Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ধৈর্যের বাঁধ ভাঙলে দায়িত্ব রাজ্য সরকারের উপর বর্তাবে, সতর্ক করে দিল প্রবীণ নাগরিক মঞ্চ
ওয়েটুবরাক, ১ জুলাই : শিলচর শহরের সমস্ত রাস্তার ভগ্ন ও গর্ত বহুল অংশ, বিশেষতঃ সদরঘাট থেকে শিলচর মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত বিপর্যস্ত সড়ক, অবিলম্বে মেরামতের দাবিতে অনেক দিন থেকে জেলা প্রশাসনের নিকট আবেদন নিবেদন, চিঠিপত্র-স্মারকলিপি পেশ, সভা-অভিবর্তন, মিছিল, পথসভা বিভিন্ন সংগঠন করা সত্ত্বেও জেলা প্রশাসন নিশ্চুপ, অন্ধ ও বধিরের ভূমিকা পালন করায় জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ‘রাস্তা রোখো’ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন। ক্ষোভ প্রকাশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ এর মুখ্য উদ্দেশ্য। অন্যান্য নাগরিক যন্ত্রণা, যেমন বৃষ্টির জল নিষ্কাশন, নিয়মিত পরিশোধিত জল সরবরাহ, আবর্জনা পরিষ্কার, নালা নর্দমা খাল নিয়মিত খোদাই জনগণের দাবির অন্তর্ভুক্ত।
আইন মেনে উপযুক্ত নোটিশ দিয়েই গত শনিবার বেলা ১১টা থেকে এক ঘণ্টা নারী পুরুষ, বৃদ্ধ- বৃদ্ধা, নির্বিশেষে শিলচরের জনগণ দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের মূর্তির পাশে রাস্তা অবরোধ করে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পূর্ব ঘোষিত এক ঘণ্টা পূর্ণ করার পর সমবেত নাগরিক এই মুখ্য পথটির অবরোধের সমাপ্তি ঘোষণা করেন৷
সক্রিয়পন্থী প্রবীণ নাগরিক মঞ্চের সভাপতি নীহারেন্দু পুরকায়স্থ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দিলীপকুমার দে জানান, কোনও আধিকারিক কিংবা পুলিশের অনুরোধে নয়। বরং জেলাশাসক কিংবা উচ্চ স্তরের কোনও আধিকারিক উপস্থিত হয়ে শহরবাসীর ক্ষোভের কথা না শোনার জন্য তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ মঞ্চের কর্মকর্তারা জানান, কিছু অধঃস্তন কর্মী দুপুর ১২টায়, যখন কর্মসূচি গুটিয়ে ফেলা হচ্ছে তখন, গিয়ে মুখ দেখান ও শোনেন। তাঁদের কোনও প্রতিশ্রুতি বা আশ্বাস দেবার ক্ষমতাও নেই।
তাঁরা বলেন, “জেলা প্রশাসনের নিশ্চেষ্ট মনোভাব, শিলচরবাসী প্রবীণ নাগরিকদের আবেদন নিবেদনের প্রতি অনীহা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। সম্ভবতঃ তাঁরা চান উচ্ছৃঙ্খল জনতার হাতে আন্দোলনের রাশ চলে যাক, শিলচরে গণ্ডগোল হোক, আইন ব্যবস্থার অবনতি হোক, আর তা হলে ওদের পোয়া বারো।’ তাঁরা কোনও ফাঁদে পা না দেবার জন্য ছাত্র-যুবকদের প্রতি আহ্বান জানান।
নীহারেন্দুবাবু, দিলীপবাবু সতর্কতার সুরে জানিয়ে দেন, “এত বঞ্চনা ও ষড়যন্ত্রের মধ্যেও শিলচরের নাগরিকবৃন্দ অত্যন্ত ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছেন, যা সারা ভারতে বিরল। বাঁধ ভাঙলে দায়িত্ব রাজ্য সরকারের উপর বর্তাবে।”
দিসপুরে স্মারক পত্র-চিঠি পাঠিয়ে আবেদন নিবেদন করে সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে তাঁদের মনে নতুন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, “দিসপুর থেকে সড়কপথের মেরামতের জন্য পি ডব্লু ডি বিল্ডিং ডিভিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাহলে কি সড়ক ডিভিশন উঠে গেছে?”
আবার পি- ডব্লু-ডি ( সড়ক) কর্মকর্তারা বলেন, এইসব সড়ক ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি করবে। কিন্তু এন-এইচ-আই-ডি-সি-এল এক সংক্ষিপ্ত ই-মেল পাঠিয়ে মঞ্চকে জানিয়েছে যে, এই সড়কগুলো তাদের আওতায় নয়। তাই তাঁরা জেলা কমিশনারকে অনুরোধ করেন, তিনি যেন খোঁজ নিয়ে জনগণকে অবহিত করেন যে, সড়ক গুলো কার অধীনে রয়েছে।
তাঁরা জেলা কমিশনারকে বলেন, “আমরা শান্তিপ্রিয় বৃদ্ধ নাগরিক। আপনার ও সরকারের উচ্চতর প্রশাসনিক কর্তাদের অবগতির জন্য এবং শিলচর শহরের সবকয়টি ভাঙা রাস্তা মেরামত, বৃষ্টির জল নিষ্কাশন, নিয়মিত জল সরবরাহ, নালা খাল ও আবর্জনা পরিষ্কারের ব্যবস্থার জন্য সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি।” পাশাপাশি এ কথাও শুনিয়ে রাখেন, “আমরা সরে গেলে যে অবস্থা সৃষ্টি হবে তাতে আন্দোলনের গতি ভিন্ন পথে যাবে, এখানকার প্রশাসন সম্ভবত সেটাই আহ্বান জানাচ্ছে, কোনও দুরভিসন্ধি চরিতার্থ করার জন্য।”