Barak UpdatesHappeningsBreaking News
হাইলাকান্দিতে মন্ডপ প্রতিদিন দুবার করে স্যানিটাইজ করার নির্দেশ
ওয়েটুবরাক, ১০ অক্টোবর: রাজ্য সরকার আসন্ন দুর্গাপূজার পর অতিমারি কোভিডের বিস্তার রোধ করতে বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করেছে। রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের জারি করা সর্বশেষ এসওপি অনুসারে পুজোর প্যান্ডেলগুলিতে এবং আশেপাশে কোনও মেলার আয়োজন করা যাবে না।
রাস্তার পাশে কোনও অস্থায়ী প্যান্ডেল স্থাপন করা যাবে না। আয়োজক, ভক্ত এবং পুরোহিত সহ সর্বাধিক ৪০ জন ব্যক্তি পূজা প্যান্ডেলে সমবেত হতে পারবেন৷ পূজো প্যান্ডেলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকা বাধ্যতামূলক। পূজার আয়োজকদের মুখে মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং মাস্ক থাকলেও হাত স্যানিটাইজ না করে কোনও ব্যক্তিকে পূজা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। পূজা আয়োজকদের, পূজা প্রাঙ্গণে প্রবেশের সময় হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজেশন ইত্যাদি সুবিধার ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে। পূজার স্থানে আগত সকল দর্শনার্থীদের পূজা আয়োজকদের দ্বারা থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে এবং কোভিড উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিকে পূজা প্যান্ডেলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। সকল আয়োজক এবং স্বেচ্ছাসেবকদের কমপক্ষে এক ডোজ ভ্যাকসিন নিতে হবে। যদি পূজা প্যান্ডেলে কোনও ব্যক্তি বা দর্শনার্থীকে কোভিড লক্ষণযুক্ত বলে সন্দেহ করা হয়, তাহলে পূজার আয়োজকদের নিকটস্থ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রকে জানাতে হবে এবং এই ধরনের ব্যক্তিদের নিকটবর্তী কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্রে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে হবে।
পুজোর দিনগুলিতে রোজ দুবার করে প্যান্ডেল স্যানিটাইজ করতে হবে এবং উপরোক্ত বিষয়গুলি মাইকযোগে দর্শনার্থী ভক্তদের বার বার জানিয়ে দিতে হবে। কোনও অবস্থাতেই প্রতিমা বিসর্জনে মিছিলের অনুমতি দেওয়া হবে না। প্রতিমার আকার এবং উচ্চতা এমন হওয়া উচিত যাতে বিসর্জনের সময় সীমিত সংখ্যক লোকের দ্বারা প্রতিমা নিরঞ্জন প্রক্রিয়া সম্ভব হয়। যানজট এবং অধিক জমায়েত এড়িয়ে হাইলাকান্দি জেলা প্রশাসন থেকে প্রতিমা নিরঞ্জন প্রক্রিয়া শেষ করা হবে বলে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। এই এসওপি- তে বলা হয়েছে, জেলার শহর ও গ্রামাঞ্চলের সব ধরনের দোকানপাট ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রাত ৯ টায় বন্ধ করতে হবে এবং জনগণ ও যানবাহন চলাচল রাত ১০ টা থেকে পরদিন ভোর ৫ টা পর্যন্ত নিষিদ্ধ থাকছে। হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ধাবা ইত্যাদি ৫০ শতাংশ আসন ক্ষমতা নিয়ে রাত ৯ টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
কোল্ডস্টোরেজ ওয়্যারহাউজ ইত্যাদির বিক্রি কাউন্টার ও শো-রুম রাত ৯ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। খোলা স্থানে সভায় ৫০ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করা ব্যক্তি সমবেত হতে পারবেন। হল ঘরের মধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়ে বিবাহ ভবনে বিবাহ ইত্যাদির জন্য ২০০ জন কোভিড ভ্যাকসিন গ্রহণ করা ব্যক্তি অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পারবেন। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে কোভিড ভ্যাকসিন গ্রহণ করা ৪০ জন ভক্ত প্রতি ঘন্টায় এবং শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে ৫০ জন ব্যক্তি যোগদান করতে পারবেন।
জেলায় সাপ্তাহিক হাট বাজার পালাক্রমে সর্বাধিক ৬ ঘণ্টার জন্য খোলা যাবে । জরুরি পরিষেবা সব সময় খোলা থাকবে। সিনেমা হলে ৫০ শতাংশ আসন ক্ষমতায় কোভিডের দুইটি ভ্যাকসিন গ্রহণ করা দর্শকদের জন্য খোলা যাবে এবং কোভিড প্রটোকল মেনে চলতে হবে। সর্বাঅবস্থায় জনগণের মাস্ক পরিধান করা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং হাত সেনিটাইজ করে রাখা বাধ্যতামূলক। এদিকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে জেলা প্রশাসন ও পূজা কমিটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে পূজাকমিটি গুলিকে অনুমতির জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে। ।সাথে স্বেচ্ছাসেবকদের টিকা গ্রহণ করার সার্টিফিকেট এবং তালিকা ও বিসর্জনের সময় স্থান ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে।
পূজামণ্ডপগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক টিকা গ্রহণ করা স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে যাতে ভক্তদের মাস্ক পরা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং হাত স্যানিটাইজ করা সুনিশ্চিত করা যায়। পূজা কমিটির কর্মকর্তা পুরোহিত এবং স্বেচ্ছাসেবকদের পঞ্চমীর দিন ও একাদশীর দিন কোভিড পরীক্ষা করতে হবে। ভক্তদেরকে প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য মণ্ডপগুলোতে পৃথক গেইট চিহ্নিত করে রাখতে হবে। পূজার সময় আগে এবং পূজার পর কোনও ধরনের জনগণকে জমায়েত করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। কোনও ধরনের গুজব বা ভুল তথ্য যাতে পূজার সময় ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিসর্জন ঘাটে কোন ধরনের ভিড় জমা হতে দেওয়া হবে না। সব পূজা কমিটিকে মণ্ডপে অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম বালি, জল ইত্যাদি রাখতে হবে।
পূজামণ্ডপে ডাস্টবিনের ব্যবস্থা রাখতে হবে আবর্জনা যত্রতত্র না ফেলে নির্ধারিত ডাস্টবিনে ফেলতে হবে। মণ্ডপে কোনও ধরনের ফলপ্রসাদ পরিবেশন করা যাবে না। রাত ৯টায় সব পূজা প্যান্ডেল বন্ধ রাখতে হবে। উৎসবের দিন গুলিতে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুসারে অনুসারে রাত ৯টার পর মাইক বাজানো যাবে না।পূজা মন্ডপ এর উদ্বোধন সীমিত সংখ্যক ভক্ত দিয়ে করা যাবে। সর্বক্ষেত্রে পরিষ্কার পরিছন্নতা এবং নিরাপত্তার ওপর জোর দিতে পূজা কমিটি গুলিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শান্তি সম্প্রীতি আইন শৃঙ্খলা অক্ষুন্ন রাখতে ও পূজা কমিটি গুলিকে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে। এদিকে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের এস ও পি এবং হাইলাকান্দি জেলা প্রশাসনের নির্দেশিকা জানিয়ে দিতে গত সপ্তাহ ব্যাপী জেলার সর্বত্র ব্যাপক মাইকিং করা হয়েছে প্রশাসন থেকে।