Barak UpdatesHappeningsBreaking News
চা গাছ কেটে বিমানবন্দর, সরকারকে নোটিশ পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট
ওয়েটুবরাক, ৯ এপ্রিলঃ ২০২২ সালের ২৯ এপ্রিল ও ২ মে কাছাড় জেলা প্রশাসন ডলু চা বাগানের হাজার হাজার ফলনশীল চা গাছ উপড়ে ফেলে জমি অধিগ্রহণ করেছিল। এই উচ্ছেদের বিরুদ্ধে ও শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি প্রথমে গ্রিন ট্রাইবুনালের কলকাতা বেঞ্চে এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। তাঁদের বক্তব্য, লক্ষ লক্ষ ফলনশীল চা গাছ এবং ছায়াতরু কেটে এয়ারপোর্ট তৈরি করলে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে পরিবেশের উপর।
সে জন্য তিনটি সামাজিক ও পরিবেশ সংগঠনের পক্ষ থেকে গ্রিন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনির কলকাতা শাখার আহ্বায়ক প্রদীপ রায়, কলকাতার শান্তি গণতন্ত্র সংহতি মঞ্চের সম্পাদক তাপস গুহ এবং কলকাতার সমাজ বিজ্ঞান ও প্রকৃতি পরিচয় পত্রিকার সম্পাদক বৈদ্যনাথ সেনগুপ্ত দায়ের করা ওই মামলা ট্রাইব্যুনাল খারিজ করে দেয়। এর পরই তাঁরা শীর্ষ আদালতে যান। বিখ্যাত আইনজীবী প্রশান্ত ভূষনের মাধ্যমে গত ৯ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। গত ৮ এপ্রিল আপিল মামলার প্রথম শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াইডি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে। সুপ্রিম কোর্ট সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলিকে নোটিশ ইস্যু করে ২২ এপ্রিলের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ জারি করেছে। পরবর্তী আদেশ পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখতেও সরকার পক্ষকে বলে দিয়েছে। অর্থাৎ ডলুতে এয়ারপোর্ট সংক্রান্ত কাজ স্থগিত থাকবে।
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি সন্তুষ্ট, তেমনি আসাম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য শ্রমিকরাও উৎফুল্ল। তাঁরা আশাবাদী, ডলুর মতো ফলনশীল লাভজনক চা বাগানে পরিবেশ ধ্বংস করে এয়ারপোর্ট তৈরিতে সায় দেবে না শীর্ষ আদালত। তাঁদের দাবি, অধিগৃহীত জমি ফিরিয়ে দিয়ে সেই জায়গায় উপড়ে ফেলা চাগাছের সমসংখ্যক চা-গাছ পুনরায় রোপণ করতে হবে।
ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনির পক্ষে অরিন্দম দেব, শিশির দে, অরূপ বৈশ্যরা বারবার জোর দিয়েই বলেন, তাঁরা কাছাড়ে এয়ারপোর্ট নির্মাণের বিরোধী নন, অন্যত্র পরিত্যক্ত জমিতে তা নির্মিত হোক। মঙ্গলবার আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রমিকদের পক্ষে কমলজিত তেলি, অঞ্জলি তন্তুবায় প্রমুখ বলেন, শ্রমিকদের প্রতি চরম বঞ্চনার জন্য প্রশাসনের প্রতি সাধারণ জনতার বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি হুঁশিয়ারির সুরে শুনিয়ে দেন, যে জীবিকার ওপর তাঁদের জন্মগত অধিকার, তা কেড়ে নিতে চাইলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।