Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ডিসিবিএলের নতুন শিক্ষাবর্ষের সূচনায় মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবনা শোনাল বঙ্গ সাহিত্য
ওয়েটুবরাক, ২৪ ডিসেম্বর : বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের দূর শিক্ষা কেন্দ্রের ষষ্ঠ শিক্ষাবর্ষের সূচনা হল৷ শনিবার বঙ্গভবনে এই উপলক্ষে আয়োজিত হয় “স্বাগত অনুষ্ঠান”৷ তাতে নির্ধারিত বক্তা হিসেবে “বাংলা ভাষায় শিক্ষার সমস্যা ও সম্ভাবনা” বিষয়ে বক্তৃতা করেন করিমগঞ্জ কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক নির্মল সরকার৷ তিনি মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন৷ বলেন, যারা মাতৃভাষায় বিজ্ঞান পড়বে কী ভাবে বলেন, তারা ভুল ভাবছেন৷ আসলে মাকে মাম্মি, বাবাকে ড্যাড বললে মা-বাবা শিখতে গিয়ে বিষম খেতেই হয়৷ আগে থেকে সঠিক শিক্ষা হলে সমস্যা হয় না৷ নইলে ফ্রান্স, চিন, জার্মানিতেও সমস্যা হওয়ার কথা ছিল৷ তাদের তো হয় না৷
তাঁর পরামর্শ, সেজন্য মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের জন্য শিক্ষাখাতে ব্যয়বরাদ্দ বাড়াতে হবে৷ মাতৃভাষায় পুস্তক প্রকাশের ব্যবস্থা করতে হবে৷ বিজ্ঞান বা ডাক্তারি যাই হোক না কেন৷ কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছিলেন, অসমকে মাতৃভাষার পরীক্ষাগার করা যেতে পারে৷ এর উল্লেখ করে নির্মলবাবু আশঙ্কা করেন, একই দলের সরকার হলেও এই ইস্যুতে কিন্তু কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত রয়েছে৷ কারণ ধর্মেন্দ্র প্রধানের মন্তব্যের পরই অসম সরকার ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে মাতৃভাষার বদলে তৃতীয় শ্রেণি থেকে অঙ্ক-বিজ্ঞান ইংরেজিতে পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷
প্রধান অতিথির ভাষণে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ মন্মথ নাথ বলেন, অন্য ভাষাশিক্ষায় উদার মনোভাব হয়, ভ্রাতৃত্ববোধ মজবুত হয়৷ ডিসিবিএলের উপদেষ্টা অধ্যাপক দিলীপকুমার দে বাংলার উপভাষা নিয়ে বিভ্রান্ত না হতে পরামর্শ দেন৷ বলেন, “বাংলাদেশে গিয়ে দেখেছি, একেক এলাকার মানুষ একেক ধরনের স্থানীয় ভাষায় কথা বললেও তাঁরা সবাই মান্যভাষাকে আঁকড়ে রেখেছেন৷
বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কাছাড় জেলা সভাপতি সঞ্জীব দেবলস্কর জানান, ডিসিবিএলকে ক্রমান্বয়ে মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করাই তাদের লক্ষ্য৷ আরও কিছু বাংলা কোর্স করারও পরিকল্পনা রয়েছে বঙ্গ সাহিত্যের৷ অনুষ্ঠানের সভাপতি তথা ডিসিবিএলের সঞ্চালক ড. পরিতোষ দত্ত জানান, ৬৫ জন পড়ুয়াকে নিয়ে শুরু হয়েছিল ডিসিবিএলের পথচলা৷ এবার তা ২৯৩ জনে পৌঁছেছে৷
রেজিস্ট্রার ড. সব্যসাচী রায়ের বক্তব্য, ডিসিবিএল পাশ করলেই যেন সব শেষ না হয়, বঙ্গ সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রসারে এই শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব নিতে হবে৷ অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বঙ্গ সাহিত্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌতমপ্রসাদ দত্ত, জেলা সম্পাদক ড. জয়ন্ত দেবরায় প্রমুখ৷ এ দিন ডিসিবিএলের নতুন শিক্ষাসূচি আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হয়৷