Barak UpdatesHappeningsBreaking News
প্রবীণ শিক্ষাবিদ মানস কান্তি দাসের মৃত্যুতে শোক
ওয়েটুবরাক, ২৬ জুলাই : প্রবীণ শিক্ষাবিদ, সমাজসেবী মানসকান্তি দাসের মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়া মাত্র সোমবার তাঁর বাসভবনে বহু সংস্থা সংগঠনের প্রতিনিধিরা ভিড় জমান। রোটারি ক্লাবের পক্ষ থেকে ক্লাবের সদস্য-সদস্যরা তাঁদের প্রথম সভাপতিকে শেষশ্রদ্ধা জানান। নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতি, দ্য গ্রিনস, বরাক ভ্যালি ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরামের হাইলাকান্দি শাখা, ক্লাব সাগ্নিক, রামকৃষ্ণ সেবাসমিতি, সিআরপিসি সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শেষযাত্রায় সামিল হন প্রাক্তন অধ্যক্ষ বিজয়কুমার ধর, সমাজসেবী রঞ্জিত ঘোষ, রামকৃষ্ণ সেবা সমিতির সভাপতি প্রেমাংশু শেখর পাল, সমাজসেবী সুশীল পাল, প্রাক্তন শিক্ষা আধিকারিক সুনীল শর্মা, প্রবীণ চিত্রশিল্পী নীহারেন্দু চৌধুরী, রোটারি ক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি সমীরণ পাল, প্রীতিকণা পাল, অসিত কুমার পাল, হরকিশোর চন্দ, শংকর চৌধুরী, কানাইয়া সারদা ছাড়াও প্রাক্তন সম্পাদক বিজয়িনী ভট্টাচার্য, সদস্য সন্দীপন ধর, কবি কল্লোল চৌধুরী, দ্বিজেন্দ্র কান্তি দে, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের যুব প্রমুখ অরুণাভ ঘোষ, শোভরাজ দাস, প্রাক্তন পুর সদস্য সুব্রত ভট্টাচার্য সহ আরও অনেকে। দ্য গ্রিনসে’র সভাপতি ক্ষিতিশ পাল, কার্যকরী সভাপতি শতানন্দ ভট্টাচার্য, মাধবী শর্মা মরদেহে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে মানসবাবুর একমাত্র পুত্র মনোজ কুমার দাস বর্তমানে সিকিম সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস কমিউনিকেশন বিভাগে অধ্যাপনা করেন।একমাত্র কন্যা পাপিয়া ঘোষ শিলংনিবাসী। মানসবাবু ১৯৮৯ সালে নাগাল্যান্ডের টিচার ট্রেনিং কলেজ থেকে অধ্যক্ষ হিসেবে অবসর গ্রহণ করে হাইলাকান্দিতে পাকাপাকি ভাবে বসবাস শুরু করেন। বলতে গেলে, তিনি অবসরের পর থেকেই সামাজিক বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়েন।
২০০৪ সালে তাঁর নেতৃত্বে হাইলাকান্দি রোটারি ক্লাবের প্রথম বোর্ড গঠন হয়। এর আগে তিনি ১৯৯৫ সাল থেকে অসম-মিজোরাম সংযোগকারী পথকে জাতীয় সড়ক হিসেবে ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলেন। ধলেশ্বরী -ভৈরবী ডিমান্ড কমিটির তিনি ছিলেন সভাপতি। তিনি ধলেশ্বরী -ভৈরবী জাতীয় সড়কের উপর আলোকপাত করে একটি বইও লিখেছেন।
এছাড়াও তিনি বহু সংগঠনের সভাপতি সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আসন অলঙ্কৃত করেন। পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা দ্য গ্রিনস-এর সভাপতি ছাড়াও নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতি, অসম হার্টকেয়ার সোসাইটি, হাইলাকান্দি শ্রীকিষণ সারদা কলেজের পরিচালনা সমিতির সদস্য, সুশান্ত শেখর বিদ্যামন্দির পরিচালনা সমিতির সভাপতি, রবীন্দ্র মেলা কমিটির উপদেষ্টা, নতুনপাড়া দুর্গাপূজা কমিটি সহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন।
মানস বাবুর মৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায়, প্রাক্তন বিধায়ক রাহুল রায়, প্রবীণ সাংবাদিক সন্তোষ মজুমদার, জেলা বণিক সংস্থার সভাপতি ভগবান দাস সারদা, আসাম হার্ট কেয়ার সোসাইটির রাজ্য সভাপতি ডা. নির্মলকান্তি ভট্টাচার্য, বরাক ভ্যালি শাখার সচিব ডা. আহমেদ হোসেন চৌধুরী, পিনাক কান্তি চক্রবর্তী সহ আরও অনেকেই দুঃখ প্রকাশ করেন।
প্রবীণ শিক্ষাবিদ, সমাজসেবী মানস কান্তি দাস সোমবার দুপুর সোয়া দুইটা নাগাদ হাইলাকান্দি শহরের কালীবাড়ি রোডের নিজস্ব বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত শুক্রবার রাতে আকস্মিক ভাবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে তাঁকে শিলচরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু শারীরিক অবস্থার ক্রমাবনতি হতে থাকলে তাঁর পরিজনরা বাড়িতে নিয়ে যান৷ সেখানেই সোমবার দুপুরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । মৃত্যু কালে বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। রেখে গেছেন এক পুত্র ও এক কন্যা, পুত্রবধূ, জামাতা, এক ভাই, নাতি-নাতনি সহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন।