Barak UpdatesAnalytics
স্বাধীনতা সংগ্রামের অজানা গল্প উঠে এল রামকৃষ্ণনগর কলেজের ইতিহাসের আলোচনায়
ওয়ে টু বরাক, ২৮ এপ্রিল : রামকৃষ্ণনগর কলেজের ইতিহাস বিভাগ ও ইতিহাস সংকলন সমিতির যৌথ উদ্যোগে “আনটোল্ড স্টোরিস অব ইন্ডিয়ান ফ্রিডম মুভমেন্ট” শীর্ষক এক আলোচনা সভা বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ করেন অধ্যক্ষ সুরজিৎ চক্রবর্তী সহ আমন্ত্রিত অতিথিরা। আমন্ত্রিত বক্তাদের বক্তব্যে ইতিহাসের অনেক অনুল্লেখিত বিষয় উঠে আসে।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, রাসবিহারী বসু ও সাভারকার, এই তিনজনের গোপন যোগাযোগে কীভাবে আজাদ হিন্দ বাহিনীর স্বাধীনতা সংগ্রাম বাস্তবায়িত হয়, এই বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন রবীন্দ্র সদন কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. নীলাঞ্জন দে। অপরিণামদর্শী দেশভাগের ফলে করিমগঞ্জের সাড়ে তিন থানা পাকিস্তানের মুঠোয় কীভাবে চলে গিয়েছিল তা তুলে ধরা হয়। করিমগঞ্জ, রাতাবাড়ি, বদরপুর ও পাথারকান্দির মানুষের তিনদিন পাকিস্তানের অধীনে থাকার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন বিশিষ্ট লেখক অসিত চক্রবর্তী। চরগোলা এক্সোডাসের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন তারা। চা শ্রমিকরা তৎকালীন স্বাধীনতা আন্দোলনে কীভাবে চতুরতা দেখিয়েছিল সেই বিষয়ে আলোকপাত করেন তারা।
এই মনোজ্ঞ আলোচনায় বক্তারা ভারতীয় ইতিহাসকে ব্রিটিশ দাম্ভিকতার গর্ব থেকে মুক্ত করে পুরোপুরি ভারতীয় করে তুলতে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, ব্রিটিশের বঙ্গভঙ্গের চক্রান্ত ১৯০৫ সালে ভারতবর্ষের মানুষ ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। অথচ ১৯৪৭ এ কংগ্রেসের আন্দোলের ভিত মজবুত হওয়া সত্বেও দেশভাগে ব্রিটিশ সফল হল কেন ? আন্দোলনকারী নেতাদের ন্যাশনালিজম ডাইল্যুট হয়ে যাওয়াটাই ব্রিটিশ শাসকের সফলতার কারন।
চরগোলা চা শ্রমিকদের মূলুকে ফিরে যাওয়ার ফলাফল আলোচনাতে উঠে আসা ছাড়াও স্বাধীনতা সংগ্রামে সাভারকারের মত বিপ্লবীদের অসহনীয় কষ্টের কথা তুলে ধরে বলেন, পরবর্তীকালে ইতিহাসে তারা ব্রাত্য । তৎকালীন শাসকদের ইতিহাসে আধিপত্যের কথাও আলোচনাতে উঠে আসে। সেইসব ঘটনা সাধারণ মানুষদের কীভাবে প্রভাবিত করেছিল তা তুলে ধরেন ইতিহাস প্রেমী বিবেকানন্দ মোহন্ত।
তিন আমন্ত্রিত অতিথি যথাক্রমে অসিত চক্রবর্তী, ডঃ নিলাঞ্জন দে ও বিবেকানন্দ মোহন্ত ও কলেজের অধ্যক্ষ সুরজিৎ চক্রবর্তীকে বরনের পর উদ্বোধনী সংগীতের মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু হয় । অতিথিদের পরিচয় প্রদান করেন ইতিহাস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক লীনা চক্রবর্তী।