Barak UpdatesHappeningsAnalyticsBreaking NewsFeature Story
তৃণমূল কাণ্ডঃ আহ্বায়কদের খোঁজ নেই, সভাস্থলও জানা নেই কারও
‘উসকানিমূলক’ বক্তৃতার আশঙ্কায় বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী-বিধায়ক-সাংসদদের। কিন্তু শিলচরে কোথায় সভা করতেন ? ৪৮ ঘণ্টা পরও কেউ জানেন না। বুধবার সকালে মোবাইলে-মোবাইলে ছড়িয়ে পড়েছিল, রাজীব ভবনে মত বিনিময় করবেন তৃণমূল নেতারা। সেদিনই রাজীব ভবন কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, তাদের হলঘর কেউ ভাড়া নেয়নি। বৃহস্পতিবার নতুন বার্তা মেলে, সভা হবে গাঁধী ভবনে। শিলচর পুরসভা জানিয়েছে, তাঁদের ভবনও কেউ চায়নি সেদিন।
কারা এই সভার আহ্বায়ক? এসএমএস, হোয়াটস অ্যাপে নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু হঠাত কারা এই মঞ্চ গড়ে তুললেন, জবাব মেলেনি কারও কাছে। বার্তা-প্রেরক একজনকে জিজ্ঞেস করলে বলেন, তিনি শুধু মোবাইলে পাওয়া বার্তাটি পরিচিতদের ফরোয়ার্ড করেছেন। কে আহ্বায়ক, সুরক্ষা মঞ্চের কর্মকর্তা কারা— কিছুই জানেন না তিনি। আরও যে দুই-চারজনের মোবাইল থেকে সভার আমন্ত্রণ ছড়িয়ে পড়েছিল, সকলেরই এক বক্তব্য। জানেন না জেলাশাসক এস লক্ষ্মণনও। তিনি বলেন, শহরে যে সব জায়গায় সাধারণত সভা-সমিতি হয়, সেগুলিতে তাঁরা যোগাযোগই করেনি।
কাছাড় জেলায় দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল কংগ্রেসের অস্তিত্ব নেই। তাই সুরক্ষা মঞ্চের ব্যানারে সভার আয়োজন হচ্ছিল। কিন্তু ১৪৪ ধারা জারির মঞ্চ-কর্তারা পরিচয় গোপন করছেন কেন, এও এক রহস্য।
তাঁদের এত গুরুত্ব দেওয়া কেন? পুলিশ সুপার রাকেশ রৌশন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গৃহযুদ্ধ বাঁধাব, রক্তগঙ্গা বইবে ইত্যাদি কথা দুদিন আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল। এর পর ঝুঁকি নেওয়া যায় না। একই কথা বললেন রাজ্যের বন ও পরিবেশ মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যও। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করেই বলেন, গৃহযুদ্ধের হুমকির পর সেই দলের সেনাপতিকে তো আর ছেড়ে রাখা যায় না। বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার দিলীপকুমার পাল তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে শিলচরে আনার পেছনে কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেবের হাত রয়েছে ইঙ্গিত দেন। সুস্মিতা দেব এই অভিযোগে গুরুত্বই দিতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, কাউকে আটকে দেওয়াটা ঠিক নয়। তবে করিমগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ সেদিন বড়সড় দল নিয়ে শিলচরে এসেছিলেন। তিনি খোলামেলাই বলেন, প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে দেখা করে এই অঞ্চলের সমস্যার কথা তুলে ধরতে চাইছিলেন। তিনিও সভা আয়োজনে নিজের কোনও ভূমিকার কথা অস্বীকার করেন।
রাজনৈতিক বিশ্নেষকদের অনুমান, যে সভার জন্য তৃণমূল নেতারা এখানে এসেছিলেন, সেই সভা অনুষ্ঠিত হলে তাঁদের বক্তব্য যতটা না ছড়িয়ে পড়তো, এর চেয়ে বেশি ছড়াল বিমানবন্দরে আটকে দেওয়ায়। জাতীয় রাজনীতিতেও নতুন করে শোরগোল বাঁধানোর সুযোগ মমতা-বাহিনীর হাতে তুলে দিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন অসম সরকার।