//প্রিয়া দাস//
১ জুন : হঠাৎ যেন জীবনটা থমকে গেল। থেমে গেল জীবনের নানান ব্যস্ততার মধ্যে চলাফেরা করার সাহসটুকু। থেমে গেল সেই অজানা উদ্দেশ্যের পিছে দৌড়ানো। এখন আর আগের মতো মানুষকে চলাফেরা করতে দেখা যায় না। দেখা যায় না সেই পাড়ার চায়ের দোকানে পাড়ার কাকুদের বৈঠক, যেখানে স্থানীয় যে কোনো প্রসঙ্গ থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশে নানান রাজনৈতিক আলোচনা হতো। নেই সেই সকালে বাচ্চাদের স্কুলে পৌঁছানোর দৌড়।
এখন তো শুধু ফোনের মাধ্যমে পড়াশোনা৷ অবশ্য সেটা আবার সব শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য নয়। যার ঘরে স্মার্টফোন নেই, সে হয়তো বঞ্চিতই থাকবে এই ডিজিটাল প্রসেসে। দেখা যায় না এখন রাস্তার পাশে ছোটখাটো স্ট্রিট ফুডের দোকানগুলো, যেখানে সব বয়সের মানুষ এসে লোভনীয় খাবার খেতো। করোনা মহামারীর ভয়ে সবাই এখন ঘরে। এমনকী, দেখা যায় না পাড়ার কচিকাঁচাদেরও, বিকেলে যারা একসাথে সাইকেল নিয়ে বেরতো। আত্মীয়-স্বজন পাড়া- প্রতিবেশী কেউ আসেন না এখন কারও বাড়িতে চায়ের আড্ডায়। সবাই করোনা ভয়ে ঘরবন্দি৷ দেখা যায় না কোনো ধরনের অনুষ্ঠানাদি৷ পূজা-পার্বণ, জন্মদিন, বিয়ে কিছুই নেই এখন৷ কারণ তাতে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং ম্যানট্যান হবে না।
বিকেল হলে নানান মলে বেরিয়ে পড়ার অভ্যেসটাও পাল্টে গেছে। স্ট্রিটফুড নেই৷ মোমো, ফুচকা, এগরোল এইসব এখন ঘরেই বানাতে হয়। ঘরের গিন্নিরা অবশ্যই রান্নাতে একদম পাকা হাত করে নিয়েছেন। দেখা যায় না চতুর্দিকে সেই জনসমাগম, সেই গাড়িঘোড়ার জমজমাট, সেই সামাজিকতা, সেই ব্যস্ততা, সেই লৌকিকতা। সবকিছুই কেমন থমকে গেল। পরিবেশটাও অনেকটা মানুষের দাবানল থেকে শান্তি পেল। এখন থেকে সামাজিকতার সমীকরণটাই হয়তো বদলে যাবে, অন্তত আগামী কয়েক বছরের জন্য তো বটেই। করোনা নিয়েই এখন আমাদের জীবন যাপন করতে হবে৷ একটু একটু করেই চালাতে হবে থমকে যাওয়া সেই জীবনটাকে।