NE UpdatesHappeningsFeature Story
বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার দাবি জানাল বাংলা সাহিত্য সভা
ওয়ে টু বরাক, ১৫ জুলাই : শনিবার গুয়াহাটিতে “বাংলা সাহিত্য সভা, অসম”-এর দুদিনের রাজ্য কার্যনির্বাহক সভা শেষ হয়েছে। গুয়াহাটির বর্ষাপাড়ার সাউথ পয়েন্ট স্কুলে ওই কার্যসূচির আয়োজন করা হয়। শুক্রবার প্রদীপ প্রজ্বলন করে কার্যনির্বাহক সভার উদ্বোধন করেন অসমের ভাষিক সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শিলাদিত্য দেব এবং বাংলা সাহিত্য সভা অসম”-এর সভাপতি খগেনচন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক ড. প্রশান্ত চক্রবর্তী, ডিব্রুগড় পুরসভার পুরপতি ডাঃ সৈকত পাত্র, সাউথ পয়েন্ট স্কুলের অধ্যক্ষ কৃষ্ণাঙ্গন চন্দ সহ বিশিষ্টজনেরা।
এদিন “বাংলা সাহিত্য সভা,অসম”-এর দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শনিবার সকাল থেকে দিনব্যাপী টানা কার্যসূচির মাধ্যমে একাধিক পর্বে অনুষ্ঠিত হয় রাজ্য কার্যনির্বাহক সভা। ওই সভায় আগামী দুই বছরের কার্যসূচি আলোচনা করা হয় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম হল সাহিত্য-সংস্কৃতিমূলক কর্মসূচি ছাড়াও একটি স্থান বা গ্রাম দত্তক নেওয়া। গ্রামোন্নয়নের নানা কার্যসূচি পালন করা হবে এতে।
প্রথম পর্যায়ে বরাক ও ব্রহ্মপুত্রের একটি গ্রামকে গ্রহণ করা হবে। সেখানে স্বাস্থ্যশিবির, সাংস্কৃতিক কর্মসূচি, শিক্ষাশিবির ইত্যাদির আয়োজন করা হবে। বিভিন্ন অঞ্চলের বা শাখার বিশেষ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীকে অন্যান্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করানোর প্রস্তাবও বৈঠকে গ্রহণ করা হয়েছে।। তার মধ্যে রয়েছে নৃত্য, সংগীত, আবৃত্তি কর্মশালা, গোয়ালপাড়িয়া সহ বিভিন্ন লোকসংগীতের কর্মশালা। সেই সঙ্গে হবে ধামাইল এবং ওঝা গানের কর্মশালা।থাকবে অনুবাদ কর্মসূচি, বাংলা বানান কর্মশালা।
এ দিনের সভায় বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদার দাবিও প্রবলভাবে উত্থাপিত হয়। ওই দাবির প্রস্তাবক ও বিশ্লেষক ছিলেন শিলচর শাখার সভাপতি সমরবিজয় চক্রবর্তী। পাশাপাশি বলা হয়, পূর্বী মাগধী-জাত তিনটি ভাষার মধ্যে ওড়িয়াকে ইতিমধ্যেই ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। “বাংলা সাহিত্য সভা, অসম” বাংলা ও অসমিয়া ভাষাকেও ধ্রুপদী ভাষা রূপে মর্যাদার দাবি জানায়।
এ-ছাড়াও প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় বিভিন্ন শাখাতে যুব-ছাত্র সভা গঠন করা হবে।
এদিনের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে আগামী দু বছরের জন্য রাজ্য অ্যাডহক কার্যনির্বাহক সমিতি গঠন করা হয়। এতে কাজের সুবিধার্থে রাজ্যকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়। সেগুলো হল~ উজান অসম, মধ্য অসম ও গুয়াহাটি, নিম্ন অসম এবং বরাক উপত্যকা। নতুন সমিতিতে বিশেষ আমন্ত্রিত উপদেষ্টা রূপে আছেন পদ্মশ্রী অজয় দত্ত, মুখ্য উপদেষ্টা রূপে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অমলেন্দু চক্রবর্তী, বরাক থেকে ডাঃ কুমারকান্তি দাস (লক্ষণ দাস),আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর নিরঞ্জন রায়, শিলচরের ডাঃ বিজয়লক্ষ্মী দাস চৌধুরী, শিক্ষাব্রতী ও চিন্তাবিদ দেব্রব্রত রায়চৌধুরী, সংস্কৃতিকর্মী বাচিকশিল্পী অজিতকুমার সেন, গুয়াহাটির সাউথ পয়েন্ট স্কুলের অধ্যক্ষ কৃষ্ণাঞ্জন চন্দ, ডিব্রুগড় পুরসভার পুরপতি ডাঃ সৈকত পাত্র, উজানের বিশিষ্ট চা-উদ্যোগী মৌসুমি বাগচি।
সভার মুখ্য পৃষ্ঠপোষক রূপে থাকছেন যুগশঙ্খ পত্রিকার কর্ণধার বিজয়কৃষ্ণ নাথ এবং অসমের ভাষিক সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শিলাদিত্য দেব আর তরুণ চা-উদ্যোগী তুহিন কাশ্যপ দেব প্রমুখ। কমিটিতে বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছেন সভাপতি খগেনচন্দ্র দাস, সহ-সভাপতি সুব্রত দাস এবং রবিশংকর দত্ত সাধারণ সম্পাদক ড. প্রশান্ত চক্রবর্তী, সহকারী সাধারণ সম্পাদক সন্দীপন দত্ত পুরকায়স্থ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুশান্ত কর (ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা) এবং অসিত চক্রবর্তী (বরাক উপত্যকা)। কোষাধ্যক্ষ শিশির সেনগুপ্ত। সাংস্কৃতিক সম্পাদক দেবাশিস ভট্টাচার্য (ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা), বিক্রমজিৎ বাউলিয়া (বরাক উপত্যকা), শীলা দেব দে সরকার (উজান অসম) এবং শ্যামল ঘোষ (নিম্ন অসম)। রাজ্য প্রচার সচিব হিসেবে থাকছেন : বরাক থেকে সুমন দাস ও ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা থেকে পীযূষকান্তি সাহা।
কার্যকরী সমিতির সদস্য/সদস্যা হলেন শর্মিষ্ঠা দাস দেব পুরকায়স্থ, তুষারকান্তি সাহা, সজল পাল, অসীমা সিংহ চৌধুরী, দীপক ভদ্র, অমল চক্রবর্তী, কিশোর দে এবং চন্দ্রা চক্রবর্তী। তথ্য ও জনসংযোগ সম্পাদক কুণালজিৎ দেব এবং অনন্যা মজুমদার। বিদ্যায়তনিক সমিতিতে থাকছেন ড. বরুণজ্যোতি চৌধুরী(আসাম বিশ্ববিদ্যালয়), ড. বরুণকুমার সাহা,(গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়)। সঙ্গে ড. মাম্পি গুপ্ত, ড. সঞ্জয়চন্দ্র দাস, ড. রাজীবকুমার সাহা এবং নিবেদিতা চক্রবর্তী। আইনি উপদেষ্টা সমিতিতে আছেন হরিব্রত চন্দ, অগ্নিজিৎ ভট্টাচার্য, অনির্বাণ দেব ও শ্রেয়া নাথ।