Barak UpdatesHappeningsBreaking News

শিলচর কলেজিয়েট স্কুল প্রসঙ্গে ৩ ডিসেম্বরের সভা মুলতুবি রাখল “অসহায়” সুশীল সমাজ

ওয়েটুবরাক, ২৫ নভেম্বর : সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রাক্কালে নানাবিধ জটিলতা ও সমস্যায় ধুঁকছে শিলচর কলেজিয়েট স্কুল৷ অথচ এটি শিলচর শহরের ঐতিহ্যবাহী এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷ এর গোড়াত্তন হয়েছিল ১৯৭৪ সালে, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রমোদ আদিত্য সহ তৎকালীন কতিপয় সুনাগরিকের উদ্যোগে৷ নানাবিধ সংবাদে এবং পক্ষ ও প্রতিপক্ষের বয়ানে এখন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম ধ্বংসের মুখে৷ এই সময়ে নীরব থাকা উচিত নয় মনে করে সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে সক্রিয় হয়েছিলেন শহরের সুশীল নাগরিকরা।

তাঁদের পক্ষে বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নিখিল পাল এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা মনে করি, শহরের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের ভরসার এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তার হৃতগৌরব পুনরুদ্ধার করে আবার স্বমহিমায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নির্মাণের কাজ শুরু করবে।”

নিখিলবাবুরা শিলচর কলেজিয়েট স্কুলের বর্তমান শিক্ষকদের একাংশ এবং অভিভাবকদের একাংশকে নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। সেদিনের সেই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সুব্রত ভট্টাচার্য৷ এছাড়া নিহার রঞ্জন পাল,  দীপক সেনগুপ্ত, ড. বিভাস দেব, কমল চক্রবর্তী, আশিস ভৌমিক, চিত্রভানু ভৌমিক, বিভাস রায়, কৃশানু ভট্টাচার্য, সত্যজিৎ দে, সুভাষ বর্মন, পঙ্কজ কান্তি দে, বিশ্বজিৎ পাল, দীপজ্যোতি রায় সহ বিশিষ্ট নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রথমে নিখিল পাল স্বাগত ভাষণ দেন এবং সভার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন। উপস্থিত শিক্ষক ও অভিভাবকদের বক্তব্যে দেখা যায়, বর্তমান পরিচালন সমিতির উপর তাঁদের কোন আস্থা নেই। রাজীব দত্তের নেতৃত্বে পরিচালন সমিতির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং স্কুলের সমস্যা সমাধানে উক্ত পরিচালন সমিতির আন্তরিকতার যথেষ্ট অভাব আছে বলে মত প্রকাশ করেন। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, রাজীব দত্তের সঙ্গেও এই ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করা হবে। সেই অনুযায়ী সুশীল সমাজের এক প্রতিনিধি দল  রাজীব দত্তের পরিচালনাধীন কমিটির সঙ্গে সভায় বসে৷ ওই সভায় রাজীব দত্ত সহ উপস্থিত সদস্যরা একাংশ শিক্ষদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন। পরে প্রতিনিধি দলটি শিলচর কলেজিয়েট স্কুলের বর্তমান অধ্যক্ষার সঙ্গে দেখা করে তাঁর বক্তব্য শোনেন৷ এর পর দিনই তাঁরা কাছাড় জেলার স্কুল পরিদর্শকের কাছে যান৷ কিন্তু কোনও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি বলেই নিখিলবাবু বিবৃতিতে জানান। ওই চারদিনের কার্যক্রমে সমস্যা সমাধানে আশার কোনও আলো দেখতে না পেরে আগামী ৩ ডিসেম্বর  রূপম কার্যালয়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও পরিচালন সমিতির নির্বাচিত নেতৃস্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে সব ভুল বোঝাবুঝি নিরসনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু গত শুক্রবার শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আয়োজিত প্রেস মিটের উল্লেখ করে নিখিলবাবু আক্ষেপের সুরে বলেন, ”প্রচার মাধ্যমে তাঁদের যে সব বক্তব্য উঠে এসেছে, তাতে সমস্যা সমাধানে এযাবৎ নেওয়া আমাদের সব উদ্যোগ যে সামান্যতম ইতিবাচক কিছু করে উঠতে পারেনি তা স্পষ্ট হল। এই প্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত ৩ ডিসেম্বরের ত্রিপাক্ষিক সভা মুলতুবি রাখতে বাধ্য হলাম।” বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমাদের নিরপেক্ষ প্রয়াসে যে কাজের কাজ কিছুই হয়নি এই কথা বলতে কোনও দ্বিধা নেই। আমরা চাই, এই স্কুল সব ধরনের সমস্যা কাটিয়ে আবার নতুন ভাবে শুরু হোক। আমরা যে কোনও ধরনের সদর্থক কাজে প্রস্তুত।” তাঁর কথায়, “বর্তমান অবস্থায় আমরা অসহায়৷ ফলে নীরব পর্যবেক্ষণ করে যাওয়া ছাড়া কোনও বিকল্প দেখতে পাচ্ছি না। তবে আমরা আন্তরিক ভাবে চাই সব সমস্যার সমাধান হোক। আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে যারা এসে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছিলেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করছি। আমরা আগামী দিনে প্রয়োজনে আবার সক্রিয় হবো, এই অঙ্গীকার করছি।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker