Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ডলু চা-বাগানে নতুন বিমানবন্দর গড়তে অঘোষিত যুদ্ধ ! লিখেছেন অধ্যাপক দিলীপ কুমার দে
বরাকের একমাত্র বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রয়োজন বড় বিমান ওঠানামার জন্য। এ কথা শুনে আসছি। কিন্তু নতুন করে অন্য জায়গায় ‘গ্রিন ফিল্ড ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট’ নির্মাণের দাবি এক বৎসর আগে পর্যন্ত কোনও সংস্থা, সংগঠন, দল, নেতার মুখে শোনা যায়নি। ভারতে একসঙ্গে বিমান বাহিনী ও বাণিজ্যিক বিমান উড়ানের অনেক বিমানবন্দর রয়েছে।
২। কুম্ভিরগ্রাম বিমানবন্দর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তৈরি করেছিল তৎকালীন সরকার। তার পর কিছু সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন হয়েছে। এটি উঁচু স্থলভূমির উপর নির্মিত, মোটেই কোনও জলাশয় বেষ্টিত নয়। ইচ্ছা করলে পাশের কিছুটা জমি অধিগ্রহণ করে সম্প্রসারণ করা যায়। তাহলে বরাকের এক সবুজ উন্নত ও বিস্তৃত ডলু চা-বাগান ধ্বংস করা কোনভাবেই আবশ্যক ছিল না। সন্দেহ এখানে বিরাট লেনদেন হয়েছে।
৩। বরাকের ন্যায্য দাবি ছিল পাঁচগ্রামের কাগজ কল পুনরায় চালু করা ও কর্মসংস্থানের জন্য শিল্প স্থাপন। সেটা ধামাচাপা দিতে উল্টে শ্রমিক নিপীড়ন, সুন্দর সবুজ চা-বাগান ধ্বংস করতে রাষ্ট্রযন্ত্রের নির্মম ব্যবহার হচ্ছে। নাগরিক হিসাবে এর প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করলে ‘মাওবাদী’, ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দিচ্ছেন যারা তাদের নিন্দা করতেই হয় ।
৪৷ অত্যাবশ্যক হলে ডলু বাগানের কাছেই বন্ধ হওয়া বা নিষ্ফলা ‘খরিল’ বাগানের জমি ব্যবহার করা যেত। এছাড়াও কিছু বিকল্প অব্যবহৃত জমি পাওয়া সম্ভব ছিল।
৫৷ আগে বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাদের মুখে কোনও প্রতিবাদ শোনা যায়নি। এখন জনগণের মধ্যে মুখরক্ষার জন্য বিবৃতি বের হচ্ছে, যখন চা-গাছ উপড়ে ফেলা হয়ে গেছে।
৬৷ চুক্তি স্বাক্ষরকারী শ্রমিক সংগঠনগুলো কিংবা জেলা প্রশাসন চুক্তিপত্র সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ করেননি কেন? এটা কোনও গোপন দলিল নয় বলেই জানা যায়। কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সমর্থনপুষ্ট কিংবা পরোক্ষ অঙ্গ হওয়ার জন্য ওইসব শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্ব ছিল বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা।
৭৷ ডলু চা-বাগানে প্রায় দু’শ ( সংবাদ মতে) জেসিবি ট্রাক্টর ও হাজার সশস্ত্র বাহিনী ভোর বেলায় হঠাৎ জড়ো হল গরিব নিরস্ত্র শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ করতে, যা বরাকের মানুষ ১৯ মে, ১৯৬১ সালেও দেখেননি। নাগরিকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কাঠামো এর আগে এমন ব্যবহার করেছেন বলে ইতিহাসে নেই ।
৮৷ বরাকের গরিব দরদী সব মানুষ শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে জনগণের অর্থ, জনগণের অর্থে জনগণের সুরক্ষার জন্য যন্ত্রের অপব্যবহারের প্রতিবাদ করুন।
৯৷ মেকী পরিবেশবিদ, মেকী সবুজায়নবিদ, মেকী শ্রমিক-নেতা, মেকী ও ধুরন্ধর রাজনৈতিক ‘জননেতা’ থেকে সাবধান থাকুন।
১০। নতুন বিমানবন্দর নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি থেকে শতগুণ বেশি করবে কর্মহীনতা।