Barak UpdatesHappeningsBreaking News
কৌশিক সহ তিন বিধায়কের তৎপরতায় উনিশে মে পরীক্ষা পিছিয়েছে : বরাক বঙ্গ
ওয়েটুবরাক, ১৭ এপ্রিল : ১৯ মে ভাষাশহিদ দিবসে পরীক্ষা রাখা চলবে না বলে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন অসম উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পরিষদের কাছে যে দাবি রেখেছিল, তা মেনে নেওয়া হয়েছে । তবে ৯ মে রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিনে পরীক্ষা না রাখার দাবি মানেনি পরিষদ। ওইদিন দু বেলায় যথারীতি পরীক্ষা নেওয়া হবে।
সোমবার বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য সংস্কৃতি সম্মেলনের রুটিন পরিবর্তনের দাবিটি বিবেচনার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পরিষদের কার্যালয়ে উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠক বসে। ওখানেই সব দিক খতিয়ে দেখার পর প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার রুটিনে আংশিক পরিবর্তন আনা হয়। বরাকবঙ্গের পাশাপাশি অসম উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী সংস্থা, এআইডিএসও, অসম কলেজ শিক্ষক সমিতির করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি জোনাল কমিটি সহ আরও বেশ কয়েকটি সংগঠন ৯ মে রবীন্দ্রজয়ন্তী ও ১৯মে ভাষাশহিদ দিবসে পরীক্ষা না রাখার দাবি তুলেছিল।
সোমবার পরিষদের বৈঠকের পর বিকেলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পঙ্কজ বরঠাকুর পরীক্ষার সংশোধিত সূচি প্রকাশ করেন। ওই সুচি অনুসারে ৪ মে অনুষ্ঠেয় ইংরেজি পরীক্ষা পিছিয়ে ৩০ মে নেওয়া হয়েছে । অন্যদিকে ১৯ মে সকাল বেলার অর্থনৈতিক ভূগোল ও মিউজিক গ্রুপ বি এবং বিকেলের গণিত পরীক্ষা দিন পরিবর্তন করে ৩১ মে নেওয়া হয়েছে। তবে ৯ মে রবীন্দ্র জয়ন্তীর দিন সকালে মিউজিক গ্রুপ এ এবং বিকেলে পদার্থবিদ্যা/রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অ্যাকাউন্টান্সি পরীক্ষা যথারীতি হবে। ৪ মে ঈদের পরদিন পরীক্ষা না রাখার জন্য কয়েকটি মহল থেকে পরিষদের কাছে দাবি রাখা হয়েছিল । পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরঠাকুর তার সংশোধিত পরীক্ষার সূচিতে ৪ ও ১৯ মে অনিবার্য কারণবশত পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
ইতিপূর্বে পরিষদ উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করার পর বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গৌতম প্রসাদ দত্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পঙ্কজ বরঠাকুরের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে ৯ মে রবীন্দ্রজয়ন্তী ও ১৯ মে ভাষাশহিদ দিবসে পরীক্ষা না রাখার দাবি জানান । ওই দিনগুলোতে গতবছর সম্মেলনের দাবি মেনে পরীক্ষার সূচি পরিবর্তনের কথা তিনি স্মরণ করিয়ে দেন। বরঠাকুর তখন বঙ্গ সাহিত্যকে লিখিতভাবে বক্তব্য পেশ করার পরামর্শ দেন । বলেন, চিঠি পেলে পরিষদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিবেচনার জন্য তিনি তা পেশ করবেন । সঙ্গে সঙ্গেই সম্মেলনের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক দত্ত পরিষদের চেয়ারম্যান , সচিব ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে চিঠি পাঠিয়ে দেন।
অসম উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী সংস্থার কাছাড় জেলা সমিতি ও এ সি টি এর করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি জোনাল কমিটি অনুরূপ ভাবে পরিষদে চিঠি পাঠায়।। ইতিমধ্যে পরিষদকে দেওয়া চিঠির প্রতিলিপি তিন বিধায়ক কৌশিক রাই, দীপায়ন চক্রবর্তী ও কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থের কাছে পাঠিয়ে তাদের বিষয়টি নিয়ে সরব হবার জন্য বঙ্গ সাহিত্যের সাধারণ সম্পাদক দত্ত আর্জি রাখেন। তিন বিধায়ক সম্মেলনের দাবি নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হন । বিধায়ক কৌশিক রাই বঙ্গসাহিত্যের দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী এই আর্জিতে সাড়া দিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী ও কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ দিসপুরে কথা বলেন। সোমবার পরিষদের বৈঠকের আগে কৌশিক রাই চেয়ারম্যানের সঙ্গে ফের একবার কথা বলেন। চেয়ারম্যান তখন তাকে আশ্বাস দেন, পরীক্ষার সূচি যতটা সম্ভব পরিবর্তন করা হবে । নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পরীক্ষা শেষ করার কিছু বাধ্যবাধকতা থাকায় বড় পরিবর্তন বোধ হয় করা যাবে না ।
এদিকে পরীক্ষার সংশোধিত সূচি পরিবর্তনের পর বঙ্গসাহিত্যের সাধারণ সম্পাদক দত্ত রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিন পরীক্ষা না রাখার জন্য ফের পরিষদের কাছে দাবি রেখেছেন। পাশাপাশি সম্মেলনের দাবি নিয়ে দিসপুরে কথা বলার জন্য সাধারণ সম্পাদক দত্ত বিধায়ক কৌশিক রাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একইভাবে দীপায়ন চক্রবর্তী ও কমলাক্ষ পুরকায়স্থকেও ধন্যবাদ দিয়ে রবীন্দ্রজয়ন্তীর কথা ফের উত্থাপনের আবেদন রেখেছেন।