NE UpdatesBarak UpdatesHappenings
পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি : দড়ি বেঁধে স্কুটার চালিয়ে বিক্ষোভ দেখাল বিডিএফ
ওয়েটুবরাক, ৯ জুলাই : গত একবছর ধরে ক্রমাগত বাড়তে বাড়তে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বর্তমানে আকাশ ছুঁয়েছে। এর প্রতিবাদে আজ শিলচর এন এস এভিনিউয়ের একটি পেট্রোল পাম্প-এর সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
ফ্রন্টের সদস্যরা একটি স্কুটারে মালা পরিয়ে তাকে দড়ি দিয়ে টেনে নিয়ে যান। এই অভিনব প্রতীকি কর্মসূচির মধ্যেই পোস্টার হাতে উপস্থিত সদস্যরা শ্লোগানে শ্লোগানে এলাকা মুখর করে তোলেন। পরে এই ব্যাপারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিডিএফ নেতা প্রদীপ দত্তরায় বলেন, অন্য রাজ্যের সরকার পেট্রোল ডিজেলের উপর কর কমালেও আসাম সরকার এখনও বর্ধিত হারে এই কর আদায় করছে। তাই আসামে পেট্রোপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। সরকারকে অবিলম্বে পেট্রোপন্যের উপর কর কমাতে হবে বলে দাবি জানান।
আরেক আহ্বায়ক জহর তারন বলেন, ২৮ জুনের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, বাংলাদেশ , নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কার নিরিখে ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম সর্বাধিক। এসবের মধ্যে সর্বোচ্চ দাম নেপালে যা ৭৯.৩৯ টাকা৷ আর এখানে ভারতে গড় দাম ১০০.৫৪ টাকা। তিনি আরো বলেন, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ২০১৪ তে ছিল ১০৮ ডলার যখন এই দেশে পেট্রোলের দাম ছিল ৭৯.২৬ টাকা। বর্তমানে অশোধিত তেলের দাম ৭৪.৫৩ টাকা যেখানে পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি একশ টাকা ছাড়িয়েছে।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, পেট্রোসামগ্রীর এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী যেসব সাফাই দিয়েছেন তার সবটাই ছেঁদো যুক্তি৷ জয়দীপ বাবু বলেন, এসমস্ত যুক্তির কোনটাই ধোপে টেকে না।
মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক বলেন, আসলে এসবই নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে সরকারি কোষাগারে টান পড়েছে বলেই সরকার পেট্রোপণ্যের লাগামছাড়া দাম বাড়িয়ে সেটাকে পুষিয়ে নিতে চাইছেন। জয়দীপ বাবু আরও বলেন যে বর্তমানে পেট্রোপণ্যের ওপর কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মিলিয়ে প্রায় ৬০ শতাংশ ট্যাক্স আদায় করছেন যার ৩৭ শতাংশ কেন্দ্রীয় এক্সাইজ ডিউটি ও ২৩ শতাংশ রাজ্যিক কর হিসেবে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে লরিমালিক দের সংগঠন পরিবহন শুল্ক ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছেন। ফলে এমন চললে অচিরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হবে, এবং মূদ্রাস্ফীতিও অবধারিত। এবং সেক্ষেত্রে কোভিড জনিত পরিস্থিতির ফলে দেশের অর্থনীতির যে অবনয়ন হয়েছে তাঁর থেকে ঘুরে দাড়ানোও অসম্ভব হয়ে ওঠবে।
বিডিএফ সদস্যরা এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে পেট্রোল ও ডিজেলের উপর রাজ্যের কর কমানোর জন্য দাবি জানান ।তারা পেট্রোপন্যকে জিএসটির অধীনে নিয়ে আসার দাবিও জানান।একই সাথে এই সমস্যার সুরাহা না হলে ভবিষ্যতে তারা আরো বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি নেবেন বলে ঘোষণা করেন।
অন্যান্যদের মধ্যে এদিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পার্থ দাস, হৃষীকেশ দে, সঞ্জয় পুরকায়স্থ , যুবফ্রন্টের পক্ষ থেকে কল্পার্ণব গুপ্ত, ইকবাল নাসিম চৌধুরী, দেবায়ন দেব, অমিত চৌধুরী, কুনাল নাগ প্রমুখ৷