NE UpdatesBarak UpdatesIndia & World UpdatesHappeningsBreaking News

কারিগরের ‘কৃতি সাহিত্য সম্মান’ জয়িতা দাসকে

ওয়েটুবরাক, ৬ মার্চ : প্রতি বছরের মতো এবারও সাহিত্য-সংস্কৃতিতে অনন্য অবদানের জন্য গুণীজনদের সম্মান জানাল ‘কারিগর’। গত সোমবার সন্ধ্যায় কলকাতার গিরিশ মঞ্চে কারিগর সাহিত্য সম্মান ২০২৪-এ ভূষিত হলেন ব্রাত্য বসু এবং পার্থ দাশগুপ্ত। কৃতি সাহিত্য সম্মান তুলে দেওয়া হয়েছে লেখিকা জয়িতা দাসের হাতে। তাঁর হাতে এই সম্মান-স্মারক তুলে দেন  প্রাবন্ধিক গোপা দত্তভৌমিক। ‘কারিগর’ থেকে প্রকাশিত জয়িতার বিভিন্ন বই পাঠকমহলে খ্যাতি অর্জন করেছে ।

এ বছর বঙ্কিমচন্দ্র সাউ স্মৃতি সম্মানে ভূষিত হলেন সাহিত্যিক, নাট্যকার, পরিচালক তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর নাটক-সিনেমা তো বটেই, মননশীল লেখা এবং উপন্যাসও নানা সময়ে নানা ভাবে সমৃদ্ধ করে এসেছে পাঠকদের। কারিগর থেকেই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর পাঁচটি বই।
অলকা সাউ স্মৃতি সম্মান প্রদান করা হয় শিল্পী পার্থ দাশগুপ্তকে। পেন্টিংয়ের পাশাপাশি সেরামিকের কাজে তাঁর দেশজোড়া খ্যাতি৷ সেই সঙ্গে বাংলার দুর্গাপুজোর ইউনেস্কো হেরিটেজ স্বীকৃতি লাভের নেপথ্যে রয়েছে তাঁর পঁচিশ বছরের নিরলস পরিশ্রম ও গবেষণা।  সেই অবদানকে কুর্ণিশ জানায় ‘কারিগর’।
এর পাশাপাশি প্রতি বছর নবীন লেখকদের হাতেও কৃতি সাহিত্য সম্মান তুলে দেয় কারিগর। এবার তারই প্রাপক জয়িতা দাস।


কারিগরের তরফে সাহিত্য সম্মান ২০২৪-এর এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে দেবাশিস সাউ বলেন, প্রতি বছর দু’জন করে বিশিষ্ট সাহিত্যিক কারিগর সাহিত্য সম্মান পান৷ কৃতি সাহিত্য সম্মান তুলে দেওয়া হয় একজন প্রতিশ্রুতিমান লেখকের হাতে। এর আগে কারিগরের সাহিত্য সম্মান পেয়েছেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, নবনীতা দেবসেন, পবিত্র সরকার, সুভাষ ভট্টাচার্য, জয় গোস্বামী, সুধীর চক্রবর্তীর মতো বিশিষ্ট সাহিত্যিকেরা।
গত সোমবার কারিগর প্রকাশনার ১৫তম বছরে ব্রাত্য বসুর হাতে বঙ্কিমচন্দ্র সাউ স্মৃতি সম্মান তুলে দেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। পার্থ দাশগুপ্তর হাতে অলকা সাউ স্মৃতি স্মারক তুলে দিয়েছেন শিল্পী সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়।


অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল মাধবী দত্তের গান।  শেষে পরিবেশিত হয় পায়েল করের পুরাতনী, তিন কবির গান এবং আধুনিক গান। সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলা আকাদেমির শুভময় মণ্ডল।

প্রসঙ্গত, ‘কারিগর’ আদতে একটি প্রকাশনা সংস্থা, যারা মূলত প্রবন্ধ গ্রন্থ প্রকাশ করে এবং পুরনো লেখা পুনরুদ্ধার করে পুনরুজ্জীবিত করে তোলে। তাদেরই শাখা কৃতি আরও একটি সংস্থা, যারা শুধুমাত্র গল্প উপন্যাস এবং প্রবন্ধ প্রকাশ করে। ‘কারিগর’ মনে করে, গ্রন্থনির্মাণ একটি শিল্প। তাই শুধু বইয়ের কারিগর হওয়াই নয়, শিল্পকলার বিভিন্ন শাখা, যেমন সঙ্গীত, অভিনয়, দৃশ্যকলার শিল্পীদের নিয়ে আলোচনা সভা, সাহিত্যচর্চা প্রভৃতিও কারিগরের আড্ডাঘরে এবং শান্তিনিকেতনে নিয়মিত আয়োজিত হয়ে থাকে

জয়িতার জন্ম করিমগঞ্জ শহরে৷ বর্তমানে অধ্যাপনা করেন হোজাইর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। লিঙ্গ রাজনীতি, নারীবিশ্ব এবং নারীবীক্ষায় তাঁর বিশেষ আগ্রহ৷ মেয়েলি পাঠে তাঁর আস্থা যদিও, তবে তাঁর লেখালেখির জগৎ কিন্তু এতেই আটকে থাকেনি। ফারাওদের আমল, মহেঞ্জোদারো সভ্যতা, আলেকজান্ডারের দ্বিগ্বিজয়, উনিশ শতকের ব্রাহ্ম অন্দোলন থেকে আজও পুরুষদের দাড়িচর্চার পেছনে যে রাজনীতি কাজ করছে, এই নিয়ে গোটা একটি বই লিখে ফেললেন তিনি। তাঁর বই নিয়ে পাঠক তো বটেই, সংগ্রাহকদের মধ্যে রয়েছে বিশেষ আগ্রহ। কারিগর প্রকাশিত তাঁর ‘পর্দাপুরাণ : বাঙালি নারীর আড়াল ও অন্তরাল’-এর কথা  বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়৷ বেগমদের সুখ-দুঃখ, তাঁদের প্রতিবাদী সত্ত্বা, ভারতবর্ষে ইসলামিক সংস্কৃতি প্রচারে তাঁদের ভূমিকা, এই নিয়েও তিনি বই লিখেছেন। তাঁর প্রকাশিত বইগুলি হল অন্তঃপুরের স্বর : আত্মকথনের স্ত্রী-পর্ব (২০১৪), সাজমহল : ঔপনিবেশিক বাংলায় মেয়েদের সাজগোজ (২০১৫), পর্দাপুরাণ : বাঙালি নারীর আড়াল ও অন্তরাল (২০১৭), বেগমনামা (২০২০), দাড়িতুতো গাল ও গল্পরা (২০২১), মহাত্মা ও শিলচরে নারী-জাগৃতির ঊষাপর্ব (২০২৩)৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker