Barak UpdatesBreaking NewsFeature Story

মাতৃভাষা তুমি, লিখেছেন সুব্রত দাস

       সুব্রত দাস

২১ জুলাই: “ব্যান্ডেল আসুক পেঁদিয়ে নামাবো”! বিশাল চিৎকার চেঁচামেচি আর হৈ হুল্লোরে ট্রেনের কম্পার্টমেন্টে আমার পাড়ার ডাকসাইটে দিদির মতো সবচাইতে দারোগা মহিলার দিকে তাকিয়ে উপরের বার্থ থেকে খুব মিহি গলায় জিজ্ঞেস করলাম, ‘দিদি আমায় কিছু বলছেন’? কিন্তু প্রত্যুত্তরে একি পিলে চমকানো ভয়ংকর হুমকি! ওনার আত্মবিশ্বাসী অঙ্গীকার শুনে তাড়াতাড়ি উঠে বসলাম। মুহূর্তে বুঝলাম, হাওড়া স্টেশনের কুলি আমায় ঠকিয়ে টাকা নিয়ে লেডিজ কম্পার্টমেন্টে উঠিয়ে চলে গেছে! তড়িঘড়ি নিজেই নেমে দৌড়লাম ব্যান্ডেল আসার সাথে সাথে রেলপুলিশের কথা মনে করে, কারণ — শুনেছি, বেদম পেটায়! তারপর একটা সাধারণ কামড়ায় উঠে সহযাত্রীকে হাতজোড় করে কোনওমতে বসার একটু জায়গা নিলাম অনেক চোপা সহ্য করে। তখন আসামের করিমগঞ্জ কলেজে পড়ি। ভাগ্য অন্বেষণে এসে সেলস্ প্রোমোটার হয়ে কলকাতার ফুলবাগানে বাড়ি বাড়ি ওয়েফার্স বিস্কিট আর পাস্তা বিক্রি করি। বাবার পোস্টকার্ডে লেখা চিঠিতে পারিবারিক সার্বিক স্থিতি জেনে মন ছুটে যায়। আমার স্বল্পশিক্ষিত অত্যন্ত ভদ্র আর বিনয়ী বাবার সাধু বাংলায় লেখা চিঠি মনকে সবসময় নাড়া দিত। তাই দেরি না করে কামরূপ এক্সপ্রেসে চেপে বসেছিলাম কুলির সহায়তায়। তারপর ঐ বিপত্তি। ভাগ্য ভাল, পথে আর কোনো সমস্যা হয়নি।

গুয়াহাটি এসে টিটি মামার বদান্যতায় বরাক ভ্যালি এক্সপ্রেসে সোজা বদরপুর। তারপর ম্যাটাডোর ভ্যানে চেপে বরাকের প্রাকৃতিক দৃশ্যবদলের পাঠমালায় অনন্ত অবগাহন! কন্ডাকটরের বিকট আওয়াজে আচ্ছন্নতা কাটে। করিমগঞ্জ এসে গেছি। এবার বাসস্ট্যান্ড থেকে রিক্সা চেপে লংগাই রোড। রিক্সা ভাড়া দিয়েও দেখলাম হাতে দশ টাকার মতো বেঁচেছে। ভেতর থেকে ছোটবোন দেখে খুশিতে চিৎকার দিল, ‘মা দাদা এসেছে’! তারপর চা খেতে খেতে মা, বাবা, বোন আর দিদিদের সাথে আমার অবর্তমানে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনায় ঢুকে যাই। কথাপ্রসঙ্গে জানতে পারি যে সেদিন আসামের মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল কুমার মহন্ত এসেছেন করিমগঞ্জে এবং ডিএসএ ময়দানে তাঁর ভাষণ হচ্ছে। দিনটা ছিল ২১শে জুলাই ১৯৮৬ সাল।

মেজদির বন্ধু শিপ্রাদি আর চিত্রাদি এসেছিল সেদিন আমাদের বাড়ি। আমায় দেখে চিত্রাদি বললো, ‘কি রে কলকাতা গিয়ে নাকি চাকরি করছিস’? মৃদু হেসে বললাম, ‘চাকরি নয়, ফেরিওয়ালার কাজ’। ঠিক তক্ষুণি ভাইপো প্রদীপ এসে বললো, ‘এই জানিস আজ ভীষণ গোলমাল হয়েছে। প্রফুল্ল মহন্তর জনসভায় ফায়ারিংয়ে দুজন স্পট ডেড! সমস্ত শহরে মারপিট, হাঙ্গামা চলছে’! সাথে সাথে রাস্তায় বেরিয়ে দেখি, লঙ্গাই নদীর সেতু পার হয়ে গ্রাম থেকে শহরে আসা সমস্ত মানুষ কেউ জোড় পায়ে হেঁটে, সাইকেল এবং রিক্সা চালিয়ে আবার গ্রামের দিকে ফিরে যাচ্ছে। চোখে মুখে একরাশ আতংক, উত্তেজনা আর আশংকা। গলার সুরে সবারই প্রায় তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে যাবার ভয়ার্ত তাগিদ। চিত্রাদি, শিপ্রাদি ওরাও তাড়াহুড়ো করে বাড়ি ফিরে গেল। আমি খানিকক্ষণ ইতস্ততঃ করে ঘরে গিয়ে আবার পায়জামা খুলে প্যান্ট লাগিয়ে বেরোলাম সবার অলক্ষ্যে।

কিন্তু পঞ্চাশ মিটার না এগুতেই পাড়ার তিনজন বাল্যবন্ধুকে দৌড়ে আসতে দেখলাম। ওরা আমায় জোর করে ফিরিয়ে নিয়ে এলো। জানতে পারলাম যে, সরকারি ভাবে বাংলা ভাষার অধিকার খর্ব করার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে কালো ব্যাজ পড়ে কালো পতাকা দেখানো হয়েছিল বলে পুলিশের বন্দুক গর্জে উঠে। সাথে জগন্ময় দেব আর দিব্যেন্দু দাস বলে দুজন ঘটনাস্থলে ‘বীরগতি প্রাপ্ত’ হন। ছাত্ররা প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে। মুহূর্তে ডিএসএ মাঠ রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এবং অচিরেই সমস্ত শহরে অশান্তির দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। খণ্ড যুদ্ধে পুলিশও কোথাও কোথাও পাল্টা আক্রমণের শিকারের ফলে আহত হয়। সব মিলিয়ে শহরে পুলিশের ধরপাকড় আর মারধর চলছে।

খুব শীঘ্রই সামরিক বাহিনী ফ্ল্যাগমার্চ করবে, কার্ফু জারি করে। আমায় ওরা বললো যে, আমি এক কিলোমিটার হেঁটে গেলেই শ্যুট এ্যাট সাইট হয়ে যাবো। যারা গ্রামের দিকে দৌড়চ্ছিল তারাও হাঁপাতে হাঁপাতে আমাদের সবাইকে বাড়ি ঢুকে পড়ার জন্য বললো। আমরা সবাই বাড়ি ঢুকে পড়লাম। অনেকেই বলল যে, হয়তো আর আধঘন্টা পর করিমগঞ্জ পৌঁছলে আমার কী দশা হতো কে জানে ! দশমিনিটের মাথায় দেখলাম, পুলিসের গাড়ি সাইরেন বাজিয়ে টহল দিচ্ছে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হবার আগেই সমস্ত রাস্তা শুনশান। একটু পরেই কার্ফু বলবৎ করার ঘোষণা৷ সাথে গাড়়ি আর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সামরিক বাহিনীর কুচকাওয়াজ। সন্ধ্যা নামার আগেই সমস্ত শহরকে গ্রাস করলো অখণ্ড নিস্তব্ধতা, অজানা ভয় আর অব্যক্ত হতাশা। মাঝে মধ্যে পুলিশের সাইরেন আতংক ছড়িয়ে চলে যাচ্ছিল বার বার রাত একটু গভীর হতেই। সারারাত ধরে পাশের বাড়ি মারফত একে অন্যের কাছ থেকে খবর পাচার হচ্ছিল ঘটনার অগ্রগতি নিয়ে।

পরদিন সকাল হতেই এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ি দিয়ে পাচার হতে হতে খবর পেলাম যে, পুলিশের প্রচণ্ড ধরপাকড় চলছে। কেউ কেউ ভয়ে শহর ছেড়ে গ্রাম বা প্রতিবেশী রাজ্য কিংবা রাষ্ট্রে পালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মতো কলেজ স্টুডেন্ট দেখলেই ধরে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মেয়েরাও বাদ যাচ্ছে না। সবাই ঠিক করলাম, রাতে রেড হলে আমরা নটীখালের পাড়ে জঙ্গলে গিয়ে লুকোবো। কখনো পুলিশের গাড়ির আওয়াজ পেলেই নটীখালের পাড়ে আশ্রয় নিয়েছি আমরা বাড়ির যুবকেরা। পরদিনও খুব থমথমে পরিস্থিতি আর উত্তেজনায় কাটল। সেদিন পুলিশের আনাগোনা এতোটাই বেড়ে গিয়েছিল যে নিরাপত্তার ভয় আরো বেশি গ্রাস করেছিল সবাইকে।

বৈষ্ণব হবার সুবাদে কৃষ্ণ ভজনা আমার বাবার দৈনন্দিন কর্মের অন্তর্গত ছিল। বিপদভঞ্জন মধুসূদনের নামে অগাধ আস্থা রাখা মানুষটি প্রায়ই বলতেন, ‘রাখে কৃষ্ণ মারে কে’? তাসত্ত্বেও, দ্বিতীয় রাতটা বেশ টেনশনে কাটল। তার পরের দিন আরো বেশকিছু পুলিশি অত্যাচারের গল্প শুনতে পেলাম। পরদিন সামান্য একটু সময় কার্ফু শিথিল হবার পর পাড়ার দোকান থেকে সবার চাল-ডাল কেনার দৌড় শুরু হলো। ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকায় আড়ালে টুক করে ফাঁকে বেরিয়ে তৎকালীন করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক মিঃ মোহান্তের নেতৃত্বে বিভিন্ন ভয়াবহ পুলিশি অভিযানের কাহিনী জানছিলাম একে অন্যের কাছ থেকে। ওই সময় সরকারি বা বেসরকারি কোনো সংবাদ মাধ্যম আমাদের কথা প্রচার করেনি। মনে হচ্ছিল যেন এমন একটা দ্বীপের অধিবাসী আমরা যা সভ্য জগত থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন।

এই রকম তিন/চারদিন অমানবিক মানসিক যন্ত্রণায় কাটানোর পর প্রথমবারের জন্য কলকাতার ‘আজকাল’ সংবাদপত্রে আমাদের দুর্দশার কথা প্রকাশিত হল। যিনি লিখেছিলেন, তিনি করিমগঞ্জ শহরের বিশিষ্ট সমাজসেবিকা এবং শিক্ষিকা লোপামুদ্রা চৌধুরী। ওনার এই সাহসী এবং সময়োচিত পদক্ষেপে আমাদের দুর্দশার কথা পুরো বরাক উপত্যকা সহ পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর সমস্ত মিডিয়া এবং কেন্দ্র সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়। তারপরেও টুকরো টুকরো বিভিন্ন লাঞ্ছনার ঘটনা কানে আসছিল। তাই একটু কার্ফু শিথিল হতেই অনেকের পরামর্শে শিলচর রিজিওন্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (বর্তমান এনআইটি) বন্ধু রামেন্দু শর্মার সাথে চলে গিয়ে হস্টেলে রাত কাটিয়েছিলাম। তারপর বাড়ির কথা মনে হতেই আবার ফিরে আসি দুদিনের মাথায়। তার দিনকয়েক পর একটা সময় ক্রমশ সব স্বাভাবিক হয়ে আসে। পরবর্তীকালে কর্মসূত্রে অসমিয়া সহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষের সাথে পরিচয় এবং সখ্যতার ক্ষেত্রে মনে হয়েছে যে সব সাধারণ মানুষই আসলে সমন্বয় এবং শান্তিকামী, তাদের হৃদয়ও সহজে আর্দ্র হয়। তাদের মনও পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং ভালবাসায় আপ্লুত থাকে।

২১শে জুলাইর মর্মান্তিক ঘটনা ছিল আসামের বরাক উপত্যকার বাংলা ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিক ফলশ্রুতি, আসাম সরকারের অসমিয়া ভাষাকে রাজ্যের একমাত্র দাপ্তরিক ভাষা করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, আত্মাহুতি দিয়ে যা শুরু হয়েছিল ১৯৬১ সালের ১৯ মে। আসামের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিমলা প্রসাদ চালিহা ১০ অক্টোবর, ১৯৬০ সালে অসমিয়া ভাষাকে আসামের একমাত্র সরকারী ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেবার প্রস্তাব উত্থাপন করেন। উত্তর করিমগঞ্জ-এর বিধায়ক রণেন্দ্রমোহন দাস এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করা সত্বেও সেটি বিধানসভায় পাশ হয়। ১৯৬১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে কাছাড় গণ সংগ্রাম পরিষদ নামক সংগঠনটির জন্ম হয়। অসম সরকারের এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ১৪ এপ্রিল তারিখে সংঘবদ্ধভাবে শিলচর, করিমগঞ্জ আর হাইলাকান্দির লোকেরা সংকল্প দিবস পালন করেন।

পরিষদের মুখ্যাধিকারী রথীন্দ্রনাথ সেন ঘোষণা করেন যে, যদি ১৩ এপ্রিল, ১৯৬১ সালের ভিতর বাংলাকে সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করা না হয়, ১৯ মে তে তাঁরা ব্যাপক হরতাল করবেন। ১৮ মে পুলিশ আন্দোলনের তিনজন নেতা নলিনীকান্ত দাস, রথীন্দ্রনাথ সেন ও বিধুভূষণ চৌধুরী (সাপ্তাহিক যুগশক্তির সম্পাদক)-কে করিমগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে। ১৯ মে শিলচর, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দিতে হরতাল ও পিকেটিং আরম্ভ হয়। করিমগঞ্জে আন্দোলনকারীরা সরকারি কার্যালয়, রেলওয়ে স্টেশন, কোর্ট ইত্যাদিতে পিকেটিং করেন। শিলচরেও তারা রেলওয়ে স্টেশনে সত্যাগ্রহ করছিলেন। সকালে হরতাল শান্তিপূর্ণ ভাবে অতিবাহিত হলেও বিকেলে হঠাৎ স্টেশনে পুলিশ এসে উপস্থিত হয়। স্টেশনের সুরক্ষায় থাকা প্যারামিলিটারি বাহিনী আন্দোলনকারীদেরকে বন্দুক ও লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে। এরপর সাত মিনিটের মাথায় তাঁরা ১৭ রাউন্ড গুলি চালায়। ১২ জন লোক গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে ন’জন সেদিনই শহিদ হয়েছিলেন; দু’জন সেনানী পরে হুতাত্মার সম্মান পান। একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে অনেকদিন বেঁচেছিলেন। ২০ মে সমস্ত দেশের সাথে রাজ্যও ভাষাসেনানীদের মৃতদেহ নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল প্রত্যক্ষ করে। এই ঘটনার পর অসম সরকার বরাক উপত্যকায় বাংলাকে সরকারি ভাষা হিসাবে ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। যে সব অমর প্রাণ সেদিন শহিদ হন, তাঁরা হলেন,- কানাইলাল নিয়োগী, চণ্ডীচরণ সূত্রধর, হিতেশ বিশ্বাস, সত্যেন্দ্রকুমার দেব, কুমুদরঞ্জন দাস, সুনীল সরকার, তরণী দেবনাথ, শচীন্দ্র চন্দ্র পাল, বীরেন্দ্র সূত্রধর, সুকোমল পুরকায়স্থ এবং কমলা ভট্টাচার্য।

বেশ কয়েক বছর পর, করিমগঞ্জে বিজন চক্রবর্তী নামে একজন মানুষ বাংলা ভাষার জন্য ১৯৭২ সালের ১৭ আগস্ট পুলিশ ফায়ারিংয়ে নিহত হন, যদিও এই ঘটনায় অনেকেই মতান্তর প্রকাশ করেন। তারপর ১৯৮৬ সালের ২১ জুলাই যে দুজন হুতাত্মা করিমগঞ্জে শহিদ হন তারা হলেন – জগন্ময় দেব ও দিব্যেন্দু দাস। এছাড়া ১৯৯৬ সালের ১৬ মার্চ মণিপুরি ভাষার জন্য আত্মবলিদান করেন সুদেষ্ণা সিংহ বলে একজন বীরাঙ্গনা। বরাক উপত্যকা এইজন্য ভাষা সেনানীর অঞ্চল বলে পরিচিত। পৃথিবীতে মাতৃভাষার জন্য আর কোথাও এত সংখ্যক মানুষ আজ পর্যন্ত শহিদ হননি, এমনকি ২১ ফেব্রুয়ারির দিন বাংলাদেশেও না। যদিও আজ অভিভাবকেরা বাংলা না জানার জন্য তাদের সন্তানদের জন্য বিনীতভাবে গর্বিত বোধ করেন, যেভাবে আরবি শব্দে বাংলা ভাষা তার নিজস্বতা হারাচ্ছে, যেভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রামধনু রংধনু হয়ে যাচ্ছে, তাতে প্রশ্ন জাগে – এই ভাষা নিজেই ভ্রাতৃঘাতী বিরূপতায় নিহত হবে না তো একদিন? এই অস্বস্তিকর শংকা নিয়েও কামনা,  বরাক উপত্যকা সহ বীরগতিপ্রাপ্ত পৃথিবীর সমস্ত ভাষা সেনানীদের অবদান সতত অম্লান, অক্ষয় আর উজ্জ্বল থাকুক আমাদের স্মৃতিতে ও শ্রদ্ধায়। ভ্রাতৃত্ব এবং সমন্বয় যেন হয় আমাদের মূল মন্ত্র; কোন ভাষার জন্যই যেন কোথাও কোন মা, ভাই, বোনের আর আত্মবলিদানের প্রয়োজন না হয়, আজকের সুমহান দিনে এই মৃত্যুঞ্জয় স্বপ্ন হোক আমাদের অঙ্গীকার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker