Barak Updates

নতুন অর্থনৈতিক করিডর, রেলপথে যুক্ত ভারত-মধ্য প্রাচ্য

ওয়েটুবরাক, ১০ সেপ্টেম্বর: জি ২০ শীর্ষ সম্মেলন থেকে যৌথভাবে ঘোষিত হলো ভারত-সংযুক্ত আরব আমিরশাহী-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডর৷ এই করিডরের অধীনস্থ অঞ্চলগুলিতে রেল ও জাহাজপথে যোগাযোগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপে আরও গতি আনতেই এই উদ্যোগ৷

অর্থনৈতিক করিডর ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সৌদির যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন প্রমুখ। মোদি বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে করিডরের ঘোষণাটি করতে পেরে খুশি। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক পার্টনারশিপ হিসেবে উপস্থাপিত হবে।

মোদির কথায়, এই করিডর যোগাযোগের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী দিশা দেখাবে এবং তা গোটা বিশ্বের বিকাশে সহায়ক হবে, ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। বাইডেন বলেন, এই অর্থনৈতিক করিডরের বিষয়টি একটি বিরাট চুক্তি। যার মূল ফোকাস দীর্ঘস্থায়ী, স্থিতিস্থাপক, ভালো মানের বিনিয়োগের সহায়ক পরিকাঠামো গঠন। যাতে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বলতর হয়।

ভারত-মধ্য প্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডরটিকে ঐতিহাসিক চুক্তি বলেও বর্ণনা করেছেন বাইডেন। ভারত থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, সৌদি আরব, জর্ডন, ইজরায়েল হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবধি জহাজ ও রেল যোগাযোগের মাধ্যমে বাণিজ্য আরও সুগম হবে বলে আশাবাদী বাইডেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও সৌদির যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের ভূমিকারও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন তিনি।

জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানকারী সমস্ত দেশ এই ঐতিহাসিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই সংক্রান্ত ঘোষণার সময় মোদি, বাইডেন, সলমন ছাড়াও ছিলেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কলজ, ইতালিয়ান প্রাইম মিনিস্টার জিয়র্জিয়া মেলোনি, ইউএই-র প্রেসিডেন্ট মহম্মদ বিন জায়েদ আল নাহয়িয়ান।

ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই নতুন অর্থনৈতিক করিডরের যে ঘোষণা করেছে তা নিঃসন্দেহে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক। চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের বিকল্প হিসেবে এই করিডরটিকে মনে করা হচ্ছে।

যোগাযোগ পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটিয়ে অর্থনৈতিক বিকাশকে ত্বরান্বিত করাই এই করিডরের মূল উদ্দেশ্য। সেই মতোই বিভিন্ন দেশ আজ মউ স্বাক্ষর করেছে। এশিয়া, আরব ও ইউরোপকে একসূত্রে গেঁথে অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে করিডরটি। ইস্ট করিডর জুড়বে ভারতের সঙ্গে এশিয়া বা মধ্য প্রাচ্যকে। নর্দার্ন করিডর পশ্চিম এশিয়া বা মধ্য প্রাচ্য ও ইউরোপের সেতুবন্ধন করবে।

নতুন করিডরের চুক্তি অনুযায়ী যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে রেললাইন বসানো হবে। যাতে এক দেশ থেকে অন্য দেশের মধ্যে ক্রস-বর্ডার শিপ টু রেল ট্রানজিট নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায়। যাতে পণ্য আমদানি ও রফতানির পথ সুগম হবে। খরচও হবে কম। মাল্টি মোডাল ট্রান্সপোর্ট রুটের থেকে অনেক কার্যকরী হবে এই নতুন নেটওয়ার্ক।

রেল রুটের পাশাপাশি এই করিডরের সুফল মিলবে অন্যান্য ক্ষেত্রেও। বিদ্যুৎ সংযোগ ও ডিজিটাল সংযোগের ক্ষেত্রে কেবল ফেলা, ক্লিন হাইড্রোজেন রফতানিতে পাইপ বসানোর বিষয়গুলিও অনেক মসৃণ হয়ে যাবে। রিজিওনাল সাপ্লাই চেনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে এই করিডর। পরিবেশ, সামাজিক ও সরকারি ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, খুলে যাবে বাণিজ্যের নয়া দিগন্ত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker