Barak UpdatesHappeningsBreaking News
শিলচরের এমপি-এমএলএকে পদত্যাগ করতে বলুন, হিমন্তকে কমলাক্ষ
ওয়েটুবরাক, ২০ জুলাইঃ শিলচরের এমপি-এমএলএকে নিয়ে উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থের ব্যক্তিগত কোনও ক্ষোভ নেই। তাঁদের ওপর শিলচরের মানুষের ক্ষোভটা তিনি আঁচ করতে পেরেছিলেন। তবে তা কোন মাত্রার ছিল, সেটা নিশ্চিত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর শনবিল পরিদর্শনের ভিডিয়ো ক্লিপিংস শুনে।
মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলছেন, তাঁদের ওপর শিলচরের মানুষের প্রচণ্ড ক্ষোভ ছিল। আমি এসে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করলাম। সেই সূত্রেই কমলাক্ষের প্রশ্ন, সাংসদ রাজদীপ রায় ও বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তীর দায়িত্বহীনতার জন্য যদি শিলচরের লক্ষ লক্ষ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়, তবে তিনি কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? তাদের বিরুদ্ধে আদৌ কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন কি? এর পরই প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যবাহী সভাপতি কমলাক্ষের পরামর্শ, তাঁদের পদত্যাগ করতে বলুন। শিলচর লোকসভা ও বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন করান।
মুখ্যমন্ত্রী এসে মানুষের ক্ষোভ দমানোর দাবিকে মানতে চাননি কংগ্রেস পরিষদীয় দলের উপনেতা রকিবুল হোসেন। তিনি বলেন, কখন এলেন মুখ্যমন্ত্রী? মানুষের চরম সংকটের দিনগুলিতে সরকারের কোনও অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়নি। হুহু করে জল ঢুকছে, মানুষ কোথায় যাবেন, কোথায় আশ্রয় নেবেন, কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। খাওয়া দূরে থাক, পানীয় জলের জন্য হাহাকার করছিলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনা বলতে কিছু ছিল না। রকিবুল বরাক উপত্যকার এনজিও এবং তরুণ প্রজন্মকে সাধুবাদ জানান। বলেন, তারা বন্যার্তদের ত্রাণে এগিয়ে না এলে কী যে ভয়ঙ্কর চেহারা নিত, কল্পনা করতেও কষ্ট হয়।
রকিবুলের কথায়, এই সরকার একটি কাজেই দক্ষ, সেটি হলো বুলডোজার চালানো। ইছাবিল চা বাগানে উচ্ছেদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, অনেকের পাট্টা রয়েছে, বুলডোজার সরকার কিছু দেখতে রাজি হয়নি। সতেরো জুলাইর মধ্যে সরে যাওয়ার ফরমান দিয়ে আগেরদিন সকালেই সবকিছু ভেঙে দিলেন। শিশু-বৃদ্ধরা এখন খোলা আকাশের নীচে দিন কাটাচ্ছে। তাঁর কথায়, এরা এখন পুঁজিপতিদের স্বার্থে বরাকের চা শিল্পকে ধ্বংস করতে চাইছে। ডলুর পর ইছাবিল বাগানে উচ্ছেদ চলেছে। এরই মধ্যে পাতিমারা বাগানের 120 জন শ্রমিককে সাত থেকে দশদিনের মধ্যে সরে যেতে নোটিশ পাঠিয়েছে।
জলসম্পদ মন্ত্রী পীযূষ হাজরিকা এ দিনই বরাক উপত্যকা সফরে এসেছেন। কমলাক্ষ তাঁকে ঠুকতেও ছাড়েননি। বলেন, এখন ঘনঘন না এসে যদি বন্যার আগে একবার এসে বেতুকান্দি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেন, তাহলে শিলচরের মানুষদের এত যন্ত্রণা ভোগ করতে হতো না। পরিমল শুক্লবৈদ্যকে কটাক্ষ করে বলেন, এঁরা মানুষকে ঠাট্টা করছেন। হাঁটুজলে নৌকো চালিয়ে তামাশা করলেন।
আরেক কার্যবাহী সভাপতি রানা গোস্বামী বলেন, বাগান শ্রমিকদের উচ্ছেদ করছে সরকার, আর পতঞ্জলিকে হাজার হাজার বিঘা জমি বিলিয়ে দিচ্ছে। ভিন রাজ্যের শিল্পপতিদের পল্টনবাজারের মতো জায়গায় জমি বিলিয়ে দিলেন। নিজের পরিবারের নামে 26 বিঘা জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, কিিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নীবর। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এ সবের স্পষ্টীকরণ চান।
শিলচর কংগ্রেস কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক নুরুল হুদা ও মিসবাহুল ইসলাম লস্কর, মহিলা কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি মীরা বরঠাকুর, প্রদেশ কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক রামান্না বরুয়া, সম্পাদক সঞ্জীব রায়, জেলা কংগ্রেস সভাপতি তমালকান্তি বণিক, জেলা মহিলা কংগ্রেস সভাপতি সঞ্চিতা আচার্য প্রমুখ।