India & World UpdatesHappeningsBreaking News

হোমওয়ার্ক করে ২০২৮-এ আবার অনাস্থা আনবেন, বিরোধীদের মোদির পরামর্শ

ওয়েটুবরাক, ১১ আগস্ট : লোকসভায় মণিপুর নিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব ধ্বনি ভোটে খারিজ হয়ে গেল। ‘২০২৮-এ আবার অনাস্থা আনবেন বিরোধীরা, একটু হোমওয়ার্ক করে আসবেন’, কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

সংসদে গত তিন দিন ধরে চলছে অনাস্থা  বিতর্ক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জবাবের অপেক্ষায় ছিলেন বিরোধীরা। অবশেষে বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাবের জবাবে কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া জোটকে কোণঠাসা করতে ছাড়লেন না প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “২০১৮ সালেও, যখন বিরোধীদের সহকর্মীরা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল তখন এটি ঈশ্বরের আদেশ ছিল। সে সময়ও বলেছিলাম, অনাস্থা প্রস্তাব আমাদের সরকারের ফ্লোর টেস্ট নয়, এটা তাঁদের ফ্লোর টেস্ট। একই জিনিস ঘটেছে। যখন ভোট হয়েছিল, তখন বিরোধীদের যে পরিমাণ ভোট ছিল, সেই পরিমাণ ভোটও তারা সংগ্রহ করতে পারেনি।”

তাঁর কথায়, “শুধু তাই নয়, আমরা সবাই যখন জনসাধারণের কাছে গিয়েছিলাম, জনসাধারণের পূর্ণ শক্তিতে নির্বাচনে এনডিএও বেশি আসন পেয়েছিল এবং বিজেপিও বেশি আসন পেয়েছিল। অর্থাৎ একভাবে বিরোধী দলের অনাস্থা প্রস্তাব আমাদের জন্য শুভ।”

বিরোধীদের নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের গরীবের খিদে নিয়ে চিন্তিত নন, ক্ষমতার খিদে আপনাদের মনে। দেশের যুবসমাজকে পাত্তা দেন না।” তাঁর রসেভরা টিপ্পনি, “এই বিতর্কের মজা হলো, ফিল্ডিংটা প্রতিপক্ষের আয়োজনে করা হলেও ট্রেজারি থেকে চার-ছক্কা মারা হয়েছে। বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাবে নো-বলিং করছে। সেঞ্চুরি হচ্ছে এখান থেকে আর নো-বল হচ্ছে ওখান থেকে।”

তিনি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে ঠোকেন, “অনাস্থা প্রস্তাবে এমন কিছু অদ্ভুত জিনিস দেখা গেছে, যা আগে কেউ দেখেনি বা কল্পনাও করেনি। সবচেয়ে বড় বিরোধী দলের নেতা বক্তার তালিকায় স্থান পাননি। ১৯৯৯ সালে বাজপেয়ী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আসে। সেই সময় নেতৃত্বে ছিলেন শরদ পাওয়ার। তিনি বিতর্কের নেতৃত্ব দেন। অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকার ছিল, সোনিয়া গান্ধী ছিলেন বিরোধী দলের নেতা। ২০১৮ সালে বিরোধী দলের নেতা ছিলেন মল্লিকার্জুন খড়গে, তিনিই বিষয়টি এগিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু এবার অধীরবাবুর কী হল? তাঁর দল তাঁকে কথা বলার সুযোগ দেয়নি। এটি আপনার (লোকসভা স্পিকারের) উদারতা যে তার সময় শেষ হয়ে গেলেও আপনি তাঁকে আজ সময় দিয়েছেন। তবে ‘গুড়ের গোবর’ কীভাবে তৈরি করতে হয় সে বিষয়ে তিনি (অধীর রঞ্জন চৌধুরী) পারদর্শী।”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আমি বিশ্বাস করি বিরোধীরা আশীর্বাদ পেয়েছে, এরা যাদের খারাপ চায় তারই ভাল হয়। আমিই তার একটি উদাহরণ। আমার বিরুদ্ধে কত কী করা হল, কিন্তু আমি বড় হতে থাকলাম। বিরোধীরা বলেছিল, ব্যাংকিং খাত ধ্বংস হয়ে যাবে। বিদেশ থেকে পণ্ডিতদের ডেকে আনা হয়েছিল। কিন্তু তারা যখন ব্যাংকগুলোর মন্দ কামনা করেন, তখন সরকারি ব্যাংকের নিট মুনাফা হয়ে যায় দুই গুণের বেশি।

মোদির বক্তব্য, যে কোনও দেশের ইতিহাসে এমন সময় আসে যখন সে দেশের পুরনো বিধিনিষেধ ভেঙে নতুন উদ্যম, নতুন স্বপ্ন ও নতুন সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ নেয়। এটি ২১ শতকের সময়, যা ভারতের জন্য প্রতিটি স্বপ্ন পূরণের সুযোগ নিয়ে আসবে। এই সময়কাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রভাব আমাদের দেশে আগামী ১০০০ বছর ধরে থাকবে। এই সময়ে ১৪০ কোটি দেশবাসী তাদের শক্তি দিয়ে যা কিছু করছে, তা আগামী ১০০০ বছরের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করতে চলেছে। তাই এই সময়ে আমাদের সকলেরই একটা বড় দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতা রয়েছে। এমন সময়ে আমাদের সকলের একটাই ফোকাস থাকা উচিত, দেশের উন্নয়ন, দেশের মানুষের স্বপ্ন পূরণের সংকল্প এবং সাফল্যের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করা। এটাই সময়ের প্রয়োজন।”

মোদি বলেন, “আমাদের সরকার যে পরিকল্পনাই নিয়ে আসুক না কেন, কংগ্রেস এবং তার সহযোগীরা তা নিয়ে মজা করেছে। কংগ্রেস এবং তার মিত্ররা কখনই ভারত এবং এর সম্ভাবনায় বিশ্বাস করেনি। যেমন পাকিস্তান যখন সীমান্তে হামলা করত,  কংগ্রেসের পাকিস্তানের প্রতি এত ভালবাসা ছিল যে, তারা তাদের কথায় বিশ্বাস করত। কংগ্রেসের আস্থা ছিল হুররিয়াতে, কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের প্রতি নয়।”

“এটি এক দশকের পুরনো দৃশ্য। তারা মনে করে নাম পরিবর্তন করে দেশ শাসন করবে। বেচারা সর্বত্র তার নাম দেখতে পায়, কিন্তু তার কাজ কোথাও দেখা যায় না। তাদের নামে হাসপাতাল, চিকিৎসা নেই। রাস্তা হোক, পার্ক হোক, গরিব কল্যাণ প্রকল্প হোক, ক্রীড়া পুরস্কারে, বিমানবন্দর-জাদুঘরে তাদের নাম। তারা নিজেদের নামে স্কিম শুরু করে, তারপর সেসব স্কিমে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে।” জবাবী ভাষণে এ ভাবেই বক্রোক্তি করেন প্রধানমন্ত্রী৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker