Barak UpdatesHappeningsBreaking News
রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সোসাইটির ত্রয়োদশ বর্ষপূর্তিতে আনুষ্ঠানিক মত বিনিময়
ওয়েটুবরাক, ১৩ জানুয়ারি : উত্তর পূর্ব, আসাম কিংবা বরাক উপত্যকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা যে বৃহত্তর চা-জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন স্কুলে পড়াশোনা করছে, তাদের সিংহভাগই তাদের নিজস্ব জাতির প্রমাণপত্র থেকে আজও বঞ্চিত। সংবিধানে নতুন সংশোধনী এনে এই বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পারিপার্শ্বিক নানা প্রতিকূলতা, বিশেষ করে সেই জনগোষ্ঠীর অভিভাবকদের অশিক্ষার কারণে তাদের ছেলেমেয়েদের ওবিসি প্রমাণপত্র তৈরি করা হয়ে ওঠে না। এবং তা সম্ভব না হওয়ায় সেইসব ছাত্রছাত্রীরা সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে এখনো বঞ্চিত হচ্ছে। রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সোসাইটির আওতাধীন বরাকের কুড়িটি অবৈতনিক সান্ধ্য শিক্ষাকেন্দ্রে পড়তে আসা প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের জাতির প্রমাণপত্র তৈরিতে সহায়তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েই আগামীর মাইল ফলক তৈরির পথে এক কদম এগোলো সোসাইটি। সংস্থার ত্রয়োদশ বর্ষপূর্তিতে শনিবার শিলচরের আশীর্বাদ ভবনে আয়োজিত এক আনুষ্ঠানিক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এই বিষয়টি বিশেষ করে উঠে আসে।
স্বামী বিবেকানন্দের প্রদর্শিত পথে দেশ তথা জাতির কাছে শিক্ষার আলোকবর্তিকা পৌঁছে দিতে সংকল্পবদ্ধ সংস্থাটির যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালে। তেরো বছরের এই সংক্ষিপ্ত যাত্রাপথে যাবতীয় চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আসতে সদা সর্বদা যারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাঁদের সামনে নিজেদের কাজের আংশিক আভাস তুলে ধরতে এবং একইসঙ্গে তাঁদের কৃতজ্ঞতা স্বীকারের অভিপ্রায়ে আজ এই বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান মূলতঃ হয়ে উঠেছিল মিলন মেলা।
সংস্থার সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্য, মুখ্য অতিথি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, লেখক, সংস্কৃতি কর্মী, সমাজকর্মী সুমিত্রা দত্ত, দুই সহ-সভাপতি ডাঃ অজিত ভট্টাচার্য ও শরদিন্দু দে’র হাত দিয়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও মাঙ্গলিক শ্লোকের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। একে একে বিভিন্ন জনের বক্তব্যে উঠে আসে সোসাইটির কর্মকাণ্ডের হালহকিকত। ডাঃ অজিত ভট্টাচার্য বলেন, শিক্ষা গ্রহণের উপযুক্ত সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সোসাইটি নিয়মিত স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করে আসছে। সুমিত্রা দত্ত রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দের আদর্শ অনুসরণ এবং বর্তমান সময়ে এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রাঞ্জল ভাষায় তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন। রামকৃষ্ণ ভাব প্রচার পরিষদের পীযূষ ভট্টাচার্য, রোটারি ক্লাব শিলচর সেন্ট্রালের প্রাক্তন সভাপতি শঙ্কর দেব, চন্দ্রনাথপুর এম ই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মৌসম দত্ত প্রমুখ প্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখেন।
এই বিশেষ দিনে সংস্থার ওয়েবসাইটেরও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এর মাধ্যমে এখন থেকে সংস্থার যাবতীয় কাজকর্ম দেখার ব্যবস্থার পাশাপাশি অনুদান প্রদানেরও সুবিধা রয়েছে।
https://www.rkvsilchar.org
পরে সংস্থার পক্ষ থেকে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে মোট বিরাশিটি ভালোবাসার স্মারক তুলে দেওয়া হয়েছে সোসাইটির পৃষ্ঠপোষকদের। এই অনুষ্ঠানে উনিশটি অবৈতনিক সান্ধ্য শিক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় সহায়তা করা শিক্ষক ও সোসাইটির তত্ত্বাবধানে বর্তমানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা ছাত্রীদের সঙ্গেও সোসাইটির সদস্য ও পৃষ্ঠপোষকদের মতবিনিময় হয়। ভবিষ্যতে নিজেদের কর্মকাণ্ড ব্যাপকতর করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন সংস্থার সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্য।