NE UpdatesBarak UpdatesIndia & World UpdatesHappeningsBreaking NewsFeature Story

পৃথক বরাক পরীক্ষানিরীক্ষার বিষয় নয় : সুস্মিতা

দ্বিতীয় তথা শেষ কিস্তি

১৬ আগস্ট থেকে তিনিই বরাক উপত্যকায় রাজনৈতিক চর্চার কেন্দ্রে। আর ঠিক ১৬ তারিখের কথা বললে, শুধু বরাক উপত্যকা কেন, জাতীয় রাজনীতিতে সেদিন একটিই বিষয়, মহিলা কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। একে মহিলা কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি, দ্বিতীয়ত তিনি তৃণমূল কংগ্রেস যোগ দিয়েছেন। তাই প্রশ্নের শেষ নেই। ঝুলি ভরে প্রশ্ন নিয়েই ওয়েটুবরাক কথা বলে প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেবের সঙ্গে। আজ প্রকাশিত হল এর দ্বিতীয় তথা শেষ কিস্তি।

ওয়েটুবরাকঃ এখন আপনি আর কংগ্রেসে নেই। ফলে ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশে বাধা রইল না। বরাক পৃথকীকরণের দাবি সম্পর্কে আপনার কী বক্তব্য?

সুস্মিতাঃ এ সত্য কথা, কংগ্রেসে থাকার সময় মেপে কথা বলতে হতো। আজ নিজের ইচ্ছায় সাংবাদিক সম্মেলন করেছি। আগে হলে সে জন্য অনুমতি নিতে হতো। বরাক পৃথকীকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, একইসঙ্গে স্পর্শকাতরও। একে সাধারণ ভাবে নিয়ে একটা কিছু বলে দেওয়া ঠিক হবে না।

ওয়েটুবরাকঃ একে কি তৃণমূল নেতৃত্বের নজরে নেবেন?

সুস্মিতাঃ আগেই বলেছি, একে নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবতে হবে। এ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষার সুযোগ নেই। ফলে আগে থেকে ভেবেচিন্তে কথা বলতে হবে। একবার এই ইস্যু নিয়ে মাঠে নামলে একেবারে আটঘাট বেঁধে নামতে হবে। ফিরে আসা চলবে না। ফেল করলে সব শেষ। সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে। তাই উপযুক্ত সময়েই স্ট্রং ব্লুপ্রিন্ট রচনা করতে হবে।

ওয়েটুবরাকঃ তৃণমূল কংগ্রেস কি আপনাকে ত্রিপুরার প্রধান মুখ করতে চাইছে?

সুস্মিতাঃ অন্য রাজ্য থেকে গিয়ে প্রধান মুখ হওয়া সম্ভব কিনা আমি জানি না। মমতা ব্যানার্জি এত ইম্যাচুর নন যে, আমায় ওখানে নিয়ে ফেলবেন। তবে এটা ঠিক, দিদি আমাকে ত্রিপুরা যেতে বলেছেন। সেখানে গিয়ে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন। আমি বলেছি, যেখানে দেবেন, সেখানেই যাব।

ওয়েটুবরাকঃ কিন্তু ওখানে যে মারামারি চলছে। তৃণমূল নেতারা গেলেই হামলার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ।

সুস্মিতাঃ তাই বলে পিছিয়ে আসব নাকি। যে কোনও ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

ওয়েটুবরাকঃ ত্রিপুরায় যাবেন, বোঝা গেল। আর কোনও পরিকল্পনা?

সু্স্মিতা : আসলে দিদি আমাকে বলে দিয়েছেন, আসামে গিয়ে দলের বুথ কমিটি তৈরি করো। এটা এখন শুরু করব প্রথমে।

ওয়েটুবরাকঃ আর অভিষেক কী বললেন?

সুস্মিতাঃ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা হল। তাঁর কথা কী বলব ! অফিসে ঢুকেই মন ভরে যায়। পুরো করপোরেট সংস্কৃতি। চারদিকে কম্পিউটারের সামনে বসে সবাই কাজ করছেন। পুরো বিষয়টিই অন্যরকম। কংগ্রেসের সঙ্গে বড় ফারাক। ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে কংগ্রেস বড় ম্যাড়ম্যাড়ে। বিজেপিও সে জায়গায় তাদের নিয়মিত উপস্থিতির প্রমাণ দেয়।

ওয়েটুবরাকঃ তৃণমূলে যাওয়ায় সিএএ নিয়ে নিজের অবস্থানে কোনও ফারাক?

সুস্মিতাঃ সিএএ নিয়ে আমার বক্তব্য শুরু থেকে একেবারে পরিষ্কার। আমায় একটা জিনিস বলুন তো, এনআরসি থেকে যারা বাদ পড়লেন, সেই ১৯ লক্ষ মানুষকে কি দেশছাড়া করা সম্ভব? মানবাধিকার মেনে চলা একটা রাষ্ট্র কি তা করতে পারবে? পারবে না৷ আমি তাই বলেছিলাম, এই সমস্যার একটা সংবিধানসম্মত সমাধান করুন৷ এনআরসির ক্ষেত্রেও আমি বলেছি, ২০১৪-র ভোটার তালিকা ধরে সবাইকে নাগরিকত্ব দেওয়া হোক। এখনও বলছি, ১৯ লক্ষ এনআরসি-ছুটের সবাইকে নাগরিকত্ব দেওয়া হোক। কারণ এনআরসি-ছুটদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবে, এটা যেহেতু সম্ভব নয়, এর সুষ্ঠু সমাধান দরকার। আর একটা প্রশ্ন, এখন সিএএ কোথায়? আসলে আসাম নয়, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের দিকে চোখ রেখে এনআরসি তৈরি করা হচ্ছিল৷ পশ্চিমবঙ্গে হেরে এখন সিএএ নিয়ে সবাই নীরব৷

ওয়েটুবরাকঃ : কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ তো আপনার প্রীতিভাজন ছিলেন, এখন তিনিই আপনাকে ‘কী ধরনের ফাইটার’ বলে কটাক্ষ করছেন৷

সুস্মিতা : ফাইটার বলেই আমি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছি৷ কমলাক্ষকে বলব, তুমি শুধু তোমার বর্তমানটা দেখো৷ তোমার ভবিষ্যৎ আমি দেখব৷ কংগ্রেস নেতাদের সুরক্ষার জন্যই আমি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছি৷

ওয়েটুবরাকঃ : আসামে কি তৃণমূল কংগ্রেসকে দাঁড় করাতে পারবেন? বিশেষ করে, বাঙালি জাতীয়তাবাদী হিসেবে পরিচিত দলকে অসমিয়ারা কি আপন করে নেবেন?

সুস্মিতা : তৃণমূল কংগ্রেস সর্বভারতীয় দল৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় নেত্রী৷ এখানে অসমিয়া-বাঙালি এ সব কথা আসে না৷ দিদি কি কখনও কোথাও অসমিয়াবিদ্বেষী কথা বলেছেন? আমিও কি কখনও অসমিয়াদের বিরুদ্ধে কোনও বিরূপ মন্তব্য করেছি?

ওয়েটুবরাকঃ : এর পরও তো তৃণমূল বাঙালির দল!

সুস্মিতা : একটা কথা বলি, এখন রাজ্য রাজনীতিতে কে কার সঙ্গে আছেন, বলা মুশকিল৷ এআইইউডিএফ-ও হিমন্ত বিশ্ব শর্মার প্রশংসা করে৷ কংগ্রেসের জাকির শিকদারকেও সেদিন দেখলাম, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ৷ অখিল গগৈও ব্যতিক্রম নন৷ তাই রাজ্যের মানুষের স্বার্থেই একটা শক্তিশালী বিরোধী দলের দরকার হয়ে পড়েছে৷ আগামীতে তা দিতে সক্ষম হবে একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস৷ তাই আমি তৃণমূল কংগ্রেসেই গিয়েছি৷

Also Read: কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে কেঁদেই ফেললেন সুস্মিতা দেব

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker