Barak UpdatesHappeningsFeature Story
বাড়ির পুজোতেও করোনার প্রভাব
ন্যায় পঞ্চানন বাড়িতে ঘটপুজো, সন্তোষমোহনের বাড়ির পূজা দিল্লিতে
২২ অক্টোবরঃ শুধু কি আর সর্বজনীন পুজোয় কোভিডের ছায়া! কোভিড প্রভাব ফেলেছে বাড়িঘরের পুজোতেও। ১৭৯০ থেকে ১৮১০ সালের মধ্যে কোনও একসময় দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে বড়খলার দেবলস্কর বাড়িতে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডই এঁদের পুজোর বিশেষত্ব। প্রহর মিলিয়ে মায়ের গান হয় তিনদিন ধরে৷ হয় বিলুপ্তপ্রায় টপ্পাগানও৷ এ বার বলতে গেলে শুধুই দুর্গাবন্দনা। পরিবারের প্রবীণ সদস্য সঞ্জীব দেবলস্কর জানান, আগমনী থেকে ধরে সবই গাওয়া হবে হয়তো, কিন্তু দর্শক ছাড়া যেমনটা হয় আর কি!
করোনার দরুন প্রতিমা নয়, ঘটপুজো হচ্ছে শিলচর শহরের ন্যায় পঞ্চানন বাড়িতে। ১১০ বছরে কখনও পূজা বন্ধ হয়েছিল, এমনটা কেউ মনে করতে পারছেন না। প্রতিমা বাড়ি থেকে কাঁধে করে বিসর্জনঘাটে নিয়ে যাওয়ার রীতি ধরে রেখেছিলেন তাঁরা। এ বার যাবেন শুধুই ঘট কাঁধে।
পূজা হচ্ছে না শিলচরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষমোহন দেবের বাড়িতে। প্রবীণতম সদস্যা বীথিকা দেব জানান, বিয়ের পর প্রথম বছর থেকেই দেখছেন, বাড়িতে পুজো হয়। শাশুড়ির কাছে শুনেছেন, বাংলাদেশের বাড়িতেও ঘটা করে পূজা হতো। এ বার কোভিডের আগে থেকেই বীথিকাদেবী শিলচরের বাইরে। এই সময়ে আর বিমানে চেপে শিলচরে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে পারেননি। তাই পুজো স্থানান্তরিত হয়েছে দিল্লির বাড়িতে। আগেও একবার দিল্লিতে পুজো করেছিলেন তাঁরা। সে বার রাজীব গান্ধী গিয়েছিলেন প্রসাদ নিতে, স্মৃতি আউড়ালেন সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেস সভাপতি, সন্তোষ-তনয়া সুস্মিতা দেব।
পুজোর তিনদিন দুপুরে ভুরিভোজের আয়োজন করতেন শিলচরের ব্যবসায়ী, ডিএসএ সভাপতি বাবুল হোড়। কাকে কোনদিন নিমন্ত্রণ করা হবে, এর তালিকা তৈরির কাজ চলত দশদিন ধরে। নিজে সবাইকে নিমন্ত্রণ করতেন। এ বার ফাঁকা লাগছে বাবুলবাবুর। পুজো হচ্ছে বটে, কিন্তু বড় কাজটাই নেই যে! নিমন্ত্রণ নেই করিমগঞ্জের বিশ্বাসবাড়ির পুজোতেও। ১৭০ বছরের পুরনো পূজা। বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, দিল্লি, যে যেখানে আছেন, এই সময়ে বাড়ি আসতেনই। এ বার বরাক উপত্যকার বাইরের কেউ নেই, বললেন বাড়ির সদস্য সুমন বিশ্বাস৷
তবে ২৬০ বছরের পুরনো মালুগ্রাম মহাজন বাড়ির পুজোয় করোনার জন্য বিশেষ কোনও ফারাক নেই বলেই জানালেন পরিবারের সদস্যরা। প্রবাল দেবের কথায়, আত্মীয়-স্বজন সবাই এসে গিয়েছেন। পাড়া-প্রতিবেশী যারা আসবেন, অন্য বছরের মত এ বারও প্রসাদ দেওয়া হবে। ফল-ফসারির বদলে বোঁদে, ওইটুকুই পরিবর্তন। তবে কোভিড প্রটোকল মেনে স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকবে বাড়িতে।