Barak UpdatesIndia & World UpdatesHappeningsAnalyticsBreaking News
তৃণমূল নেতাদের সফরের আগে ১৪৪ ধারা জারি কাছাড়ে
তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিনিধি দলের শিলচর সফরের ঠিক আগের রাতে কাছাড়ে ১৪৪ ধারা জারি করল জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক এস লক্ষ্মণন বলেন, এনআরসি ইস্যুতে সমগ্র অসমের সঙ্গে এখানেও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রয়েছে। বাইরে থেকে কেউ এসে যেন একে বিনষ্ট করতে না পারে, সে দিকে খেয়াল রেখেই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এই নির্দেশে ৫জনের বেশি মানুষ একত্র সমবেত হতে পারবেন না। তাঁর কথায়, অনির্দিষ্টকালের জন্য এই নির্দেশ জারি হয়েছে।
এনআরসি-র চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশের পরবর্তী অবস্থা সরেজমিনে দেখতে আগামীকাল শিলচরে আসছেন তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদল। তাঁদের নেতৃত্ব দেবেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ওই দলে থাকবেন সাত সাংসদ– সুখেন্দুশেখর রায়, নাদিম-উল হক, অর্পিতা ঘোষ, মমতা বালা ঠাকুর, ড. রত্না দে নাগ, ড. কাকলি ঘোষ দস্তিদার ও মহুয়া মৈত্র। সকাল ১১টায় দিল্লি থেকে রওয়ানা হয়ে তাঁরা বেলা দেড়টায় শিলচরে পৌঁছাবেন। সাড়ে তিনটায় রাজীব ভবনে তাঁরা এক সভায় বক্তব্য রাখবেন বলেই নাগরিক মঞ্চ নামে এক সংস্থার পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ করা হচ্ছিল। পরে তা গান্ধীভবনে করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু জেলাশাসক এস লক্ষ্ণণন জানান, রাজীব ভবনে তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, এমন কোনও সভার জন্য বুকিং হয়নি। এ ছাড়া, রাজীব ভবন বা গান্ধী ভবন কোনও সভা করার জন্য কোনও সংস্থাই জেলা প্রশাসনের অনুমতি নেয়নি। ফলে তাঁদের কোথাও কোনও সভা করার প্রশ্নই ওঠে না।
রাজ্যের বন ও পরিবেশ মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য আজ সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে তৃণমূল সাংসদদের উদ্দেশে অনুরোধ জানান, তাঁরা যেন বৃহস্পতিবার অসমে আসার সময় এনআরসি-র ফর্মগুলো সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। পশ্চিমবঙ্গে পাঠানো লক্ষাধিক ফর্ম এখনও পরীক্ষা করে ফেরত পাঠায়নি তৃণমূল সরকার। পাশাপাশি তিনি তৃণমূল সাংসদদের সতর্ক করে দেন, উসকানিমূলক বক্তব্য রাখলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়ের বক্তব্য, এতদিন ধরে এনআরসি-র কাজ চলছে এখন হঠাত কেন সরব হয়ে উঠলেন ভিনরাজ্যের নেতারা। প্রকৃত দরদী হলে উপযুক্ত সময়ে এই প্রক্রিয়া নিয়ে তাঁদের কথা বলা উচিত ছিল।
তৃণমূল কংগ্রেস মন্ত্রী-সাংসদদের অসম সফরের বিরোধিতায় আজ সরব হলেন অল কাছাড়-করিমগঞ্জ-হাইলাকান্দি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (আকসা)-র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রদীপ দত্তরায়। তিনি বলেন, ‘এনআরসি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু তাস খেলছেন। ভোটব্যাঙ্কের কথা ভেবেই তাঁর এই শোরগোল। বাঙালির জন্য দরদ-টরদ কিছু নয়।’ প্রদীপবাবুর অভিযোগ, মমতা ব্যানার্জি নেতৃত্বাধীন সরকারের জন্য অসমে লক্ষাধিক মানুষ এনআরসি-র বাইরে রইলেন। ১ লক্ষ ১১ হাজার ৪৮ জনের বিভিন্ন নথি পশ্চিমবঙ্গে পাঠানো হয়েছিল। ফিরে এসেছে মাত্র ৫ হাজার ৮৫২ জনের রিপোর্ট। বাঙালিদরদী হলে তিনি তখনই এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতেন।
অল বরাক হিন্দু অ্যাসোসিয়েশন (আভা)-র পক্ষ থেকে তৃণমূল নেতাদের সফরের সমালোচনা করা হয়েছে।