NE UpdatesBarak UpdatesHappenings
অসমে এনআরসি প্রকাশের বর্ষপূর্তি, অনিশ্চয়তা ঝুলেই রইল
৩১ আগস্ট: আজ (সোমবার) এনআরসি বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের বর্ষপূর্তি৷ চরম উত্তেজনায় কাটছিল প্রতিটি মুহূর্ত৷ এমন পরিস্থিতিতেই প্রকাশ পেল, ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের নাম বাদ পড়েছে। এক বছর ধরে চরম আশঙ্কায় দিন কাটছে তাদের। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, ১২০ দিনের মধ্যে নাম বাদ পড়ার আবেদন জানাতে হবে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে। নিযুক্তও হয়েছেন নতুন ২২১ ফরেনার্স ট্রাইবুনাল সদস্য। ওইটুকুই, প্রথম বর্ষপূর্তিতে এক পাও এগোয়নি কাজ। উল্টে এনআরসি নিয়েই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
হাজার তিনেক সরকারি কর্মী রিজেকশন অর্ডার তৈরির কাজ করছিলেন। করোনায় তাঁদের কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে। এখন অবশ্য সেপ্টেম্বর থেকে নতুন উদ্যমে রিজেকশন লেটার তৈরি ও পাঠানোর কাজ শুরু করার জন্য জেলাশাসকদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘রিজেকশন লেটার’ তৈরির আগে সার্কল অফিসারেরা নাম বাদ পড়ার কারণগুলি ফের খতিয়ে দেখবেন৷
এনআরসির রাজ্য সমন্বয়রক্ষক হিতেশ দেবশর্মা জানান, করোনা অতিমারি ও বন্যার দরুন ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সরকারি কর্মীরা ব্যস্ত ছিলেন। কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে এবং সেপ্টেম্বরে সরকারি কাজকর্ম শুরু হলেই এনআরসির কাজ শুরু হবে৷
এ দিকে এক বছর ধরে দুই শতাধিক ফরেনার্স ট্রাইবুনাল সদস্যকে বসিয়ে বেতন দেওয়ায় তাঁদের চুক্তি নবীকরণ হবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। কিন্তু এনআরসি দফতর দ্রুত রিজেকশন লেটার দেওয়ার কাজ শুরু করতে চায় বলে জানানোয় মত বদলেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যসচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণ জানান, আগামী মাসে ফরেনার্স ট্রাইবুনাল সদস্যদের চুক্তি নবীকরণ হবে।
অবশ্য যে সংগঠনের মামলার জেরে সুপ্রিম কোর্ট এনআরসি নবীকরণের নির্দেশ দিয়েছিল, সেই অসম পাবলিক ওয়ার্কস জানিয়েছে, তারা এই এনআরসি মানবে না। সংগঠনের সভাপতি অভিজিৎ শর্মা বলেন, “এই এনআরসিতে ঘোষিত বাংলাদেশি, জেহাদি হিসেবে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের নাম রয়েছে। রাজ্যকে বিদেশিমুক্ত করতে তৈরি হওয়ার কথা ছিল এনআরসি। কিন্তু বর্তমান এনআরসিতে হাজার হাজার অবৈধ নাগরিকের নাম ঢুকেছে। তাই ১০০ শতাংশ রি-ভেরিফিকেশন না হলে এই এনআরসি মূল্যহীন কাগজের টুকরো ছাড়া কিছুই নয়।” প্রাক্তন এনআরসি কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলার দুর্নীতি ও কর্তব্যে গাফিলতি নিয়ে সরব হয়ে এনআরসি প্রক্রিয়ার সিবিআই তদন্তও দাবি করছে তারা। একই কথা রাজ্য সরকারও সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে।
আসুর সাধারণ সম্পাদক লুরিণজ্যোতি গগৈ বলেন, সুপ্রিম কোর্ট এনআরসি নিয়ে বহু গাইডলাইন দিলেও গত এক বছরে সরকার এনআরসিকে হিমঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে৷ সরকার অসমের ভূমিপুত্রদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে চায় না।
কংগ্রেসের মতে, ২০২১ সালের নির্বাচনের আগে পর্যন্ত কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার মোটেই এনআরসি নিয়ে এগোবে না। কারণ, নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী, এনআরসি ও অসম চুক্তির ষষ্ঠ দফা- এইসব দিয়েই হিন্দু, মুসলিম ও ভূমিপুত্রদের ভোট হাতে রাখতে চাইছে বিজেপি।