Barak UpdatesHappeningsCultureBreaking News
আনন্দের ছোঁয়া, রাসলীলা ঘিরে মালুগ্রামে মণিপুরিদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা
ওয়েটুবরাক, ২৯ নভেম্বরঃ রাসলীলায় মেতে উঠলেন শিলচরের মণিপুরিরা। সোমবার শেষরাতে স্থানে স্থানে রাসের আসরে রেকর্ড ভিড় হয়। মণিপুরের হিংসার প্রেক্ষিতে এতদিন তাঁরা সমস্ত ধরনের আনন্দ-অনুষ্ঠান থেকে বিরত ছিলেন। তাই রাসলীলা আয়োজিত হতেই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মণিপুরি নারী-পুরুষেরা। যেখানেই রাধা-কৃষ্ণকে কেন্দ্র করে গোপীরা নৃত্যে মেতেছেন, সেখানেই দর্শনার্থী সমাগম অন্য সব বছরকে ছাপিয়ে যায়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি, বঙ্গভাষীরাও।
মণিপুরের হিংসার মধ্যেই ছিল রথযাত্রা। সে সময় আসামের কোনও মণিপুরি মন্দির থেকে রথ বেরোয়নি। দুর্গোৎসবের সময়ে প্রতি বছর আয়োজিত হয় তিনদিনের ইমা পান্থৈবি পূজা। এ বার রংপুর, উধারবন্দ সহ এই অঞ্চলের কোথাও পান্থৈবি দেবীর বন্দনা হয়নি। নিঙল চকৌবা বা ভ্রাতৃদ্বিতীয়া মণিপুরিদের বড়সড় পারিবারিক অনুষ্ঠান। এমন অনুষ্ঠান থেকেও এই বছর নিজেদের সরিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা।
সে জন্যই রাসলীলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হলে সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মহারাস উৎসবের বড় আয়োজন হয় শিলচর মালুগ্রামের গোবিন্দ জিউর আখড়ায়। আয়োজক সেখানকার গোবিন্দজি কলামন্দির। সভাপতি সত্যেন্দ্র সিংহ জানান, অন্য বছর ১৩ গোপী নৃত্য পরিবেশন করেন। এ বার রাধা-কৃষ্ণ-বৃন্দার সঙ্গে নেচেছেন ১৬ গোপী। অসম বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির ডিরেক্টর নিত্যভূষণ দে সোমবার রাত সাড়ে এগারোটায় এর উদ্বোধন করেন। অতিথিদের মধ্যে ছিলেন শিলচরের প্রাক্তন পুরপ্রধান শান্তনু দাস, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বীরেন সিংহ, মণিপুরি লিঙ্গুইস্টিক বোর্ডের সদস্য কেএম চাঁদ, এস কমলাকান্ত সিংহ, শমিতা নাগ ধর, বাসুদেব শর্মা, কল্যাণ ধর প্রমুখ। তাঁরা বলেন, রাসলীলা সনাতন ধর্মের এক ঐতিহ্য। ১৯২৬ সালে সিলেটে গিয়ে রাসনৃত্য দেখে মুগ্ধ হয়েছিলন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর মাধ্যমেই বিশ্বের বিভিন্ন নৃত্যকলার মধ্যে রাসলীলা সহ মণিপুরি নৃত্য অন্যতম স্থান দখল করে। একে ধরে রাখতেই কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে মণিপুরিরা রাসের আয়োজন করেন। বরাকের মালুগ্রাম, চেংকুড়ি, পাথারকান্দি প্রভৃতি অঞ্চলের সঙ্গে উজান অসমের বিভিন্ন স্থানেও রাসলীলা হয়।