NE UpdatesHappeningsBreaking News
ত্রিপুরায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ, সিপিএম কর্মীর মৃত্যুতে উত্তেজনা
ওয়েটুবরাক, ২ ডিসেম্বর : বুধবার ত্রিপুরার সিপাহীজলা জেলার চড়িলাম এলাকায় সিপিএম-এর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে শাসক দলের আক্রমণের ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিরোধী দলের এবং শাসকদলের কর্মীদের মধ্যে সেদিনের সংঘর্ষে সিপিএম-এর সমর্থক শহিদ মিঞা(৮০) নিহত হয়েছেন। বিধায়ক ভানু লাল সাহা সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু কুমার দেববর্মার পাল্টা অভিযোগ, সিপিএম নেতা, প্রাক্তন মন্ত্রী সাহা বিশালগড় থেকে সমাজবিরোধীদের নিয়ে গিয়ে চড়িলাম এলাকার পরিবেশ অশান্ত করে তুলছেন। সেজন্যই বিজেপি কর্মীরা বাধা দেন। বিজেপিরও কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান৷
প্রাক্তন তথ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম বিধায়ক ভানু লাল সাহা বলেন, “বুধবার চড়িলাম ব্লক অফিসে ডেপুটেশন প্রদান কর্মসূচি ছিল। সেজন্য পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়৷ দলীয় অফিসের সামনে কর্মী-সমর্থকরা জড়ো হতে থাকেন। তখনই জানতে পারি, ব্লক অফিসে বিজেপির গুন্ডারা জড়ো হয়েছে৷ আমাদের কর্মসূচিকে বানচাল করাই তাদের উদ্দ্যেশে। তাই আমরা মিছিল করা থেকে বিরত থেকে শুধু সভা করার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু দলীয় কর্মসূচি শুরু করতেই বিজেপির গুন্ডারা বেড়িয়ে এসে আমাদের দুই দিক থেকে ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। সঙ্গে বোমাবাজি শুরু করে।” তিনি বলেন, “ইট এসে আমার নাকেও পড়ে এবং রক্তক্ষরণ হয়। পরে আমাদের কর্মীরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।”
এ দিকে, নিহত সিপিএম সমর্থককের মৃতদেহ নিয়ে বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে যায়। শহিদ মিয়ার মৃতদেহ পরিবারের লোকেরা নিতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয় বলে অভিযোগ করেন নিহতের ছোট ভাই ওয়াহিদ মিঞা। জানান, তাঁকে পুলিশ মারধর করে দেহটি জোর করে ছিনিয়ে নেয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার জন্যে সিপিএম পুলিশের মুখ্য কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পরে এআইজি কিষান কুমার ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে সিপিএম আন্দোলন প্রত্যাহার করে।
পুলিশ অবশ্য কড়া পাহারায় শহিদ মিয়ার মৃতদেহ বাড়িতে পৌছে দিয়েছে। বুধবারের রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁদের মধ্যে দুইজন বিজেপি কর্মী, একজন সিপিএম ও একজন কংগ্রেস কর্মী রয়েছেন। পুলিশের বক্তব্য, মৃতদেহটি নিয়ে যাতে উত্তেজনা না বাড়ে, সে জন্য পুলিশি পাহারায় তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাঁর দেহ পুলিশ বাড়িতে পৌছে দিলেও পরিবারের সদস্যদের অনুপস্থিতিতে অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পর শহিদ মিয়ার পরিবারের সদস্যরা মৃতদেহ বুঝে নেন। এরপর ধর্মীয় নিয়ম মেনে মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, বিজেপি ৬ জন সিপিএম এবং ৯ জন কংগ্রেস কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। পুলিশ কংগ্রেস কর্মী ভবতোষ দত্ত(৫৮) এবং সিপিএম কর্মী গৌতম দাস(৫৬)-কে গ্রেফতার করেছে। বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, সিপিএম বরাবরই লাশ নিয়ে রাজনীতি করেন। তৃণমূল কংগ্রেস চড়িলামের ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।