Barak UpdatesHappeningsBreaking News

দ্বি-দিবসীয় কিষান মেলার উদ্বোধন, কৃষক সম্মান নিধির অর্থ প্রদান

ওয়েটুবরাক, ২৪ ফেব্রুয়ারি: সোমবার, কৃষি বিভাগ ও কৃষি প্রযুক্তি ব্যাবস্থাপনা সংস্থা আয়োজিত দুই দিবসীয় কিষান মেলার উদ্বোধন করেন কাছাড়ের জেলাশাসক মৃদুল যাদব। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক যুবরাজ বরঠাকুর, কাছাড় জেলা বিজেপি সভাপতি রূপম সাহা, প্রাক্তন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অমিতাভ রাই, শ্রীভূমি আকবরপুর কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক ও প্রধান ড. পুলকাভ চৌধুরী, কাছাড়ের অরুণাচল কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক ও প্রধান ড. হিমাংশু মিশ্র, অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা ড. অজিতা তিওয়ারি, জেলা এজিপি সম্পাদক মনিতন সিংহ, কৃষক মোর্চার মানব সিংহ ও মৃণাল দত্ত, জেলা পশুপালন, মৎস্য আধিকারিক, জেলা কৃষি আধিকারিক ড. এ. আর. আহমেদ সহ অন্যান্য কৃষি বিভাগীয় আধিকারিক এবং কর্মীরা। এদিন মেলায় কৃষি বিভাগের প্রাক্তন কর্মীরাও অংশ নেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিষাণ মেলার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে স্বাগত ভাষণ রাখেন জেলা কৃষি আধিকারিক ড. এ আর আহমেদ। জেলাশাসক বলেন, কিষাণ মেলার মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি বিভাগ, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র, বিশ্ববিদ্যালয়, মৎস্য, পশুপালন ইত্যাদি বিভাগ একসঙ্গে এসে কৃষি সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের স্বার্থে আলোচনা করে।

পি এম কিষানের ১৯তম কিস্তি এ দিন প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। এবার কাছাড় জেলায় ৭০ হাজারেরও অধিক সুবিধাভোগী এই প্রকল্পের অধীনে অর্থ লাভ করছেন। প্রাক্তন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অমিতাভ রাই বলেন, কৃষকদের কল্যাণার্থে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প কার্যসূচি হাতে নিয়েছে। বর্ধিত নূন্যতম সমর্থন মূল্য, কৃষক সম্মান নিধি প্রদান সহ দ্রুত সরকারি প্রকল্প রূপায়ণের মাধ্যমে কৃষির উপরে উৎসাহ ও উন্নত কৃষিজাত সামগ্রীর উৎপাদন বহুলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলা বিজেপি সভাপতি রূপম সাহা বলেন, কৃষক এবং কৃষিকর্ম সমাজের সম্মানীয় তথা উচ্চস্তরীয় কর্ম, সরকার নূন্যতম সমর্থন মূল্য বৃদ্ধি করে, কৃষক সম্মান নিধি রূপায়ণ দ্বারা কৃষকদের প্রাপ্য সম্মান প্রদান করেছে। এই মেলা মারফৎ কৃষকরা একইমঞ্চে এসে নতুন নতুন প্রযুক্তি সহ প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে বিশদ ভাবে আলোচনা করতে পারেন, সাথে সৃষ্টি হয় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে সমন্বয়। অতিরিক্ত জেলাশাসক বরঠাকুর বলেন, কৃষকদের স্বার্থে সরকার নানা কার্যসূচি হাতে নিয়েছে এবং কৃষি বিভাগ সেই সমূহের সুচারু রূপায়ণের নিরন্তর প্রয়াস চালাচ্ছে, তাই কৃষকদের এগিয়ে এসে প্রকল্প মারফত লাভবান হতে তিনি আহ্বান রাখেন। শিলচরের ক্লাব রোডস্তিত ক্ষুদিরাম মূর্তি সংলগ্ন ডাকবাংলো প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হওয়া এই মেলায় বিভিন্ন সরকারি বিভাগ, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র, কৃষি ব্যবসায়ী সংস্থা, কৃষি খামার, কৃষক উৎপাদনকারী কোম্পানি, কৃষি উদ্যোক্তা, কৃষি সামগ্রী-প্রযুক্তি ও মেশিন বিক্রেতারা অংশ নিয়েছেন। সোমবার “মেরে পলিসি মেরে হাত” কার্যসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করেন মেলার অতিথিরা, সাথে বিতরণ করা হয় মৃত্তিকা পরীক্ষা কার্ড। ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারী দুদিনই থাকবে কৃষক-বিজ্ঞানী মতবিনিময় সভা, এতে অংশ নেবেন অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক সহ মৎস, পশুপালন ও কৃষি বিশেষজ্ঞরা। কিষান মেলায় বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি ও বেগুনের প্রতিযোগিতাও আয়োজন করা হয়েছে। সাথে থাকছে কৃষক সম্মাননা, ক্যুইজ, সন্ধ্যায় লোকসংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মেলা প্রাঙ্গণে রয়েছে কৃষি সামগ্রী, তাজা শাক-সব্জির সরাসরি বিক্রির ব্যবস্থা, আছে জৈবিক পদ্ধতিতে ফলানো শাকসব্জিও। ছাত্রছাত্রী সহ সব স্তরের জনগণকে অংশগ্রহণ করার জন্য বিভাগীয় তরফে আহবান করা হয়েছে। অন্যদিকে, সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিহারের ভাগলপুর থেকে সরাসরি ব্যাংক স্থানান্তরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধির অধীনে সুবিধাভোগী কৃষকদের প্রধানমন্ত্রী কৃষি সম্মান নিধির ১৯তম কিস্তি ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বিতরণ করেন। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য, ভূমিধারী কৃষক পরিবারকে আয় সহায়তা প্রদান করা। প্রকল্পের অধীনে, প্রতি বছর ৬০০০ টাকা, ২০০০ টাকার তিনটি কিস্তিতে সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রদান করা হয়। এবার প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের অধীনে দেশের ৯.৭ কোটিরও অধিক কৃষককে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২২০০০ কোটি টাকারও অধিক অর্থ প্রদান করেন। প্রকল্পটি ইতিমধ্যেই সারা দেশে কৃষকদের উল্লেখযোগ্য সুবিধা প্রদান করেছে এবং এই কিস্তি তাদের আয়কে আরও বাড়িয়ে দিয়ে কৃষিক্ষেত্রের সমৃদ্ধিতে অবদান রাখবে বলে তাঁর বিশ্বাস।

কাছাড় জেলার নানা ব্লক ও গ্রাম পর্যায়ে এই অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার দেখার ব্যবস্থা করা হয়, শিলচরে কেন্দ্রীয়ভাবে কিষান মেলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানের সম্প্রচার হয়। ৭০ হাজারেরও বেশি সুবিধাভোগী জেলায় এই প্রকল্পের অধীনে এবার অর্থ লাভ করবেন বলে জানানো হয়।

উল্লেখ্য, প্রথমদিনের অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন ড. নিখিল চন্দ্র দাস। গোটা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বৈশাখী দে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker