NE UpdatesHappeningsBreaking News
রাষ্ট্রদ্রোহী ! হাজেলার বিরুদ্ধে সিআইডি-কে অভিযোগ জানালেন বর্তমান কো-অর্ডিনেটর
ওয়েটুবরাক, ২১ মে: প্রাক্তন এনআরসি কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলার বিরুদ্ধে সিআইডি-কে অভিযোগ জানালেন বর্তমান কো-অর্ডিনেটর হিতেশ দেবশর্মা। তাঁর নালিশ, হাজেলা ইচ্ছাকৃতভাবে এনআরসিতে ভুল তথ্য প্রদান করেছেন৷ অযোগ্য ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব প্রদান করেছেন৷ দফায় দফায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছেন৷ এমনকী হাজেলাকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলেও অভিযোগ করলেন দেবশর্মা। সিআইডিকে ৬ পাতার চিঠি লিখে তদন্ত দাবি করেছেন তিনি। বলেন, হাজেলার আমলে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত তথ্য যাচাই, নাম ঢোকানোর মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত ত্রুটি ঘটানো হয়েছে। হাজেলা ইচ্ছাকৃতভাবে এমন সফটঅয়্যার ব্যবহার করেন, যা বাধ্যতামূলক গুণমান পরীক্ষা এড়িয়ে গিয়েছে। ফলে অযোগ্য ব্যক্তিদের নামও এনআরসিতে ঢোকে। যে কাজ রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল এবং দেশের সুরক্ষার পক্ষে বিপজ্জনক।
তিনি জানান, তিনটি এনআরসি কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে তথ্য যাচাই করে দেখা যায়, ২৩৪৬টি নামের মধ্যে ৯৭৫ জন ব্যক্তির নামই অযোগ্য। কিন্তু তারা খসড়া তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। আরও অভিযোগ, চামারিয়া এলাকায় অসমের আদি অধিবাসী বা ওআই হিসেবে নাম থাকা ৬৪২৪৭ জনের মধ্যে ৩৩৭৯৪ জনের নাম-পরিচয় যাচাই করা হয়নি। তাদের ৭৪৪৬ জন আদি অধিবাসী ছিলেন না, পরে প্রমাণ হয়েছে। এমন ইচ্ছাকৃত ত্রুটি বিপজ্জনক ও দেশবিরোধী। এ ছাড়াও বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের নিষেধ সত্ত্বেও হাজেলা যাচাই হওয়া ২৪,৮৯,৭৪৫ জন আবেদনকারীর নাম রিভিউ ও রিভেরিফিকেশন করেন। সে সময় দাবি খারিজ হওয়া অনেকের নাম ফের তালিকায় ঢোকান৷ এমন বিভিন্ন অভিযোগ তুলে শর্মা হাজেলা ও তাঁর অধীনে কাজ করা অন্যান্য অফিসার, ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি, ১৬৬এ, ১৬৭, ১৮১, ২১৮, ৪২০, ৪৮৬ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ধারায় মামলা রুজু করে তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন। সকলের নামও চিঠির সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরেই প্রতীক হাজেলা গৃহরাজ্য মধ্যপ্রদেশে বদলি নিয়ে চলে যান। দীর্ঘদিন পদটি খালি থাকার পরে দায়িত্ব নেন হিতেশ দেবশর্মা। এর আগেই অবশ্য বিজেপি সরকার দাবি করে, ওই এনআরসির তালিকা শুদ্ধ নয়। ১০০ শতাংশ রি-ভেরেফিকেশন প্রয়োজন। এনআরসি সংক্রান্ত মামলার মূল আবেদনকারী অসম পাবলিক ওয়ার্কসও এই এনআরসির ১০০ শতাংশ রি-ভেরেফিকেশন দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে। প্রায় ১৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি এনআরসিকে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি আরজিআই। চূড়ান্ত তালিকা থেকে নাম বাদ পড়া ১৯ লক্ষাধিক মানুষকে নাম বাদের কারণ জানিয়ে চিঠি পাঠানোর কাজও শুরু হয়নি। এই পরিস্থিতিতে অসম সরকার, অসম পাবলিক ওয়ার্কস দাবি তোলে হাজেলার আমলে এনআরসির সফ্টঅয়্যার সংক্রান্ত কাজে অনেক গাফিলতি ছিল। প্রচুর টাকা নয়ছয়ের অভিযোগও ওঠে হাজেলার বিরুদ্ধে।