Barak UpdatesHappeningsBreaking News
একাদশ শহিদের রঙিন ছবি, লিখেছেন নীহাররঞ্জন পাল
//নীহাররঞ্জন পাল//
একাদশ ভাষাশহিদের মধ্যে কেবল পাঁচজনের জীবিতাবস্থার আলোকচিত্র তাঁদের পারিবারিক সূত্রে পাওয়া যায়। তাঁরা হলেন কমলা ভট্টাচার্য, শচীন্দ্র চন্দ্র পাল, সুনীল সরকার, সুকোমল পুরকায়স্থ ও কানাইলাল নিয়োগী। বাকিদের শহিদত্বের পর তোলা ছবির মৃত মুখ থেকে মুখাবয়বের রূপদানের চেষ্টা চলে আসছে বহু বছর থেকে৷ ভাস্কর ড. স্বপন পাল ১৯৯৭ সালে প্রথম সে প্রচেষ্টার রূপ দান করেন। তিনি আবার ২০২১ সালে নতুন করে শহিদের মুখমণ্ডল চিত্রায়িত করেন। এতে দেখা যায় আগের প্রতিকৃতির সঙ্গে এবারের শিল্পকর্মের কোনও মিল নেই।
গতবছর শিলচরের নতুন দিগন্ত প্রকাশনীর উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গ বহরমপুরের চিত্রশিল্পী কৃষ্ণজিৎ সেনগুপ্ত পেনসিলে একাদশ শহিদের সুন্দর চিত্র তৈরি করেন, যা ইতিমধ্যে সকলের কাছে সমাদৃত হয়েছে।
তথাপি আমার দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিল একাদশ শহিদের রঙিন ছবি নির্মাণ করার। কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনার পর শিলচরের চিত্রশিল্পী অজয় দে এ ব্যাপারে রাজি হন। প্রয়োজনীয় পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তিনি আমার পরিকল্পনা মতো এক্রাইলিক রঙের মাধ্যমে ক্যানভাসে শহিদের প্রতিকৃতি এঁকে দিতে প্রস্তুত হন। গত এক বছরের শ্রমে তিনি এই কাজ সম্পূর্ণ করেন।যে পাঁচজন শহিদের জীবিতাবস্থার ফটো ছিল, তাঁদের মূল ফটোকে সামনে রেখেই তুলির কাজ সম্পন্ন হয়। এছাড়া বর্তমান লালাবাজার নিবাসী শহিদ তরণী মোহন দেবনাথের ভ্রাতুষ্পুত্ররা নিজেদের উদ্যোগে শহিদের প্রতিকৃতি তৈরি করেছিলেন।সেই ছবিকে মান্যতা দিয়ে তাদের ঘর থেকে ফটোটি এনে অজয়বাবুকে নতুন করে রঙিন চিত্র তৈরি করতে বলি। বাকি পাঁচজনের মৃত মুখের ছবি থেকেই এক্রাইলিক রঙে ক্যানভাসে কাজ করেন চিত্রশিল্পী অজয় দে।এতে আমার অনেক দিনের ইচ্ছা বাস্তবায়িত হয়।এ বছর উনিশে মে-তে ছবিগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে প্রথম প্রকাশের আলোয় আসবে। বাংলাদেশের ঢাকার খ্যাতিমান সংগঠক ও তথ্যচিত্র নির্মাতা মাসুদ করিম এবং শিলচরের ড. অজয় রায় তাদের তথ্যচিত্রে ছবিগুলো দর্শকের কাছে পৌঁছে দেবেন। শিলচর ভাষাশহিদ স্টেশন শহিদ স্মরণ সমিতির সম্পাদক ডাঃ রাজীব কর ছবিগুলো একই ফ্রেমে ভাষশহিদ স্টেশনের প্রবেশদ্বারে উপযুক্ত মর্যাদায় স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।ভাষাশহিদ কমলা ভট্টাচার্যের ভ্রাতুষ্পুত্রী বর্ণালী ভট্টাচার্য তার ইংরেজি গ্রন্থ “দ্য সাগা অব বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ মার্টায়ার্স”-এর প্রচ্ছদ এবং শহিদ পরিচিতির জন্য ছবিগুলো নিয়েছেন। আমি চাই কোনও সৌজন্য ছাড়াই ছবিগুলো ব্যাপক প্রচার লাভ করে শহিদের উজ্জ্বল স্মৃতির ধারক হোক।
একাদশ শহিদ অমর রহে।