স্থ ও বর্তমান সম্পাদক উত্তমকুমার সাহা৷ তাঁরা অধ্যক্ষ দেবাঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের হাতে স্কুলের সম্মাননা এবং অনুনাটকটির নির্দেশক শান্তনু পালকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করেন৷ স্মারক দিয়ে অভিনন্দিত করা হয় পাঁচ বিজয়ীকেও৷ উত্তরীয় পরিয়ে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পারফর্মিং আর্টসের ছাত্রী দেবস্মিতা দাস এবং সুপ্রিয়া সিনহাকে সম্মান জানানো হয়৷