Barak UpdatesHappeningsSportsBreaking News

গুপ্ত ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন রায়েংদাই

//দ্বিজেন্দ্রলাল দাস//

১১ নভেম্বর : ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মণিপুরের অ্যামোফা। এরপর ক্যাপ্টেন এনএম গুপ্ত ট্রফিতে মণিপুরের আর কোনও দল চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। গুপ্ত ট্রফিতে মণিপুরের সেই খরাটাই আজ কাটাল রায়েংদাই এফসি। উত্তেজনা ফাইনাল ম্যাচে তারা ২-১ গোলে পরাস্ত করে কলকাতার মহামেডান স্পোর্টিংকে। বিরতির সময় মণিপুর এগিয়ে ছিল ২-০ গোলের ব্যবধানে। পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমায় মহামেডান।

২০১৮ সালে শেষবারের মতো হয়েছিল ক্যাপ্টেন এন এম গুপ্ত ট্রফি। আর এবার হলো প্রায় ছয় বছর পর। প্রতিটি ম্যাচেই দর্শকদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্য করার মতো। আর ফ্লাডলাইটে ফাইনাল ম্যাচ দেখার জন্য দর্শকদের উৎসাহ ছিল লক্ষ্যণীয়। শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব অতনু ভট্টাচার্যের ভাষ্য অনুযায়ী সংখ্যাটা কুড়ি হাজার । তবে দর্শকদের এতো হবে তা আয়োজক সংস্থার কর্মকর্তাদের অনেকেই ভাবেননি। খেলা শুরুর পরেও টিকিট কাউন্টারের সামনে দর্শকদের লাইন ছিল লক্ষ্যণীয়। এমনকি দুধের শিশুকে কোলে নিয়ে মহিলাকে গ্যালারিতে বসতে দেখা গেছে। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা দর্শকদের উপস্থিতি একেবারে কম ছিল না। বলতে দ্বিধা নেই দীর্ঘদিন বাদে এতো দর্শক দেখা গেল শিলচরের মাঠে।

খেলা শুরুর আগে দুই দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিচিত হলেন জেলার অভিভাবক মন্ত্রী জয়ন্তমল্ল বরুয়া, শিলচর ও লক্ষীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী ও কৈশিক রাই। সঙ্গে ছিলেন শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি শিবব্রত দত্ত ও সচিব অতনু ভট্টাচার্য প্রমুখ।আজ সঞ্চালকের ভুমিকা পালন করেন দেবাশিস সোম।বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজির সহযোগে আজ ফাইনালের উদ্বোধনী ও সমাপ্তি অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন তিনি।বিরতিতে পরিবেশিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও । পরিবেশনায় ছিল নৃত্য উপাসনা কেন্দ্র।

আজ খেলার শুরু থেকে দুই দলের খেলোয়াড়রা ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে রাখার প্রয়াস চালান। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে এগোতে থাকে ম্যাচ। তবে তুলনামূলকভাবে বিচার করলে দাপট একটু বেশি ছিল রায়েংদাই এফসি-র। বিপক্ষের রক্ষণে ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে তারা। ২৭ মিনিটে টি এইচ নানি সিঙের গোলে এগিয়ে যায় রায়েংদাই। মহামেডানের জ্বালে বল জড়াতেই উচ্ছ্বাসে মেতে পড়েন দর্শকরা। মহামেডানের সাপোর্টার থাকলেও তুলনামূলকভাবে সমর্থন বেশি ছিল রায়েংদাইয়ের। বাটু দাশগুপ্ত ব্লক জুড়েই ছিল রায়েংদাইয়ের সাপোর্টার।দর্শকদের এই উচ্ছ্বাস মণিপুরের দলের খেলোয়াড়দের তাতিয়ে দেওয়ার জন্য ছিল যথেষ্ট।এক গোল হজমের পর আহত চিতা মতো রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে মহামেডান। কিন্তু সমতায় ফেরা সম্ভব হয়নি। বরং ৪২ মিনিটে তারা আরও এক গোল হজম করে বসে। রায়েংদাইয়ের হয়ে ব্যবধান বাড়ালেন সাগর সিং। ২-০ গোলে এগিয়ে যায় তারা। প্রথমার্ধে দুই গোলে এগিয়ে থাকায় বাড়তি সুবিধে পায় প্রতিবেশী রাজ্যের দল।
বিরতির পর গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে মহামেডান। আক্রমণে গুরুত্ব আরোপ করে তারা। তাদের বেশ কিছু আক্রমণ গড়ে ওঠে দুই উইং অ্যাডিসন সিং ও বামিয়া সামাদকে ঘিরে। অ্যাডিসন সিঙের বেশ কয়েকটি অ্যাটাক ছিল লক্ষ্য করার মতো। তখন বিপক্ষকে বেশ চাপে রাখে মহামেডান। পরিস্থিতি বুঝে রায়েংদাই বেশ ডিফেন্সিভ হয়ে পড়ে। ঘর সামলানোর কাজে ব্যস্ত¸ হয়ে পড়ে। ফলে গোল করার মতো কাউন্টার অ্যাটাক করা সম্ভব হয়নি তাদের। ৭৭ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন যোশেফ। বক্সের মধ্যে মহামেডানের রোমানকে ফাউল করেন রায়েংদাইয়ের ডিফেন্ডার নরেশ সিং। পেনাল্টি দেন রেফারি আব্দুল মজিদ চৌধুরী। পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমালেন যোশেফ। ফল দাঁড়ায় ২-১। এরপর গোলের আরও সুযোগ পেলেও ফল বরাবর করতে পারেনি মহামেডান। খেলা শেষ হয় ২-১ ফলেই। চ্যাম্পিয়ন হবার সুবাদে ট্রফি ছাড়াও নগদ এক লক্ষ টাকা পেয়েছে রায়েংদাই। আর মহামেডান পেয়েছে পঞ্চাশ হাজার।

রেফারি ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজাতেই খেলোয়াড়রা যেমন আনন্দে মেতে ওঠেন তেমনি, বাঁধনহারা উচ্ছ্বাস দেখা যায় দর্শকদের মধ্যে। খেলোয়াড়রা সাইড লাইন এসে দর্শকদের সঙ্গে হাত মেলাতেই তাঁদের উচ্ছ্বাস যেন আরও বেড়ে যায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker