Barak UpdatesHappeningsBreaking News
মিহির কর পুরকায়স্থ প্রয়াত
ওয়েটুবরাক, ৬ ডিসেম্বর : যাঁর স্বপ্নের ওপর ভিত্তি করে কাছাড়ে ক্যানসার হাসপাতাল গড়ে উঠেছে, যাঁর দূরদর্শিতা ও নেতৃত্বে বরাক উপত্যকার বিশিষ্টজনেরা বেরিয়ে পড়েছিলেন চাঁদা সংগ্রহে, তিনি মিহির কর পুরকায়স্থ৷ মঙ্গলবার রাত ১টা ১০ মিনিটে তাঁর জীবনাবসান ঘটেছে৷ বয়স হয়েছিল ৮২ বছর৷ তিনি রেখে গিয়েছেন স্ত্রী, এক পুত্র, এক কন্যা সহ অসংখ্য আত্মীয়পরিজন ও শুভানুধ্যায়ী৷
নিজে উদ্যোগ নিয়ে ক্যানসার হাসপাতাল গড়ে তুললেও মিহিরবাবু নিজেই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন৷
কর্মজীবনে তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষেত্র প্রচার আধিকারিক বা ফিল্ড পাবলিসিটি অফিসার৷ ২০০১ সালে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি৷ তবে ব্যাপক কাজকর্মের দৌলতে এর আগেই তিনি জেলার প্রতিটি ক্লাব-সংগঠনে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন৷ সেখান থেকেই তাঁর আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে যে, ইচ্ছা করলে এই প্রত্যন্ত অঞ্চলেও একটা ক্যানসার হাসপাতাল গড়ে তোলা যায়৷ নন-মেডিক্যাল মানুষ হয়েও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় ঝাঁপিয়েছিলেন তিনি৷ ডা. চিন্ময় চৌধুরী সহ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে গঠন করেছিলেন কাছাড় ক্যানসার হাসপাতাল সোসাইটি৷ সেখান থেকেই জন্ম কাছাড় ক্যানসার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের৷ পরবর্তী সময়ে তিনি অবশ্য ক্যানসার হাসপাতাল ছাড়াও মেডিক্যাল সার্ভিসের অঙ্গ হয়ে উঠেছিলেন৷ ম্যানেজিং ডিরেক্টর নীলাভ মৃদুল মজুমদারের অনুরোধে সাউথ সিটি নার্সিং হোমের নিয়মিত দেখভাল করছিলেন৷ তাই অসুস্থ হয়ে তিনি বারবার সেখানেই ছুটে গিয়েছেন৷ শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাউথ সিটিতেই৷ সেখান থেকে তাঁর দেহ লিংক রোডের পাঁচ নম্বর লেনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়৷ পরে নিজের স্বপ্ন ও শ্রমে গড়ে তোলা দুই প্রতিষ্ঠান কাছাড় ক্যানসার হাসপাতাল ও সাউথ সিটি হাসপাতালে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয়৷ অশ্রুসজল নয়নে সবাই তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷
তাঁর প্রয়াণে কাছাড় ক্যানসার হাসপাতাল সোসাইটি, সাউথ সিটি হাসপাতাল সহ বরাক উপত্যকার সচেতন মহল শোকস্তব্ধ৷ তাঁর শেষযাত্রায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাছাড় ক্যানসার হাসপাতাল সোসাইটির চেয়ারম্যান ডা. সুজিতকুমার নন্দীপুরকায়স্থ, সচিব নীলমাধব দাস, ডা. অরুণ ভট্টাচার্য, সখারঞ্জন সাহা, নীহারেন্দু পুরকায়স্থ, রুদ্রনারায়ণ গুপ্ত, সাধন পুরকায়স্থ, শিবদাস দত্ত, দেবব্রত দাস, কল্যাণ চক্রবতী প্রমুখ৷