Barak UpdatesHappenings

সাতপাক হল না, কাটাখালেই উদ্ধার সুমিতের মৃতদেহ

৩১ অক্টোবরঃ নৌকাডুবির চতুর্থদিনে উদ্ধার হল সুমিত পাঁশির মৃতদেহ। বুধবার সকালে মাধবপুরে কাটাখালের পারে ওই মৃতদেহ ভাসতে দেখেন এক কৃষক। গত ২৮ অক্টোবর লালামুখ ফেরিঘাটে ৩০ যাত্রী নিয়ে উল্টে গিয়েছিল দাঁড়টানা এক নৌকা। বাকিরা পারে উঠলেও সন্ধানহীন থাকে ৩ জন। এ দিন সুমিতের মৃতদেহ উদ্ধার হলেও এখনও তাঁর ভাই অজয়ের খোঁজ মেলেনি। সন্ধান নেই প্রতিবেশী প্রতিবন্ধী যুবক রমেশ পাঁশির। বুধবারও রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী ও ডুবুরীরা অভিযান চালান। স্থানীয় জনতা বড় জাল ফেলেন। কিন্তু লাভ হয়নি।

তিনদিন ধরে মা লক্ষ্মী পাঁশি সুমিতের ঘরে ফেরার আশায় পথ চেয়ে বসেছিলেন। একইসঙ্গে আসবে তাঁর ছোট ছেলে অজয়ও। জোর দিয়েই বলছিলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে রমেশ হয়তো পারে উঠতে পারেনি। তাঁর ছেলেরা ডুবতে পারে না। দুই ভাই-ই সাঁতার জানে। কিন্তু তাঁরা যে পারে উঠতে পারেনি, বুধবার তা স্পষ্ট হয়ে যায়। সুমিতের মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে সকালেই বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ লালামুখ থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে মাধবপুরে গিয়ে জড়ো হন। পরে পুলিশ মরণোত্তর পরীক্ষার জন্য মৃতদেহ এসকে রায় সিভিল হাসপাতালে পাঠায়।

বড় ছেলের মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকে মেঘনাদ পাঁশি ও লক্ষ্মীদেবীকে সামলে রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৪ মেয়েকে বিয়ে দিয়ে চা শ্রমিক মেঘনাদবাবুর কপর্দকশূন্য অবস্থা ছিল। দুই ছেলে কিছুদিন থেকে কাজকর্ম করতে শুরু করে। ভেবেছিলেন, ঘরে বউ এনে এ বার সুখে দিন কাটাবেন। সুমিতের বিয়ের কথা পাকা হয়েই গিয়েছিল। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তাঁর সাতপাকে বাঁধা পড়ার কথা ছিল।

বুক চাপড়ে লক্ষ্মীদেবী সকাল থেকে বলে চলেছেন, ‘সুখ না হয় না-ই দিতে ঠাকুর, ছেলেদুটিকে কেড়ে নিলে কেন।’

লক্ষ্মীদেবীর মতো ততটা না হলেও, আশায় ছিলেন সুমিতের বাগদত্তার পরিবারও। মৃতদেহ উদ্ধারের পর কান্নার রোল ওঠে কাছাড় জেলার আইরংমারায়, তাঁদের বাড়িতেও।

English text here

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker