এনআরসি পুনঃপরীক্ষার জন্য সর্বা সরকার সুপ্রিম কোর্টে, সিআরপিসিসির সমালোচনা

৪ সেপ্টেম্বর: এনআরসি তালিকা পুনঃপরীক্ষার জন্য রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যে আবেদন করেছে, নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় সমিতিসি (আরপিসিসি) এর তীব্র সমালোচনা করেছে৷ সভাপতি তপোধীর ভট্টাচার্য বলেন,  এনআরসি তালিকা তৈরি করতে গিয়ে রাজ্যের ধর্মীয় ও ভাষিক সংখ্যালঘুদের সীমাহীন হেনস্থা করা হয়েছিল। নিজের বাসস্থান থেকে তিন-চারশো কিলোমিটার দুরে থাকা এনএসকেগুলোতে বারবার ডেকে নিয়ে প্রতিটি নথিপত্র সরকারি আধিকারিকরা বিভিন্ন পর্যায়ে তন্নতন্ন করে যাচাই করেন৷

তদানীন্তন এনআরসি রাজ্য কোর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিলেন, এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকা তৈরির পূর্বে দ্বিতীয় খসড়া তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়া ২৭ শতাংশ নাগরিকের নথিপত্রের সামান্য ত্রুটিও পুনঃপরীক্ষা করা হয়েছে। গত বছরের ৩১ আগস্ট এই তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই উগ্র-প্রাদেশিকতাবাদীরা পুনঃপরীক্ষার দাবি তুলেছিল। তাঁদের দাবি, আসামে সত্তর থেকে আশি লক্ষ বিদেশি নাগরিকের নাম এনআরসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে৷ এই অযৌক্তিক দাবির পেছনে রয়েছে রাজ্যে বসবাসকারী ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগণকে নাগরিকত্বহীন করার গভীর চক্রান্ত৷ কিন্তু অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়, উগ্র-প্রাদেশিকতাবাদীদের চক্রান্তের কাছে আসামের নির্বাচিত সরকার সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করেছে। বিশেষত এই মুহূর্তে অতিমারীর কবলে পড়ে সাধারণ মানুষ যখন দিশাহীন, তাদের কল্যাণ সম্পর্কে পুরোপুরি নিস্পৃহ ও উদাসীন থেকে সরকার বরং সংখ্যালঘুদের সর্বনাশ করার চক্রান্তে লিপ্ত।

নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় সমিতি একে স্বৈরাচারী দমনমূলক মনোভঙ্গী বলে উল্লেখ করে এর ধিক্কার জানায়। তালিকা প্রকাশের পর পরই সিআরপিসিসি বলেছিল, যাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি তারাও প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক। কারণ বহু পরিবারে সকলের নাম তালিকায় স্থান পেলেও একজন বা দু’জনের নাম ছেটে ফেলা হয়। সিআরপিসি-এর পক্ষ থেকে গতবছরের ৩১ আগস্ট প্রকাশিত এনআরসি তালিকাকে কোনও অবস্থায় পুনঃপরীক্ষণ না করা, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হওয়া প্রকৃত ভারতীয়দের নাম তালিকাভুক্ত করার জোরালো দাবি জানানো হয়়৷