NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News
ভরা বৃষ্টির মরসুমে পাহাড় লাইন সচল রাখতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাল অবিসা
ওয়েটুবরাক, ২ মে : বর্ষার শুরুতেই বিধ্বস্ত বরাক উপত্যকার যোগাযোগের একমাত্র “লাইফ লাইন” লামডিং-শিলচর রেল যোগাযোগ।
মাত্র কয়েক বৎসর আগে প্রায় ৬০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এই ব্রডগেজ রেল প্রকল্প। এর এই পরিণতিতে ক্ষোভ ব্যক্ত করে অল বরাক ইয়ুথ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (অবিসা)-র মুখ্য আহ্বায়ক বাহারুল ইসলাম বড়ভূইয়া বলেন, শিলান্যাস পর্বের শুরু থেকেই এই রেল প্রকল্পকে গ্রাস করে নিতে সচেষ্ট ছিল একটা অশুভ শক্তি। বরাক উপত্যকার ভিতরে গড়ে ওঠা অশুভ শক্তির ইশারায় প্রায় নীরব সমর্থক ছিলেন তদানীন্তন বরাকের রাজনৈতিক নেতৃত্ব। আর অন্য দিকে উত্তর কাছাড়ে গড়ে উঠেছিল নানা জঙ্গি সংগঠন। চাঁদাবাজি -অপহরণ-নানাবিধ হুমকির ফলে ভারতবর্ষের উন্নত মানের ঠিকাদার গোষ্ঠী প্রাণ রক্ষায় কাজ ফেলে রেখে নির্মাণ কাজে জড়িত লোকজন, নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। জঙ্গিপনা ও অশুভ শক্তির চক্রান্তে পাকাপোক্ত ভাবে হিমঘরে স্থান করে দেওয়া হয়েছিলো বরাক তথা পার্শ্ববর্তী রাজ্যের জনগণের স্বপ্নের ব্রডগেজ রেল প্রকল্পটিকে।
তাঁর দাবি, পরবর্তীতে অল বরাক ইয়ুথ স্টুডেণ্টস অ্যাসোসিয়েশন ও বরাক উপত্যকার আপামর জনসাধারণের ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলে প্রকল্পটিকে হিমঘর থেকে টেনেটুনে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের উপর লাগাতার চাপ তৈরি করে৷ ২০০৭সাল থেকে ওয়া্চডগের ভূমিকা পালন করে আসছে অবিসা। ২০১৪ সালে দিল্লিতে রাজনৈতিক পালাবদলের হাত ধরে এই প্রকল্পের রংও বদলাতে শুরু করে। সিভিল ওয়ার্ক সম্পূর্ণ না করে রাজনৈতিক স্বার্থে ঘোষিত হয় “”মেগা ব্লক””। সুদর্শন নায়েকের তদন্ত রিপোর্টকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে মালিগাঁওস্থিত রেল (নির্মাণ) বিভাগের আধিকারিকরা রাজনৈতিক মদতে জোরজবরদস্তি জোড়াতালি দিয়ে প্রকল্পটিকে বাস্তবায়ন দেখিয়ে যাত্রীরেল চালিয়ে দেয়।
বাহারুলের কথায়, ফলস্বরূপ অতীতের ন্যায় এবারও বৃষ্টির শুরুতেই ধস নামে৷ এর জন্য দায়ী নিম্নমানের কাজ এবং আনকোরা ঠিকাদারি সিস্টেম। পুরাতন মিটারগেজ রেলপথের পাহাড় সংলগ্ন বিভিন্ন স্থানে পাহাড় থেকে বৃষ্টির জল নেমে রেললাইনের উপরে যাতে না পড়ে বা রেললাইনের যাতে কোনও ক্ষতি না হয় সেই লক্ষ্যে পাহাড়ের উপর থেকে রেল লাইনের পাশ পর্যন্ত নির্মিত ছিল”পাথুরে নালা”৷ সেই নালা দিয়ে বৃষ্টির জল পাহাড়ের উপর গড়িয়ে রেললাইনের পাশ দিয়ে পাহাড়ের একদম নীচে খালে গিয়ে পড়তো।
ব্রিটিশ কারিগরি প্রযুক্তি ব্যবস্থায় নির্মিত আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের এই পাহাড় লাইন নব্বই দশকের আগে ধসপ্রবণ ছিলই না। অথচ প্রায় ৬০০০ কোটি টাকার প্রকল্প ব্রডগেজ নির্মাণের পরে প্রায় প্রতিবছরই বর্ষার মরসুমে বৃষ্টি হতেই শুরু হয়ে যায় ধসপড়া,আজ এখানে তো কাল সেখানে। এ প্রসঙ্গে অবিসার মুখ্য আহ্বায়কের মন্তব্য, খেলা একটাই শুধু স্থান ভিন্ন ভিন্ন।
বরাক উপত্যকা সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্যের জনগণের যোগাযোগের একমাত্র লাইফলাইন এই রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা কে সচল রাখতে অবিসার দাবি, (১) রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ভরা বৃষ্টির মরসুমে সচল রাখতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বর্তমান ধসবিধ্বস্ত হারাঙ্গাজাও-জাটিঙ্গা লামপুর মধ্যবর্তী ১১০/৭ কিলোমিটার এলাকা শীঘ্র সংস্কার করা । (২) ধসপ্রবণ এলাকায় রেল নির্মাণ বিভাগের কারিগরি কর্মী-ঠিকাদার সহ উন্নত যন্ত্রপাতি নিয়ে চব্বিশ ঘণ্টা পাহারার ব্যবস্থা করা। এবং (৩) নির্মাণ সময়ে সংঘটিত হওয়া দুর্নীতির উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা হোক।