Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বাঁধ মেরামতিতে ব্যর্থতা ঢাকতেই মন্ত্রী-সাংসদ কাদা ছোঁড়াছুড়ি, অভিমত শহর কংগ্রেসের
ওয়েটুবরাক, ২৮ ফেব্রুয়ারি : সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে একে অন্যের প্রতি কাদা ছোড়াছুড়ি করছেন জলসম্পদ মন্ত্রী এবং শিলচরের সাংসদ। এই মন্তব্য করে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে উভয়ের পদত্যাগ দাবি করেছে শিলচর শহর কংগ্রেস।
সভাপতি অতনু ভট্টাচার্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গতবছরের ভয়াবহ বন্যার দগদগে ক্ষত এখনও শুকায়নি। বন্যায় ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র ইত্যাদি খুইয়ে এখনও অনেকে সর্বস্বান্ত অবস্থায় দিনযাপন করছেন। দীর্ঘ আট মাস পেরিয়ে গেলেও কাজের ছিঁটেফোটাও দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। সোনাবাড়িঘাট থেকে তারাপুর শিববাড়ি পর্যন্ত নদীবাঁধের কাজ হবে বলে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বাস্তবে জনগণকে অশ্বডিম্ব উপহার দিলেন।অতনু ভট্টাচার্য বলেন, রবিবার শিলচরের সাংসদ ডা. রাজদীপ রায় প্রেসমিট করে বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণে যতটুকু কাজ হওয়ার ছিল, তাহা হয়নি, অপরদিকে সোমবার আসামের জলসম্পদ মন্ত্রী পীযূষ হাজরিকার বক্তব্য, গত কয়েকমাসে শিলচরের সাংসদ এ ব্যাপ্যারে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি৷
শিলচর শহর কংগ্রেসের প্রশ্ন, কে সত্য বা আর কে মিথ্যা বলছেন ? জনগণের মূল সমস্যা নিয়ে তাঁরা কতটা উদাসীন, তাঁদের বক্তব্যেই পরিস্কার বলে উল্লেখ করেন অতনু৷
তিনি বলেন, মার্চ মাস শুরু হয়ে গেছে। আর কিছুদিন পরেই ঝড়বৃষ্টি শুরু হবে। কিন্তু বাঁধ স্লুইসগেট এবং শহরের নালা নর্দমার অবস্থা যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়েছে। গতবারের অভিজ্ঞতায় শহরবাসী ভয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন। ভীত সন্ত্রস্ত শহরবাসীকে সাংসদ রাজদীপ রায় জানালেন, কাজ আশানুরূপ হয়নি। তাঁর বক্তব্যের পাল্টা আবার জলসম্পদ মন্ত্রী হাজারিকা ইঙ্গিতে বোঝালেন, এখানকার সাংসদ অকর্মণ্য। তিনি কিছুই করেননি । কাজ শুরু করার দাবি জানিয়ে কোনও চিঠিপত্র কাউকে লেখেননি, মুখেও বলেননি।
অতনুর বক্তব্য, সাংসদ তো অবশ্যই অকর্মণ্য, তাঁর কাজ বলতে কিছুদিন পর পর মহাসড়ক ভ্রমণ। প্রায় চার বছর ধরে কিছুদিন পর পর মহাসড়কে দলবল নিয়ে প্রমোদ ভ্রমণে যাচ্ছেন, আর কাজ সম্পন্ন হওয়ার তারিখের উপর তারিখ দিচ্ছেন। কিন্তু মহাসড়কের কাজ যে এখনও বিশ বাঁও জলে, সেটা সবাই জানেন। ঠিক যে ভাবে বন্যার সময় ঘরের দোতলায় বসে থাকলেন আর মানুষ সীমাহীন যন্ত্রণার শিকার হলেন৷ এতে তাঁর কিছু যায়-আসেনি। বন্যার পরে ন্যূনতম উদ্যোগটাও নিলেন না৷ অন্যদিকে জলসম্পদ মন্ত্রী হাজারিকা গত বন্যার সময় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সফরে এসে সবকিছুই দেখে গেলেন। তিনি নিজে এই বিভাগের মন্ত্রী। বন্যার পর বাঁধ , স্লুইসগেট, নালা ইত্যাদি দ্রুত গতিতে সারাই করানো তাঁর স্বাভাবিক দায়িত্ব। এখানে এত কাঁদা ছোড়াছুড়ি, একে অন্যকে দোষারোপ করা, বিভিন্ন অজুহাত দেখানো মানে মন্ত্রী হিসেবে নিজের দায়িত্বটুকু পালন করতে যে ব্যর্থ হয়েছেন, তা ঢেকে রাখা৷ অতনু বলেন, তাঁরা দায়িত্ব পালন করবেনই বা কী করে। অন্য রাজ্যের ভোটের প্রচারে, ক্রিকেট খেলায়, উচ্ছেদ অভিযানে , কখনও বা মিয়া মিউজিয়ামের অছিলায় হিন্দু মুসলিম বিভাজন ঘটানো ইত্যাদিতেই সারাক্ষণ মগ্ন হয়ে আছেন। নিজ দায়িত্ব এবং জনগণের দুঃখ দুর্দশার কথা , উন্নয়নের কথা ভাববার সময়ই কোথায় তাঁদের! “লাজলজ্জা হীন এবং চরম পর্যায়ের অকর্মণ্য” বলে অভিযুক্ত করে এই সাংসদ এবং মন্ত্রী দুজনেরই পদত্যাগ দাবি করে শিলচর শহর কংগ্রেস কমিটি। দায়িত্বপূর্ণ একটা পদ নিয়ে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে সেই পদ আঁকড়ে থাকার কোনও যুক্তি নেই বলে শহর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অভিমত ব্যক্ত করেন অতনু ভট্টাচার্য।