Barak UpdatesHappeningsFeature Story

লজ্জাই স্তন ক্যানসারের বড় শত্রু, লিখেছেন সুভাষ চৌধুরী

আজ স্তন ক্যানসার সচেতনতা মাসের শেষদিন

//সুভাষ চৌধুরী//

ক্যানসার নানা কারণে আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে৷ মাংস, মাখন, পনির ইত্যাদি অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাদ্য খেলে এবং যথেষ্ট পরিমাণে শাকসব্জি, ফলমূল না খেলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, খৈনির মত তামাকজাতীয় ও মাদক দ্রব্য সেবনের দরুন এই রোগের যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে৷ ঘনঘন এক্স-রে করানো এবং অন্য ক্ষতিকারক বিকীরণের সংস্পর্শে আসাও বিপজ্জনক৷ অত্যধিক মোটা হয়ে যাওয়া এবং বেশি ওজন সত্ত্বেও ব্যায়াম, খেলাধূলা বা কায়িক শ্রম না করাও বেশ ঝুঁকিবহুল৷ বয়স বাড়ার সঙ্গেও সঙ্গেও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে৷

তবে মহিলাদের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে৷ যেমন কম বয়সে মাসিক শুরু বা শেষ হয়ে যাওয়া, গর্ভধারণ না হওয়া বা অধিক সন্তানের জন্মদান,  যৌনরোগে আক্রান্ত হওয়া বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া প্রভৃতি৷ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যৌন মিলনও বাঞ্ছনীয় নয়৷ সন্তানের জন্মের পর অন্তত এক বছর বয়স পর্যন্ত তাকে  মাতৃদুগ্ধ পান করানো খুবই জরুরি৷ দীর্ঘদিন ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন করাও মহিলাদের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার এক বড় কারণ৷

কিন্তু ক্যানসার আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় আর ‘নো আনসার’ নয়৷ প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা শুরু করা গেলে নিরাময়ের সম্ভাবনাই বেশি৷ স্তন ক্যানসার শুরুতেই ধরা পড়ে গেলে নিরাময় একেবারে ১০০ শতাংশ৷ পাশাপাশি এও সত্য, একেবারে দেরিতে চিকিৎসা শুরু হলে অর্থাৎ অ্যাডভান্সড স্টেজে নিরাময় সম্ভাবনা বলতে গেলে শূন্য শতাংশ৷

মহিলাদের ক্ষেত্রে ক্যানসারের চেয়ে বড় শত্রু হল লজ্জা৷ এ জন্যই রোগ জটিল ও দুরারোগ্য হয়ে ওঠে৷ স্তন ক্যানসারের উপসর্গ দেখামাত্র পরিবারের অন্যান্য সদস্য, নিকটাত্মীয় এবং বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত৷ নিকটবর্তী যে কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসক বা অভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ নেওয়া উচিত৷

সমস্ত মহিলার উদ্দেশে একটা বিশেষ পরামর্শ, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করুন৷ স্তনের আকার বা আকৃতির পরিবর্তন হল কিনা খেয়াল করুন৷ স্তনের যে কোনও স্থানে বা স্তনবৃন্তের আশেপাশের চামড়া লাল হয়ে গেল কিনা, তাও দেখতে হবে৷ খেয়াল রাখবেন, স্তনবৃন্ত থেকে তরল কিছু নির্গত হয় কিনা, স্তন বা বগলের নীচে ব্যথাবিহীন কোনও চাকার উপস্থিতি টের পাচ্ছেন কিনা,  স্তনে চাকা বা পিণ্ডর অনুভব, স্তনের ত্বকে পরিবর্তন, যেমন কমলার খোসার মত খসখসে, পুরু বা কুঞ্চিত হয়ে যাওয়া বা টোল পড়া, স্তনবৃন্ত একটু ভেতরে ঢুকে পড়া বা টোল পড়া এবং স্তন বা বগলে দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা ইত্যাদিকে মোটেও অবহেলা করতে নেই৷

স্তন পরীক্ষা মোটেও কঠিন কিছু নয়৷ হাতের তিন আঙুল অনামিকা, মধ্যমা ও তর্জনি স্তনে বোলালে বা মৃদু চাপ দিলে সমস্যাগুলির কোনওটি রয়েছে কিনা টের পাওয়া যায়৷ স্নানের সময় শরীর ভেজা অবস্থায় বুঝতে সহজতর হয়৷ প্রতিমাসে অন্তত একবার প্রত্যেক মহিলাকে এইভাবে পরীক্ষা করা উচিত৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker