Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বরাকে কমবয়সিদের স্ট্রোক উদ্বেগজনক, বললেন ডা. রত্নদীপ
ওয়েটুবরাক, ১৪ ফেব্রুয়ারি : বরাক উপত্যকার মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা খুব কম৷ জীবনযাত্রায় অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে এখানে খুব ফারাক৷ মাঝরাতে খাবে, গভীর রাতে ঘুমোবে, অনেক বেলা পর্যন্ত বিছানায় কাটাবে৷ আবার খাদ্যতালিকাতেও দেখা যায় আপত্তির জায়গাতেই বেশি পছন্দ৷ তিন বেলা ভাত চাই, সঙ্গে তেল-মশলায় জমজমাট হওয়া চাই৷ ফাস্টফুডের চাহিদাও দিনদিন বাড়ছে৷ এ সবই স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের বড় কারণ৷
কথাগুলি বলছিলেন বিশিষ্ট নিউরোসার্জন রত্নদীপ বসু৷ তাঁর কথায়, খাদ্যাভ্যাস ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের জন্য এই অঞ্চলে কমবয়সীদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বাড়ছে৷ অন্যত্র পঞ্চাশের কাছাকাছি এলে স্ট্রোকের আশঙ্কা থাকে৷ বরাক উপত্যকায় এখন ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সিরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন৷
শিলচর উকিলপট্টিতে নিজের নতুন চেম্বারে বসে ডা. রত্নদীপ বলেন, ধূমপান, মদ্যপান, দেরিতে খাওয়া-ঘুম, ভোরে উঠতে না পারা সবকটিই বদভ্যাস৷ এগুলি পরিহার করতে হবে৷ ডায়াবেটিক রোগীদের এই সব ব্যাপারে চূড়ান্ত সতর্কতা জরুরি৷ সেইসঙ্গে সতর্ক থাকতে হবে, ডায়াবেটিকে যাতে আক্রান্ত হতে না হয়৷
দিল্লিতে এইমস, সফদরজং হাসপাতাল এবং পরে মেদান্তে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করার পর ১৪ মাস আগে জন্মভূমির টানে শিলচরে চলে আসেন রত্নদীপ বসু৷ এতদিন জীবনজ্যোতি হাসপাতালেই রোগী দেখছিলেন৷ এখন উকিলপট্টিতে নিজের বাড়িতেও চেম্বার খুলেছেন৷ সেখানে বসেই তিনি বললেন, কমবয়সিদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণটা ভালো নয়৷ এদের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে৷ বিষয়টি উদ্বেগজনক৷ তাঁর হিসাব, দুর্ঘটনায় মৃত্যুর শোকে বরাকে একসময় নিউরো-সার্জনের প্রয়োজনীয়তা প্রচণ্ড অনুভূত হয়েছিল৷ কিন্তু এখন দুর্ঘটনায় প্রাণহানিকে ছাপিয়ে গিয়েছে কমবয়সিদের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মৃত্যুর পরিসংখ্যান৷
রত্নদীপ অনেকটা উৎকণ্ঠা নিয়েই বলেন, আমাদের মানুষরা রুটিন চেকআপের ব্যাপারটাই বোঝেন না, বুঝতে চান না স্বাস্থ্যবিমার গুরুত্বও৷ ফলে যখন শারীরিক সমস্যা তীব্রতর হয়, তখনই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে যান৷ ততক্ষণে অনেকটাই দেরি হয়ে যায়৷ এ ছাড়া, আধুনিক চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যয় সংকুলান করতে পারেন না অনেকে৷ অথচ এই সব ব্যাপারে সচেতন মানুষ শুরুতেই স্বাস্থ্যবিমা করেন৷ তাতে বিমা কোম্পানিই নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে নিয়মিত চেকআপ করায়, সমস্যা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যেতে পরামর্শ দেয়৷ সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, ব্যয়বহুল চিকিৎসাতেও অর্থ জোগায় এরাই৷