Barak UpdatesBreaking News
দেবোলাল খুন করেছেন পূর্ণেন্দু-নিন্দুকে, রাজসাক্ষীর বয়ানে ডিমা হাসাওয়ে চাঞ্চল্য
২০০৭ সাল। উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের মুখ্য কার্যবাহী সদস্য পূর্ণেন্দু লাংথাসা ও কার্যবাহী সদস্য নিন্দু লাংথাসাকে আলোচনার জন্য ডেকে নিয়ে খুন করে ডিএইচডি-জুয়েল গোষ্ঠী। তখন এরা এর দায়ও স্বীকার করেছিল। এখন জুয়েল গোষ্ঠীর প্রাক্তন জঙ্গিরাই পরিষদের ক্ষমতায়। সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে তাঁরা বিজেপিতে নাম লেখান। ভোটে জিতে দেবোলাল গারলোসা (ওরফে ড্যানিয়েল) হন মুখ্য কার্যবাহী সদস্য। আরেক প্রাক্তন জঙ্গি মিপুত রাইজুং ওরফে অ্যাকশন ডিমাসা ওরফে ডেভিড কেম্প্রাই এই জোড়া খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত। তিনি পরে রাজসাক্ষী হয়ে আদালতকে বলেন, পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের বর্তমান প্রধান দেবোলাল গারলোসাই পূর্ণেন্দু-নিন্দুকে হত্যা করেছিলেন। তখন দেবোলাল ছিলেন ডিএইচডি-জুয়েল গোষ্ঠীর স্বঘোষিত কমান্ডার।
অ্যাকশন ডিমাসা ওরফে ডেভিড কেম্প্রাইর এই বক্তব্যে ডিমা হাসাও জেলা জুড়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। রাজসাক্ষী হয়ে আজ জেলা দায়রা আদালতে তিনি বলেন, ২০০৭ সালের ৪ জুন দেবোলালের নির্দেশে গেলামিয়া নামে এক ক্যাডার পূর্ণেন্দু লাংথাসাকে গুলি করে মারে। নিন্দু-কে হত্যা করেন দেবোলাল নিজে। অ্যাকশন ডিমাসা সে সময় একজন ক্যাডার হিসেবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। কেন হত্যা করা হয়েছিল তাঁদের? অ্যাকশন জানান, ২ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছিল তাঁদের কাছে। তারা দিয়েছিলেন ৫০ লক্ষ।
অ্যাকশন আদালতকে আরও জানান, শুধু ওই দুই খুনই নয়, এর মাস দেড়েক আগে ২৭ এপ্রিল তারিখে প্রাক্তন কার্যবাহী সদস্য প্রফুল্ল ফংলোর দেহরক্ষীকেও গুলি করে মারেন দেবোলাল। সেদিন প্রফুল্লবাবু ৫০ লক্ষ টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন ওই দেহরক্ষী। দেবোলাল টাকা নিয়েই দেহরক্ষীর নাইন এমএম কারবাইনটি চেয়ে বসেন। আপত্তি করলে দেবোলাল তাকে গুলি করে মারেন। পরে কারবাইনটি নিয়ে স্থানত্যাগ করেন।
অ্যাকশনের এই জবানবন্দির পর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দেবোলাল গারলোসার গ্রেফতার দাবি করা হয়েছে। তাঁরা পরিষদ ভেঙে দিতে রাজ্যপালের উদ্দেশে আবেদন জানান। সেইসঙ্গে সুষ্ঠু বিচারের জন্য মামলাটিকে হাফলং থেকে সরিয়ে গুয়াহাটিতে নিয়ে যেতে বলেন। অ্যাকশন ও তার পরিবারের নিরাপত্তার জন্যও আর্জি জানান কংগ্রেস নেতারা।
দেবোলাল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, অ্যাকশনকে তিনি চেনেনই না। রাজনৈতিক স্বার্থে কংগ্রেস তাঁকে টাকাপয়সা দিয়ে ওইসব বলিয়েছে। তাঁর কথায়, কেউ কারও বিরুদ্ধে বললেই দোষী হয়ে যায় না। এর জন্য প্রমাণ প্রয়োজন। তিনি অ্যাকশনের কাছে প্রমাণ দাবি করেন।