Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বরাকের এসটি হিলস-দের বনবাসী জনজাতি হিসাবে স্বীকৃতি প্রদানের দাবি
ওয়েটুবরাক, ১৯ আগস্ট : সমগ্র আসামের সঙ্গে বরাক উপত্যকায় বসবাসরত এসটি (হিলস) সম্প্রদায়ভুক্ত লোকদেরও ফরেস্ট রাইটস অ্যাক্ট ২০০৬ এর অধীনে ‘বনবাসী তফশিলি জনজাতি’ হিসাবে স্বীকৃতি প্রদানের জোরালো দাবি জানিয়েছে অল আসাম ট্রাইবেল সংঘের কাছাড় জেলা কমিটি । শনিবার সংস্থার জেলা সাধারণ সম্পাদক গ্যালিম গ্যাংমাইর নেতৃত্বে তফশিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের ভিলেজ হেডম্যানরা উধারবন্দের বিধায়ক মিহির কান্তি সোমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার আহ্বান জানান।
সংস্থার পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক গ্যালিম গ্যাংমাই বিধায়ককে বলেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বন অধিকার আইন ২০০৬ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত এক বৈঠক গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখে কাছাড়ের জেলাশাসকের কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকের মাইন্যুটসের ৩ নং অনুচ্ছেদে বরাক উপত্যকায় বসবাসরত তফশিলি জনজাতি যেমন রংমাই নাগা, মার, রিয়াং, খাসি প্রভৃতি সম্প্রদায়কে ‘অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী বনবাসী শ্রেণির মর্যাদা’ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গ্যালিম বাবু জানান, তফশিলি জনজাতিভুক্ত রংমাই নাগা, মার, রিয়াং, খাসি প্রভৃতি আদিবাসী জনজাতিরা আদিকাল থেকেই বরাক উপত্যকায় বসবাস করে আসছেন৷ এসটি (হিলস) হিসাবে অর্থনৈতিক, শিক্ষাগত ও কর্মসংস্থানের সুবিধাও পাচ্ছেন তারা। তিনি জানান, বরাক উপত্যকার বসবাসরত এসটি (হিলস) সম্প্রদায়ভুক্ত লোকরা ১৩ ডিসেম্বর ২০০৫ এর আগে বনভূমি দখল করে স্থায়ী ভাবে বসবাস করে আসছেন। তাই ওই বৈঠকের মাইন্যুটসের তৃতীয় অনুচ্ছেদে যে ‘অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী বনবাসী শ্রেণি’র মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, তা সংশোধন, পর্যালোচনা ও প্রত্যাহার করে অন্যান্য ঐতিহ্যবাহীর বদলে তাদেরকে বনবাসী তফশিলি জনজাতির মর্যাদা দিতে হবে।
এদিন বিধায়ক মিহির কান্তি সোমকে ট্রাইবেল সংঘের সাধারণ সম্পাদক গ্যালিম গ্যাংমাই বলেন, যেহেতু বরাক উপত্যকার মাটিতে আদিকাল থেকেই উপরোল্লিখিত সম্প্রদায়ভুক্ত লোকরা বসবাস করে আসছেন৷ কাজেই তাদের বনবাসী তফশিলি জনজাতিরই স্বীকৃতি প্ৰদান করা হোক। এই ব্যাপারে বিধায়ক যেন আসাম সরকারের বিভাগীয় মন্ত্রী রণোজ গেগু সহ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মন্ত্রী পেগুর উদ্দেশে লেখা স্মারকপত্রে ট্রাইবাল সংঘের নেতারা বলেন, ওই মাইন্যুটসের দরুন সরকারি বনভূমিতে নিজেদের অধিকার আদায় সংক্রান্ত কাজে গেলে তাদের ‘বনবাসী জনজাতি’র বদলে ‘অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী বনবাসী’ শ্রেণির মর্যাদাভুক্ত বলে তাদের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হচ্ছে৷ এ ছাড়া, এই অধিকার সংক্রান্ত আবেদনের সময়সীমা কাছাড় জেলায় ৩০ জুন পর্যন্ত বলা হয়েছিল৷ কিন্তু ট্রাইবাল সংঘ কর্তাদের দাবি, রাজ্য সরকার এই ধরনের কোনও সময় বেঁধে দেয়নি৷ তাই কাছাড়ে সময়সীমা প্রত্যাহারেরও দাবি জানান তাঁরা৷
এদিকে বিধায়ক মিহির কান্তি সোম প্রতিনিধিদলকে বলেন, যদিও বিষয়টি অতি স্পর্শকাতর, তথাপি তিনি এ ব্যাপারে জনজাতি উন্নয়ন মন্ত্রী রণোজ পেগু এবং মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মার দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, এইসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় একমাত্র ক্যাবিনেট বৈঠকের মাধ্যমেই সমাধান হতে পারে, ক্যাবিনেট বৈঠকে পাশ হলেই পরবর্তী প্রক্রিয়ায় যাবে। তিনি বলেন, উধারবন্দ সমষ্টির ট্রাইবেল সম্প্রদায়ভুক্ত লোকদের উন্নতিকল্পে তিনি প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন, এব্যাপারেও তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। উল্লেখ্য এদিন গ্যালিম গ্যাংমাইর সাথে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লক্ষীপুর জেলা ট্রাইবেল সংঘের সহ-সভাপতি সাধন রংমাই, লালংছড়া খাসি পুঞ্জির হেডম্যান টবিয়াস টারিয়াং, কুম্ভার হেডম্যান লালরেমথাং মার, লাইলংছড়া মার পুঞ্জির হেডম্যান টুয়াকা মার প্রমুখ।